আলোচনা নোট - আমাদের পারিবারিক জীবন


পরিবারঃ

  • পরিবারের সংগাঃ স্বামী-স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন নিয়ে মানব সমাজের যে ছোট পরিমন্ডলটি গড়ে উঠে, তাকেই বলা হয় “পরিবার”।
  • পৃথিবীর প্রথম পরিবারঃ বাবা আদম আ. এবং মা হওয়া আ. এর ০২ সদস্য বিশিষ্ট পরিবারই পৃথিবীর প্রথম পরিবার।
  • আদম আ. থেকে পৃথিবীর পরিবারের গোড়াপত্তনঃ
هُوَ ٱلَّذِي خَلَقَكُمْ مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَجَعَلَ مِنْهَا زَوْجَهَا
      “তিনি সেই সত্তা, যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একটি মাত্র প্রাণ (আদম) থেকে, আর তার থেকেই            তৈরী করেছেন তার জোড়া (হাওয়া)।”
  • প্রাচীন কালে পারিবারিক জীবন অপরিহার্য ছিল প্রধানতঃ ০২টি কারণেঃ
          ১. নিরাপত্তা লাভ। ২. অর্থনৈতিক প্রয়োজন পুরণ।
  • ইলমে ফরায়েজঃ অর্থনৈতিক প্রয়োজন পুরণের প্রতি লক্ষ্য রেখে ইসলামী শরীয়াতে পরিবারে অর্থনৈতিক সুব্যবস্থাপনার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন শাস্ত্র ইলামে ফরায়েজ-এর উদ্ভব হয়েছে।
  • ইসলাম পরিবার বিছিন্ন বৈরাগী জীবনের অনুমতি দেয়না।
         “আর যে রাহবানিয়াতকে (খৃষ্টানরা) তাদের দ্বীনের অন্তর্ভূক্ত করে নিয়েছে। তাতে আমি তাদের                    উপর ফরয করিনি।” (আল হাদীস)
  • “রাসূল সা. বলেছেন-লা ছারুরাতা ফিল ইসলাম-ইসলামে বৈরাগ্যবাদ নেই।” (আবু দাউদ)
  • পরিবারের ব্যাপ্তি জান্নাত পর্যন্তঃ
 جَنَّاتُ عَدْنٍ يَدْخُلُونَهَا وَمَنْ صَلَحَ مِنْ آبَائِهِمْ وَأَزْوَاجِهِمْ وَذُرِّيَّاتِهِمْ وَالمَلاَئِكَةُ يَدْخُلُونَ عَلَيْهِمْ مِّن كُلِّ بَابٍ
“তা হচ্ছে বসবাসের বাগান। তাতে তারা প্রবেশ করবে এবং তাদের সৎ কর্মশীল বাপ-দাদা, স্ত্রী ও                সন্তানেরা। ফেরেশতারা তাদের কাছে আসবে প্রত্যেক দরজা দিয়ে।” (রাদঃ ২৩
  • পরিবার সৃষ্টির উদ্দেশ্যঃ যাতে সে তার (স্ত্রীর) কাছে স্বস্তি পেতে পারে”। অর্থাৎ
  • স্বস্তি ও শান্তি লাভ করাই পারিবারিক জীবনের আসল লক্ষ্য।
  • পারিবারিক জীবনে শান্তি না থাকলে জীবনের কোন স্তরেই শান্তি থাকতে পারেনা।
  • ইসলামী রাষ্টের ইশতিহারে ২য় দফা মুলনীতিতেই হলো পরিবার ব্যবস্থা। ইসলামী হুকুমাত হবে পরিবার কেন্দ্রীক। তাই ইসলাম আল্লাহর গোলামীর পরই মা-বাবার সাথে ভাল ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে।

পরিবার ব্যবস্থা না থাকার পরিণামঃ

  1. যৌন জীবনে উশৃংখলা ও অশান্তি নেমে আসে।
  2. প্রেম প্রীতি, স্নেহ ভালবাসা ও হৃদ্যতা বিদূরিত হয়।
  3. দয়া ও সাহানুভূতি দূর হয়ে যায়।
  4. সুসন্তান লাভ করা যায় না।
  5. সন্তানের সঠিক লালন-পালন ও সুশিক্ষা হয়না।
  6. সমাজে কোন আদর্শিক ঐতিহ্য গড়ে উঠেনা।
  7. সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভিত ধসে পড়ে।
  8. বংশধারা ও আত্মীয়তার সম্পর্ক বিলুপ্ত হয়ে যায়।
  9. নারীদের আশ্রয় ও নিরাপত্তা চরম ভাবে বিঘ্নিত হয়।
  10. নারীকে কঠোর শ্রমে অংশ গ্রহণ করতে হয়।
  11. পিতামাতার অধিকার বিনষ্ট হয়।
  12. সন্তান সন্ততির অধিকার বিনষ্ট হয়।
  13. দাম্পত্য জীবনের সুখ মাধুর্য বিলুপ্ত হয়।
  14. সন্তানের প্রতিবা বিকাশে বিঘ্ন ঘটে।

