আযানের সুরে সুরে, এখানে প্রভাত আসে, শপথের লক্ষ তারায়, এখানে সন্ধ্যা নামে-মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম

আযানের সুরে সুরে, এখানে প্রভাত আসে,

শপথের লক্ষ তারায়, এখানে সন্ধ্যা নামে।।

(শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা)

মুহাম্মদ নজরুল ইসলামঃঃ সে কেন দেশ? হ্যাঁ, সে দেশ আমার বাংলাদেশ সে আমার প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ যে আযানের সুর শোনে তোমার, আমার এবং আমাদের সকলের ঘুম ভাঙে, সে কোন আযান? একদম সহজ উত্তর-‘ফজরের আযান’ তোমরা যারা পাঁচ ওয়াক্ত আযান শোনে মসজিদে যাও আল্লাহর আহবানে, তারা কি লক্ষ্য করেছো যে, ফজরের আযান অপরাপর ওয়াক্তের আযানের চেয়ে ব্যতিক্রম আর তা হলো-ফজরের আযানে অতিরিক্ত একটা বাক্য বলা হয়-“আস্সালাতু খাইরুম মিনান্ নাউম-ঘুমের চেয়ে নামাজ ভাল” নবী সা. মক্কা থেকে হিজরত করে যখন মদীনায় গেলেন, তখন নির্মান করা হলো মসজিদে নব্বী সা. পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জন্য আহবান জানাতে আযানের ব্যবস্থা করা হলো এখন আমাদের মসজিদ গুলোর মিনার থেকে জোহর, আসর, মাগরিব এবং এশার নামাযের জন্য যে ভাবে আযান ভেসে আসে, ঠিক সে ভাবেই সহসা একদিন এক ঘটনার প্রেক্ষিতে ফজরের আযান ব্যতিক্রম হয়ে গেল তোমরা কি শোনবে সে ঘটনাটা কি? বলি তাহলেঃ

একদা আমাদের প্রিয় নবী, রাসূল মুহাম্মদ সা. ফজরের নামাযের জামায়াতে আসতে বিলম্ব করলেন সকল সাহাবী রা. রাসূল সা. এর প্রতীক্ষায় অপেক্ষমান রাসূল সা. আসবেন তাঁর নেতৃত্বে (তথা ইমামতিত্বে) ফজরের দু’রাকাত নামায হবে দিনের সূচনায় রবের সমীপে নবী সা.এর নেতৃত্বে সবাই নিবেদন জানাবেন গোলামীর উচ্চারণ “ইইয়াকা নায়বুদু ওয়া ইইয়াকা নাসতায়ীন-(হে আমাদের মালিক) আমরা কেবল তোমারই গোলামী করি, আর কেবল তোমারই কাছে সাহায্য চাই” রাসূল সা.এর অভ্যাস ছিল নিজ গৃহে সকল সুন্নাত নামায আদায় করা বিশেষতঃ ফজরের সুন্নাত আদায়ের পর জামায়াতের সময় হওয়া পর্যন্ত তিনি একটু কাত্ হয়ে বিশ্রাম নিতেন অভ্যাস অনুযায়ী ঐদিনও একটু কাত্ হয়ে শুয়েছিলেন ফলে তার নিদ্রা এসে গিয়েছিল সাহাবায়ে কিরামরা অপেক্ষার পরও যখন নবী সা. আসলেন না হযরত বিলাল রা. তাঁকে ডাকার জন্য নবী সা.এর গৃহের পাশে গেলেন কিন্তু কিভাবে তাঁকে ডাকবেন? কি উচ্চারণে তাঁকে সুধাবেন-ভেবে পাচ্ছিলেন না সহসা তার মুখ থেকে উচ্চারিত হলো-“আস্সালাতু খাইরুম মিনান্ নাউম-ঘুম থেকে নামায ভাল” বুলন্দ আওয়াজের এ সুন্দর বাক্য নবী সা.এর কানে পৌছলো উনি বেরিয়ে আসলেন নামাযের জামায়াতের ইমামতি করলেন হযরত বিলাল রা.এর উচ্চারিত শব্দাবলী দু’জাহানের সরদারের নিকট খুব ভাল লাগল তিনি হযরত বিলাল রা.কে ডাকলেন এবং অর্ডার দিলেন-“তোমার এই কথাটা কতইনা সুন্দর তুমি এ বাক্যটাকে তোমার ফজরের আযানে যোগ করবে”

ঐদিন থেকে ফজরের আযানে সংযুক্ত হলো মধুময়, সৌজন্যমূলক এ শব্দাবলী-“আস্সালাতু খাইরুম মিনান্ নাউম-ঘুম থেকে নামায ভাল” হাজার বছর পর এখনও নিশীত রাতের আধার কেঁটে মুয়াজ্জিনের কন্ঠে ভেসে আসে মিনার থেকে সেই আহবান ঘুম ভাঙে বিশ্ব মুসলিমের সেই আওয়াজে আল্লাহর গোলামেরা সাড়া দেয় গোলামীর হাজিরা দিতে মসজিদে মসজিদে

তারিখঃ ১৮ই জানুয়ারী ২০০৬

Post a Comment

0 Comments