তুমি কি কোন ধবংস লীলা দেখেছো?
তুমি কি দেখেছো তুরস্কের প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প?
তুমি কি দেখেছো সবুজের সমারোহে সাজানো প্রান্তর,
অথবা সূউচ্চ ইমারত-দালন,
ধমকা বাতাস এসে মিশিয়ে দিতে মাটির সাথে,
অথবা এবড়ো থেবড়ো করে দিতে, যেন ‘মুরির টিন’।
অথবা পাই পাই করে সঞ্চিত স্বপ্নীল ক্যারিয়ার,
টেন্ডুলকরের অবিনাশী ব্যাটিং ভেঙে করতে চুরমার ।
তুমি কি দেখেছো সেই জনপদ-যেখানে ছিল-
যেখানে ছিল প্রিয়, আর ছিল প্রিয়া,
যেখানে হর রজনী ‘ভিজিট’ করে শুন্য হিয়া।
যেখানে প্রেম ছিল, ছিল ভালবাসা, স্নেহ-মমতা,
ভক্তি শ্রদ্ধা সবই ছিল অজুত অজুত।
ছিল চোঁখ ঝলসানো অশ্রু অথবা বাঁকা চোঁখের চাহনী,
ছিল আপনজনকে না বলা শত পৃষ্ঠার কাহিনী।
যেখানে বন্ধু, বান্ধব অথবা
বান্ধবীর সমাবেশ ছিল,
যাদের নামের বহু পৃষ্ঠার দফতরও ছিল,
ছিল এলাকা পরিচিত, বিস্তির্ণ
জনপদ,
প্রতিটি মূহুর্ত যার মুখরিত, উদ্ভেলিত, মুক্ত বিহঙ্গ।
ঐকান্তিকতা, সহমর্মিতা, প্রেম প্রেম ভাব অথবা,
অথবা না বলা অস্ফুটিত উচ্চারণ,
মনের মাধুরী মেশানো মাইল সম কথোপকথন।
কিন্তু, কিন্তু আজ ধ্বংস, সব ধ্বংস এবং ধ্বংস,
প্রকৃতির নির্দয় আহবান, নিয়তির
সূনিপুঁণ প্লান,
আর সচিনের বিধ্বংসী মিসাইল সম বেটিং,
সব করে দিল এবড়ো এবং থেবড়ো,
সব হয়ে গেল বেরাচেরা নতুবা চেরাবেরা।
অধিনায়ক রানাতুঙ্গা আজ ধরাশায়ী এবং ‘বল্ডআউট’।
হে পথিক! একটুখানি দাড়াঁও এবং শোন-
কফিনবাহী কাফনবন্দি লাশটাকে চিনতে পারছো কি?
তুরস্কের ভূমিকম্পে প্রয়াত এ লাশ,
বাতাসে ভেসে আসা সুগন্ধ,
কোন টেলকম পাউডারের স্বপ্নময় সৌরভ নয়,
বরং আতর গোলাপ আর কর্পূর মাখা সুরভী।
ওর জানাজায় শরীক হবে?
না দম্ভভরে বলবে ‘এতো ফরজে
কিফায়া’।
প্রিয় পথিক! এটাই নিয়তি, এইতো বাস্তবতা,
ইহাই ধ্বংস লীলা আর ভূমিকম্পের পরবর্তী জগত।
(১৯৯৯ সালে লিখা কবিতা)
0 Comments