পরিবার নিয়ে কিছু কথাঃ

  • পরিবারঃ আপনি, আপনার স্ত্রী, আপনার সন্তানদের নিয়ে হতে পারে।
  • পরিবারঃ স্ত্রী-সন্তান আর বাবা-মাকে নিয়ে হতে পারে।
  • পরিবারঃ মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান সকলকে নিয়ে হতে পারে।
  • পরিবারঃ এর সকল সদস্য এবং সদস্যার আপনার উপর হক রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে।

পরিবারে কার হক কেমনঃ

  • পরিবারে সবচেয়ে বেশী হক আপনার সন্তানের।
  • পরিবারে দ্বিতীয় হকদার হলো আপনার স্ত্রী।
  • পরিবারে তৃতীয় হকদার আপনার মা এবং বাবা।
  • পরিবারে সর্বশেষ হকদার আপনার ভাইবোন।
  • পরিবারের এই সব সদস্যদের প্রাপ্য অনুযায়ী হক আদায় করে পরিবারকে শান্তির আবাস-জান্নাত বানাতে হয়।
  • পরিবারের এই সব সদস্যদের প্রাপ্য হক আদায় করলে পরিবার হয়ে যায় জাহান্নাম।

পরিবারে আপনার অবস্থানঃ

  • পরিবারে আপনি দারগা নন। আপনি বাসায় ঢুকলেই শুনশান নিরবতা-যেন বাসায় র‌্যাব ডুকেছে।
  • পরিবারে আপনি টুটু জগন্নাত নন। আপনি বাসায় আছে কিনা বুঝা যায় না। আপানে কেউ গুনেই না।
  • পরিবারের লোক আপনাকে পায়ই না, এমন হওয়া উচিত নয়।
  • পরিবারের লোকজন আপনার ঘরোয়া স্বভাবের জন্য অতিষ্ট-এমন হওয়া উচিত নয়।
  • আপনি আপনার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কখন পার্কে গিয়েছিলেন-আপনা তা মনে আসতেছেনা-এমন হওয়া উচিত নয়।
  • আপনি এমন পরিবেশ তৈরী করেছেন যে, প্রতি শুক্রবারেই পরিবার নিয়ে আপনাকে পার্কে যেতেই হবে-এমন হওয়াও উচিত নয়।
  • আপনি বাহিরের কোন বিষয়ই আপনার স্ত্রীর সাথে শেয়ার করেন না-এমন হওয়া উচিত নয়।
  • আপনি বাহিরের সকল বিষয়ই আপনার স্ত্রীর সাথে শেয়ার করেন-এমনটি হওয়াও উচিত নয়।
  • আপনার পরিবারের অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়গুলো আপনি বাহিরে বলে বেড়ান-এমনটা কখনোই হওয়া উচিত নয়।
  • আপনি নানাবিধ পারিবারিক সমস্যা জর্জরিত। অথচ আপনি আপনার বন্ধু বা শুভাকাংখী বা দায়িত্বশীলের পরামর্শ নিচ্ছেন না-এমনটি হওয়াও উচিত নয়।
  • আপনার বাসায় শুধু পার্টি আর পার্টি, প্রতি মাসেই পার্টি বা প্রতি সপ্তাহেই পার্টি-এমন হওয়া যেমন উচিত নয়। আপনার বাসায় কখন পার্টি হয়েছে, তা আমাদের কারও জানা নেই-এমনটি হওয়াও উচিত নয়।
  • আপনার পরিবার, স্ত্রী-সন্তান যা চায়, সবাই আপনি কিনে দেন-এমনটি যেমন হওয়া উচিত নয়। পরিবার বারবার একটি বিষয় কিনার জন্য বলছে, অথচ আপনি বখিল সেজে বসে আছেন-এমনটিও হওয়া উচিত নয়।
  • আপনার বা্চছার পড়া লেখা বা নৈতিক সংশোধনের জন্য আপনি সীমাহীন কড়াকড়ি করেন-এটা যেমন উচিত নয়। একই ভাবে আপনার বাচ্ছার ভবিষ্যতের স্বার্থে তার ব্যাপারে আপনি একদম উদাসিন-এমন হওয়াও উচিত নয়।
  • গত এক বছরে আপনি একটি দিনের জন্যও আপনার পরিবার িনিয়ে কোন নামকরা রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে যাননি-এমনটা হওয়া যেমন উচিত নয়। আপনি প্রতি মাসেই কোন না কোন রেস্টুরেন্টে গমন করেন, এমনটা হওয়াও উচিত নয়।
  • আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশী আর দ্বীনের পথে খরচ করতে গিয়ে আপনি আপনার স্ত্রী সন্তানদের রাস্তায় বসিয়ে দেবেন-এমনটা যেমন উচিত নয়। একই ভাবে স্ত্রী-সন্তানের চাহিদার চেয়ে অনেক অনেক বেশী ফ্লাট, ভিলা, প্লট, জায়গা সম্পত্তি করবেন-এমনটি হওয়াও উচিত নয়।

