মাওলানা মওদূদীকে নিয়ে মাতামাতিঃ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম


মুহাম্মদ নজরুল ইসলামঃঃ মাওলানা মওদূদী রাহি. তাঁর সমালোচনাকারীদের জবাব দেয়াতে সময় নষ্ট করতেন না। মনজিল অনেক দূরের পথ আর সময় অত্যন্ত কম। এই অবস্থায় চলার পথে কোথায় কাঁটা বিধলো, তা দেখার ফুরসত কোথায়। এই দৃষ্টিভংগী পোষণ করতে মাওলানা রাহি.।

মওলানা মওদূদী রাহি. তাঁর জীবদ্দশায় বুঝার জন্য তাঁকে যেসব প্রশ্ন করা হয়েছিল, তার জবাব তিনি দিয়েছেন। যেসব জবাব নিয়ে অগনিত বই রয়েছে। আর সে জবাবগুলো তিনি দিয়েছেন দৃষ্টিভংগীকে পরিস্কার করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু স্থুল সমালোচনাকারীদের তিনি পাত্তা দেননি। যদি তিনি পাত্তা দিয়ে জবাব দেয়া শুরু করতেন, তাহলে তার বিশাল সাহিত্য ভান্ডার তিনি রচনা করার সময় পেতেন না। তার বিশাল সংগঠনকে নেতৃত্ব দেয়ার তিনি সময় পেতেন না।

মাওলানা মওদূদীর সমালোচনা করা হয়েছে তাঁর জীবদ্দশায় তাঁর সমসাময়িক উলামায়ে কিরামদের দ্বারা। পরবর্তীতে সেই সমালোচনাকারী উলামায়ে কিরামদের ছাত্ররা বংশ পরম্পরায় এই সমালোচনা অব্যাহত রেখেছেন। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী দেয়, সমালোচনা যেমন বন্ধ হয়নি-সমালোচনার জবাব দিয়ে কেউ একজনকেও মাওলানা মওদূদীর পক্ষে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।

মাওলানা মওদূদী কি নবী ছিলেন (নাউযুবিল্লাহ)? তিনি কি ভূল করতে পারেন না? তাহলে তাকে উপরে উঠানোর জন্য এতো মাতামাতি কেন? অবস্থা দেখে মনে হচ্ছেঃ মওদূদীবাদ নামক একটি আদর্শ এবং তার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মওদূদীকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমরা আধাজল খেয়ে নেমেছি।

যারা মাওলানা মওদূদীকে ভালবাসেন, যারা মাওলানা মওদূদীর মানহাজকে ভালবাসেন, তাদের উচিত হলোঃ সমালোচনাকারীদের জবাব না দেয়া। তাহলে তারা একদিন ক্লান্ত হয়ে নিরব হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা তা করছি না।

মাওলানা মওদূদী কি তার জীবনে সকল কাজ সমাপ্ত করে যেতে সক্ষম হয়েছেন। নির্দিধায় আমরা বলতে পারিঃ না। তাহলে মাওলানা মওদূদীর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা বা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য মওদূদী প্রেমিকরা কেন কাজ করেন না।

মাওলানা মওদূদী তার সীরাতে সরওয়ারে আলম সমাপ্ত করতে পারেননি। তার এই অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য আমরা কি চেষ্টাটা করেছি।

মাওলানা মওদূদী তাফহীমুল কুরআন লেখার পর তাফহীমুল হাদীস লেখার কথা ছিল। আমরা কি সেই কাজে হাত দিতে পেরেছি।

জনসমক্ষে বা পাবলিকলি সমালোচনা এবং সমালোচনার জবাব প্রদান সর্বকালে সমস্যার সৃষ্টি করেছে, পারস্পরিক তিক্ততার জন্ম দিয়েছে। কিন্তু ফায়দা কিছু হয়নি।

অতএব, জান্নাত লাভের প্রত্যাশায় যে সব উলামায়ে কিরাম মাওলানা মওদূদীর পক্ষে সোস্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠাচ্ছেন, তাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ করছিঃ মাওলানা মওদূদীর পক্ষে বা বিপক্ষে লেখা বা কথা বলা বন্ধ করুন। মাওলানা মওদূদী তাঁর জীবনে যা করেছেন, তার প্রতিদানের আলোকে তার রব তাকে যথাযথ সম্মাণ প্রদান করবেন। আপনি আমি মাওলানা মওদূদীর মানহাজ অনুযায়ী কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে চলি, কুরআন ও সুন্নাহর উপর গবেষনা করি, কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী মানুষকে চালানোর চেষ্টা করে সকল মানুষকে আল্লাহর খলিফা হিসাবে দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত করে নিজ আমল নামার প্রতিটি কাজকে ইবাদতে রূপান্তরিত করি।

Post a Comment

0 Comments