পরিবারের প্রকারভেদঃ

পরিবার সাধারণত দুই প্রকারের।

যৌথ পরিবার। যেমনঃ পিতা-মাতা, স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন ও পুত্র-কন্যাদের নিয়ে যে পরিবার।
একক পরিবার। যেমনঃ পিতামাতা, স্বামী স্ত্রী, ভাই বোন ও পুত্র কন্যাদের নিয়ে যে পরিবার।

পরিবারে আব্বা আম্মার অধিকারঃ

ইসলামী রাষ্ট্রের ইশতিহারে ২য় দফা মূলনীতিই হলো পরিবার ব্যবস্থা। ইসলামী হুকুমাত হবে পরিবার কেন্দ্রীক। তাই ইসলাম আল্লাহর গোলামীর পরই মা-বাবার সাথে ভাল ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন।
وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُوۤاْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِٱلْوَالِدَيْنِ إِحْسَاناً إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ ٱلْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيماً
“তোমার রব ফায়সালা করে দিয়েছেন যে, তোমরা কেবলমাত্র তার ছাড়া আর কারো ইবাদত করবেনা। পিতামাতার সাথে ভাল ব্যবহার করবে। তোমার নিকট যদি তাদের কোন একজন কিংবা দূ’জনই বৃদ্ধাবস্থায় থাকে, তবে তুমি তাদের উফ পর্যন্ত বলবেনা। তাদের ভর্ৎসনা করবেনা। বিশেষ সম্মানের সাথে তাদের সংগে কথা বলবে। (ইসরাঃ ২৩)
আব্বা আম্মার সাথে ব্যবহার কি হবে-এটা সম্পূর্ণ পৃথক বিষয়। যে বিষয়ে আল্লামা সাঈদী যখন কথা বলেন, তখন ৫দিন কথা বলেন।
কুরআন হাদীস পরিপূর্ণ এই বিষয়ের আলোচনায়।

কুরআন হাদীসের আলোচনার নির্যাস হলোঃ

  • পিতামাতার মর্যাদা গোটা সৃষিট জগতের মধ্যে সর্বোচ্চ।
  • পিতামাতার সাথে ভাল ব্যাবহার ও তাদের সেবা যত্ন করা আল্লাহর অলংঘনীয় নির্দেশ।
  • পিতামাতার বৃদ্ধ বয়সে তাদেরকে উফ শব্দটিও বলা যাবেনা।
  • পিতামাতার সাথে কথা বলতে হবে আদবের সাথে। আচরণ করতে হবে সম্মাণজনক ভাবে।
  • পিতামাতার সাথে সব সময় নম্র ও বিনীত থাকতে হবে।
  • পিতামাতার জন্য আল্লাহর শিখানো ভাষায় দোয়া করতে হবে। তাদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করতে হবে।
  • পিতামাতা যদি শিরকের দিকে নিয়ে যেতে চায়, সে অবস্থায় তাদের আনুগত্য করা যাবেনা।
  • পিতামাতা মুশরিক হলেও তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে।
  • পিতামাতা দূ’জনের মাঝে মায়ের অধিকার বেশী। মায়ের অধিকার ৩গুণ বেশী।
  • পিতামাতার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করা বড় ধরণের গোনাহ।
  • পিতামাতার অকৃতজ্ঞ হওয়া জাহান্নামে যাওয়ার কাজ।
  • পিতামাতার শোকরিয়া আদায় জান্নাত লাভের উপায়।
  • পিতামাতাকে অভিশাপ দেয়া কবিরাহ গোনাহ।
  • পিতামাতার অধিকার রয়েছে সন্তানের উপার্জিত সম্পদে।
  • পিতামাতার মৃত্যুর পর তাদের জন্য দোয়া করা, মাগফিরাত কামনা।
  • পিতামাতার মৃত্যুর পর তাদের অসিয়াত পুরণ করা।
  • পিতামাতার মৃত্যুর পর তাদের বন্ধু-বান্ধবীদের তাযীম করা।
  • পিতামাতার মৃত্যুর পর তাদের আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক অটুট রাখা।

স্বামীস্ত্রীর দায়িত্ব  মর্যাদাঃ

স্বামী আর স্ত্রীর সাংসারিক জীবনে একে অপরের অর্ধাঙ্গী ও পরিপুরক। তাই মর্যাদায় ও উভয়ে সমান।
هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنْتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ
“তারা (নারী) তোমাদের লেবাস বা পোষাক এবং তোমারাও তাদের লেবাস।” (বাকারাঃ১৮৭)
وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ
“পুরুষদের যেমন অধিকার রয়েছে স্ত্রীদের উপর, তেমনি স্ত্রীদেরও পুরুষদের উপর নিয়ামানুযায়ী অধিকার রয়েছে।” (বাকারাঃ২২৮)
তবে দায়িত্ব ও কর্তব্যে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। আর দায়িত্ব বন্টনের জটিল কাজটি করেছেন স্বয়ং আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়ালা।

স্বামীর উপর স্ত্রীর অধিকারঃ

  • সন্তুষ্টি সহকারে মোহর লাভের অধিকার।
  • ভরণ পোষণ লাভের অধিকার।
  • সদ্ব্যবহার লাভের অধিকার।
  • স্বামী স্ত্রীর যাবতীয় গোপনীয়তা রক্ষা করবে।
  • যৌন উশৃংখলা থেকে এবং এব্যাপারে কেবলমাত্র স্ত্রীর উপর সন্তুষ্ট থাকার অধিকার।

স্ত্রীর উপর স্বামীর অধিকারঃ

১. স্বামীর গোপন বিষয় সমুহের হেফাজত।
فَٱلصَّٰلِحَٰتُ قَٰنِتَٰتٌ حَٰفِظَٰتٌ لِّلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ ٱللَّهُ
“পূণ্যবতী নারীরা হয়ে থাকে স্বামীর অনুগত অনুরক্ত আর আল্লাহর অনুগ্রহে স্বামীর অনুপস্থিতিতে তার গোপনীয় বিষয়ের হিফাজতকারী।” (নিসাঃ৩৪)
গোপন বিষয় হেফাজতঃ মানে-যাবতীয় গোপনীয়তা রক্ষা করা, যাবতীয় আমানত রক্ষা করা, স্বামীর কোন গোপনীয়তা কখনো প্রকাশ না করা, স্বামীর সম্মানহানী না করা, স্বামীর জন্য অমর্যাদাকর এমন কথা কোথাও না বলা, স্বামীর কোন আমানতের খেয়ানত না করা, স্বামীর অনুপস্থিতিতে নিজেকে পূর্ণ হেফাজত করা।
২. আনুগত্য ও খেদমত লাভের অধিকার।
فَٱلصَّٰلِحَٰتُ قَٰنِتَٰتٌ
“পূণ্যবতী নারীরা হয়ে থাকে স্বামীর অনুগত অনুরক্ত।” (নিসাঃ৩৪)

স্বামীর ক্ষমতা  দায়িত্বঃ

আপনি একজন স্বামী।
আল্লাহ বলেছেনঃ ٱلرِّجَالُ قَوَّٰمُونَ عَلَى ٱلنِّسَآءِ তাই বলে আপনি যেমনে খুশী তেন আচরণ করতে পারবেন না।
  1. শাসন ক্ষমতাঃ
  2. তালাক দেয়ার ক্ষমতাঃ
  3. মোহরঃ
  4. বিয়ের পর ওয়ালিমার আয়োজনঃ হযরত আব্দুর রাহমান ইবনে আউফ হিজরতের পর একজন আনসার মহিলাকে বিয়ে করে আল্লাহর রাসূল সা. এর কাছে শুভ সংবাদ প্রদান করেন। তথন রাসূল সা. বলেনঃ بارك الله لك، أولم لو بشاةٍ  “আল্লাহ তোমার দাম্পত্য জীবনে বরকত দান করুন। একটি বকরী দিয়ে হলেও তুমি এখন ওয়ালিমার ব্যবস্থা করো।”
  5. ভরষ পোষণঃ
  6. সদ্ব্যবহারঃ
  7. স্ত্রীর সাথে হাসি খুশী ও আনন্দদায়ক আচরণঃ
  8. স্ত্রীদের মধ্যে ইনসাফঃ
  9. লজ্জাশীলতার প্রতি লক্ষ রাখাঃ
  10. সন্দেহজনক কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকাঃ
  11. স্ত্রীকে দ্বীনি শিক্ষা প্রদানঃ
  12. স্ত্রীর মাঝে অবাধ্যতা ও ঔদ্ধতা দেখলে বুঝানো, নসিহত, বিছানা পৃথক অথবা অন্য মুখী হয়ে শুয়া, তিনদিন কথাবার্তা না বলা, প্রহার।
  13. উত্তম পন্থায় নির্জন মেলামেশা।

যে সব বিষয় স্বামীস্ত্রীর সম্পর্ককে সুদৃঢকরেঃ

  1. ১. পরস্পরকে সঠিক উপলব্ধি করা।
  2. ২. নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে বরণ করা।
  3. ৩. পারস্পরিক সমঝোতা ও সহিষ্ঞুতা।
  4. ৪. গোপনীয়তা রক্ষা করা।
  5. ৫. যৌন দাবী পুরণ।
  6. ৬. হাস্য রসিকতা।
  7. ৭. উপহার বিনিময়।
  8. ৮. কৃতজ্ঞতা প্রকাশ।
  9. ৯. পারস্পরিক পরামর্শ।

যে সব বিষয় স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ককে সুদৃঢ় করেঃ

বাচ্চাদের আদর ভালবাসা প্রদানঃ

উরামা ইবনে যায়েদ রা. বলেছেন, রাসূল সা. আমাকে এবং ইমাম হাসান রা. কে কোলে তুলে নিতেন এবং দূ’জনকে দুই উরুর উপরে বসিয়ে বলতেন “আল্লাহ! ওদেরকে ভালবাসো, কারণ আমি ওদেরকে ভালবাসি।

সন্তানের প্রতিপালনঃ

রাসূল সা. বলেছেন, “প্রত্যেক মাবন সন্তানই ফিতারাতের উপর (তথা মানবিক গুনাবলী নিয়ে) জন্ম গ্রহণ করে। অতঃপর তার মা-বাবা কাউকে ইহুদী বানায়, কাউকে নাসারা বানায়, কাউকে বানায় অগ্নি পূজারী।” (বায়হাকী)
কোন সন্তানের ভ্রষ্টতার জন্য যখন পরকালে জাহান্নামের ফায়সালা হবে, তখন সে মহান আল্লাহর কাছে আবেদন করবে, “হে আমাদের রব! জিন ও ইনসানের মধ্যে থেকে সেই দুইজনকে আমাদের দেখিয়ে দাও, যারা দুনিযঅয় আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিল। আজ আমরা তাদের উভয়কে আমাদের পায়ের নিচে রাখবো, যাতে তারা (জাহান্নামে আমাদের) নিচে অবস্থান করে।” (হা মীম আস সাজদাহঃ২৯)
يُوَفِّقِ ٱللَّهُ بَيْنَهُمَآ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِيماً خَبِيراً
“অনুকুল অবস্থা তৈরী করে দেবেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞা, সব বিষয়ে অবহিত।” (আন নিসাঃ৩৫)

সন্তানের প্রতি পিতামাতার দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ

  1. ১. সন্তান বেঁচে থাকার অধিকার সংরক্ষণ।
  2. ২. কানে আযান দেয়া।
  3. ৩. আকীকা করা ও নাম রাখা।
  4. ৪. তাহনীক বা মিষ্টি মুখ করানো।
  5. ৫. খতনা দেয়া।
  6. ৬. স্নেহ মমতা।
  7. ৭. দুধ পান করানো।
  8. ৮. লালন পালন ও ভরণ পোষণ।
  9. ৯. শিক্ষাদান ও নৈতিক চরিত্র গঠন।
  10. ১০. সন্তানের মধ্যে ন্যায় বিচার।

সন্তানের বিয়েঃ

  • পরিবার গঠনের প্রথম ও প্রধান ভিত্তি হলো বৈবাহিক বন্ধন।
  • ইসলাম যিনার পথ বন্ধ রাখার জন্য বিয়ে বিধানকে সহজ করেছে।
  • বর-কনের পছন্দের বিষয়টি পিতা ও পরিবারের মুরব্বীদের সংরক্ষিত অধিকার-িএটা ইসলাম বিরুধী ধারণা।
  • ইসলাম বলে “প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষের বিবাহিতাদের সম্মতির ভিত্তিতে হতে হবে।
  • রাসূল সা. বলেছেন “ বিধবা নারীকে তা সম্মতি ছাড়া বিয়ে দেয়া যাবেনা। আর প্রাপ্ত বয়ষ্ক মেয়েকে তার অনুমতি ছাড়া বিবাহ দেওয়া যাবেনা। সাহাবাগন জিজ্ঞেস করলেন, “তার সম্মতি কিভাবে বুঝা যাবে?” রাসূল সা. বললেন, তার নিরবতাই সম্মতি।” (বুখারী)
  • হযরত খানসা বিনতে খিসামা আল আনসারী রা. বর্ণনা করেছেন “যখিন তিনি প্রাপ্ত বয়স্কা, তখন তা৭কে তার বাবা বিবাহ দিয়েছিলেন। সে বিবাহ তার পছন্দ ছিলনা। তারপর তিনি রাসূল সা. এর কাছে গেলে তিনি সে বিবাহ বাতির করে দেন। (বুখারী)
إن رجلا زوّج إبنته بكراً ولم يستأذنها، فأتت النبيَّ ففرَّق بينهما
“এক ব্যক্তি তার কুমারী মেয়েকে তার বিনা অনুমতিতে বিয়ে দেন। বিয়ের পর মেয়েটি নবী সা.এর নিকটে                  অভিযোগ দায়ের করে। তিনি তাদের বিয়ে বিচ্ছেদ করে দেন। (নাসায়ী)
  • বিয়ের অনুষ্ঠানের প্রচার করা। রাসূল সা. বলেছেনঃ এ বিষয়ে অনুষ্ঠানের ব্যাপক প্রচার করো, তা মসজিদের সম্পাদন করো এবং ব্যাপক একতারা বদ্য বাজাও।” (তিরমিযি)
  • বিয়ের মৌলিক উদ্দেশ্য ৪টি। যথাঃ
  1. নারী ও পুরুষের যৌন কামনা পুরণের পথকে বিধিবদ্ধ করা এবং যৌন উশৃংখলা থেকে পবিত্রত রাখা।
  2. নারী ও পুরুষের প্রাকৃতিক প্রেম প্রীতি, ভালবাসা ও হৃদতার দাবীকে পূত পন্থায় পূর্ণ করা এবং তার ফিতরাতের এসব দাবীকে বিকশিত করা ও পূর্ণতা দান করা।
  3. বংশ বিস্তার।
  4. পরিবার গঠন।

বিয়ে সম্পর্কে কুরআনঃ 

সূরা  নিসাঃ ০১
يٰأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱتَّقُواْ رَبَّكُمُ ٱلَّذِي خَلَقَكُمْ مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالاً كَثِيراً وَنِسَآءً وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ ٱلَّذِي تَسَآءَلُونَ بِهِ وَٱلأَرْحَامَ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيباً
হে মানব জতি ! তোমাদের রবকে ভয় করো৷ তিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একটি প্রাণ থেকে ৷ আর সেই একই প্রাণ থেকে সৃষ্টি করেছেন তার জোড়া ৷ তারপর তাদের দূ’জনার থেকে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী ৷ সেই আল্লাহকে ভয় করো যার দোহাই দিয়ে তোমরা পরস্পরের কাছ থেকে নিজেদের হক আদায় করে থাকো এবং আত্মীয়তা ও নিকট সম্পর্ক বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকো৷ নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ তোমাদের ওপর কড়া নজর রেখেছেন৷
সূরা নিসাঃ ২৪
وَٱلْمُحْصَنَٰتُ مِنَ ٱلنِّسَآءِ إِلاَّ مَا مَلَكْتَ أَيْمَٰنُكُمْ كِتَٰبَ ٱللَّهِ عَلَيْكُمْ وَأُحِلَّ لَكُمْ مَّا وَرَاءَ ذَٰلِكُمْ أَن تَبْتَغُواْ بِأَمْوَٰلِكُمْ مُّحْصِنِينَ غَيْرَ مُسَٰفِحِينَ فَمَا ٱسْتَمْتَعْتُمْ بِهِ مِنْهُنَّ فَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ فَرِيضَةً وَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا تَرَٰضَيْتُمْ بِهِ مِن بَعْدِ ٱلْفَرِيضَةِ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِيماً حَكِيماً
আর (যুদ্ধের মাধ্যমে) তোমাদের অধিকারভুক্ত হয়েছে এমন সব মেয়ে ছাড়া বাকি সমস্ত সধবাই তোমাদের জন্য হারাম ৷ এ হচ্ছে আল্লাহর আইন৷ এ আইন মেনে চলা তোমাদের জন্য অপরিহার্য গণ্য করা হয়েছে ৷ এদের ছাড়া বাদ বাকি সমস্ত মহিলাকে অর্থ-সম্পদের মাধ্যমে লাভ করা তোমাদের জন্য হালাল গণ্য করা হয়েছে৷ তবে শর্ত হচ্ছে এই যে, তাদেরকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করতে হবে, অবাধ যৌন লালসা তৃপ্ত করতে পারবে না৷ তারপর যে দাম্পত্য জীবনের স্বাদ তোমরা তাদের মাধ্যমে গ্রহণ করো, তার বদলে তাদের মোহরানা ফরয হিসেবে আদায় করো৷ তবে মোহরানার চুক্তি হয়ে যাবার পর পারস্পরিক রেজামন্দির মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে যদি কোন সমঝোতা হয়ে যায় তাহলে তাতে কোন ক্ষতি নেই৷ আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও জ্ঞানী৷
সূরা নিসাঃ ২৫
وَمَن لَّمْ يَسْتَطِعْ مِنكُمْ طَوْلاً أَن يَنكِحَ ٱلْمُحْصَنَٰتِ ٱلْمُؤْمِنَٰتِ فَمِنْ مَّا مَلَكَتْ أَيْمَٰنُكُم مِّن فَتَيَٰتِكُمُ ٱلْمُؤْمِنَٰتِ وَٱللَّهُ أَعْلَمُ بِإِيمَٰنِكُمْ بَعْضُكُمْ مِّن بَعْضٍ فَٱنكِحُوهُنَّ بِإِذْنِ أَهْلِهِنَّ وَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ بِٱلْمَعْرُوفِ مُحْصَنَٰتٍ غَيْرَ مُسَٰفِحَٰتٍ وَلاَ مُتَّخِذَٰتِ أَخْدَانٍ فَإِذَآ أُحْصِنَّ فَإِنْ أَتَيْنَ بِفَٰحِشَةٍ فَعَلَيْهِنَّ نِصْفُ مَا عَلَى ٱلْمُحْصَنَٰتِ مِنَ ٱلْعَذَابِ ذَلِكَ لِمَنْ خَشِيَ ٱلْعَنَتَ مِنْكُمْ وَأَن تَصْبِرُواْ خَيْرٌ لَّكُمْ وَٱللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তির সম্ভ্রান্ত পরিবারের মুসলিম মেয়েদের বিয়ে করার সামর্থ নেই তার তোমাদের অধিকারভুক্ত মুমিন দাসীদের মধ্য থেকে কাউকে বিয়ে করে নেয়া উচিত ৷ আল্লাহ তোমাদের ঈমানের অবস্থা খুব ভালোভাবেই জানেন৷ তোমরা সবাই একই দলের অন্তরভুক্ত ৷ কাজেই তাদের অভিভাবকদের অনুমতিক্রমে তাদেরকে বিয়ে করো এবং প্রচলিত তাদের মোহরানা আদায় করো, যাতে তারা বিয়ের আবেষ্টনীর মধ্যে সংরক্ষিত হয়ে যায় এবং এরপর কোন ব্যভিচার করে তখন তাদের জন্য সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়েদের জন্য নির্ধারিত শাস্তির অর্ধেক শাস্তি দিতে হবে৷ তোমাদের মধ্য থেকে সেইসব লোকের জন্য এ সুবিধা সৃষ্টি করা হয়েছে, যাদের বিয়ে না করলে তাকওয়া বাঁধ ভেঙে পড়ার আশংকা থাকে৷ তবে সবর করলে তা তোমাদের জন্য ভালো৷ আর আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়৷
সূরা বাকারাঃ ১৮৭
أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ ٱلصِّيَامِ ٱلرَّفَثُ إِلَىٰ نِسَآئِكُمْ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنْتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ عَلِمَ ٱللَّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتانُونَ أَنْفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنْكُمْ فَٱلآنَ بَٰشِرُوهُنَّ وَٱبْتَغُواْ مَا كَتَبَ ٱللَّهُ لَكُمْ وَكُلُواْ وَٱشْرَبُواْ حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ ٱلْخَيْطُ ٱلأَبْيَضُ مِنَ ٱلْخَيْطِ ٱلأَسْوَدِ مِنَ ٱلْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّواْ ٱلصِّيَامَ إِلَى ٱلَّليْلِ وَلاَ تُبَٰشِرُوهُنَّ وَأَنْتُمْ عَٰكِفُونَ فِي ٱلْمَسَٰجِدِ تِلْكَ حُدُودُ ٱللَّهِ فَلاَ تَقْرَبُوهَا كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ ءَايَٰتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ
রোযার সময় রাতের বেলা স্ত্রীদের কাছে যাওয়া তোমাদের জন্য হালাল করে দেয়া হয়েছে ৷ তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক ৷  আল্লাহ জানতে পেরেছেন, তোমরা চুপি চুপি নিজেরাই নিজেদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছিলে ৷ কিন্তু তিনি তোমাদের অপরাধ মাফ করে দিয়েছেন এবং তোমাদের ক্ষমা করেছেন ৷ এখন তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে রাত্রিবাস করো এবং যে স্বাদ আল্লাহ তোমাদের জন্য বৈধ করে দিয়েছেন তা গ্রহণ করো ৷ আর পানাহার করতে থাকো ৷ যতক্ষণ না রাত্রির কালো রেখার বুক চিরে প্রভাতের সাদা রেখা সুস্পষ্টভাবে দৃষ্টিগোচর হয় ৷ তখন এসব কাজ ত্যাগ করে রাত পর্যন্ত নিজের রোযা পূর্ণ করো ৷ আর যখন তোমরা মসজিদে ই’তিকাফে বসো তখন স্ত্রীদের সাথে সহবাস করো না ৷ এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা , এর ধারে কাছেও যেয়ো না ৷ এভাবে আল্লাহ তাঁর বিধান লোকদের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, আশা করা যায় এর ফলে তারা ভুল কর্মনীতি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে ৷
সূরা আন নাহলঃ ৭২
وَٱللَّهُ جَعَلَ لَكُمْ مِّنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجاً وَجَعَلَ لَكُمْ مِّنْ أَزْوَاجِكُم بَنِينَ وَحَفَدَةً وَرَزَقَكُم مِّنَ ٱلطَّيِّبَاتِ أَفَبِٱلْبَاطِلِ يُؤْمِنُونَ وَبِنِعْمَتِ ٱللَّهِ هُمْ يَكْفُرُونَ
আর আল্লাহই তোমাদের জন্য তোমাদের সমজাতীয় স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, তিনিই এ স্ত্রীদের থেকে তোমাদের পুত্র-পৌত্রাদি দান করেছেন এবং ভালো ভালো জিনিস তোমাদের খেতে দিয়েছেন৷ তারপর কি এরা (সবকিছু দেখার ও জানার পরও) বাতিলকে মেনে নেবে এবং আল্লাহর নিয়ামত অস্বীকার করে ?
সূরা আর রুমঃ২১
وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجاً لِّتَسْكُنُوۤاْ إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُم مَّوَدَّةً وَرَحْمَةً إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে , তিনি তোমাদের জন্য তোমাদেরই জাতি থেকে সৃষ্টি করেছেন স্ত্রীগণকে, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি লাভ করো এবং তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন৷ অবশ্যই এর মধ্যে বহু নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্য যারা চিন্তা- ভাবনা করে৷
সূরা আশ শুরাঃ ১১
فَاطِرُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلأَرْضِ جَعَلَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجاً وَمِنَ ٱلأَنْعَامِ أَزْواجاً يَذْرَؤُكُمْ فِيهِ لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْبَصِيرُ
আসমান ও যমীনের স্রষ্টা, যিনি তোমাদের আপন প্রজাতি থেকে তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন, অনুরূপ অন্যান্য জীবজন্তুর ও (তাদের নিজ প্রজাতি থেকে ) জোড়া বানিয়েছেন এবং এই নিয়মে তিনি তোমাদের প্রজন্মের বিস্তার ঘটান৷ বিশ্বজাহানের কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়৷ তিনি সব কিছু শোনেন ও দেখেন৷
সূরা আত তাহরীমঃ ০৬
يٰأَيُّهَا ٱلَّذِينَ آمَنُواْ قُوۤاْ أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَاراً وَقُودُهَا ٱلنَّاسُ وَٱلْحِجَارَةُ عَلَيْهَا مَلاَئِكَةٌ غِلاَظٌ شِدَادٌ لاَّ يَعْصُونَ ٱللَّهَ مَآ أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ
হে লোকজন যারা ঈমান এনেছো, তোমরা নিজেদেরকে এবং নিজেদের পরিবার ও সন্তান-সন্তুতিকে সেই আগুন থেকে রক্ষা করো মানুষ এবং পাথর হবে যার জ্বালানী৷ সেখানে রুঢ় স্বভাব ও কঠোর হৃদয় ফেরেশতারা নিয়োজিত থাকবে যারা কখনো আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে না এবং তাদেরকে যে নির্দেশ দেয়া হয় তাই পালন করে৷
সূরা আল ফুরকানঃ ৭৪
وَٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَٱجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَاماً
তারা প্রার্থনা করে থাকে, “ হে আমাদের রব ! আমাদের নিজেদের স্ত্রীদের ও নিজেদের সন্তানদেরকে নয়ন শীতলকারী বানাও এবং আমাদের করে দাও মুত্তাকীদের ইমাম৷”
সূরা আর রাদঃ ৩৮
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلاً مِّن قَبْلِكَ وَجَعَلْنَا لَهُمْ أَزْوَاجاً وَذُرِّيَّةً وَمَا كَانَ لِرَسُولٍ أَن يَأْتِيَ بِآيَةٍ إِلاَّ بِإِذْنِ ٱللَّهِ لِكُلِّ أَجَلٍ كِتَابٌ
তোমার আগেও আমি অনেক রসূল পাঠিয়েছি এবং তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান সন্তুতি দিয়েছি৷ আর আল্লাহর অনুমতি ছাড়া নিজেই কোন নিদর্শন এনে দেখাবার শক্তি কোন রসূলেরও ছিল না৷ প্রত্যেক যুগের জন্য একটি কিতাব রয়েছে৷

ইসলামী পরিবারের কতিপয় দায়িত্বঃ

১. আত্মীয় স্বজনের অধিকার।
২. উত্তরাধিকার।
৩. চাকর চাকরাণীদের অধিকার।
  • চাকর চাকরাণীদের মর্যাদা হলো দ্বীনি ভাই বা বোনের মর্যাদা।
  • পরিবারের সদস্যরা যা খাবেন, তাদেরও তা খাওয়াবেন।
  • পরিবারের সদস্যরা যে মানের পোষাক পরবেন, তাদেরও সে মানের পোষাক পরাবেন।
  •  সাধ্যের বাহিরে কোন কাজ তাদের উপর চাপাবেন না।
  • কোন কঠিন কাজ করতে দিলে নিজে সাথে সহযোগিতাত করতে হবে।
  • নিজের সাথে একত্রে বসিয়ে তাদের খাওয়াতে হবে।
৪. প্রতিবেশীর অধিকার।
  • প্রতিবেশীদের সাথে সুসম্পর্ক আসমানী তাকীদ।
  • ঈমানের সম্পর্ক।
  • নিজের ভালমন্দ জানার মাপকাঠি।
  • হাদীয়া পাঠানো উচিত।
  • নৈকট্যের ভিত্তিতে প্রতিবেশীর অধিকার।
৫. মেহমানের অধিকার।

পরিবারের জন্য দোয়া করাঃ

হযরত ইব্রাহীম দোয়া করেছিলেন-
رَبَّنَا وَٱجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنَآ أُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَآ إِنَّكَ أَنتَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِيمُ
“পরওয়ার দিগার! আমাদের উভয়কে তোমার আজ্ঞাবহ করো এবং আমাদের বংশধরদের থেকেও একটি অনুগত দল সৃষ্টি করো। নিশ্চয়ই তুমি তাওবা কবুলকারী, দয়ালু।” (বাকারাঃ১২৮)
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَٱجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَاماً
“হে আমার পরওয়ারদিগার রব! আমাদেরকে আমাদের স্ত্রী-পরিজন ও আমাদের সন্তান-সন্ততির চোঁখ শীতলতা দান করুন এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের ইমাম ও পরিচালক নিয়োজিত করুন।” (ফুরকানঃ ৭৪)

Post a Comment

0 Comments