১. কুরআনের সূরা মুহাম্মদের নামকরণ করা হয়েছে সূরার ২য় আয়াত থেকে। এই সূরাটির আরেকটি নাম রয়েছে, ঐ নামটি কি এবং কত নম্বর আয়াত থেকে সেই নামকরণ করা হয়েছে?
উত্তরঃ আরেক নাম কিতাল। আর তা সূরার ২০ নম্বর আয়াত থেকে।
২. সূরা মুহাম্মদ মক্কায় নাযিল হয়েছে না মদীনায়? সূরাটি হিজরতের আগে নাযিল হয়েছে না পরে?
উত্তরঃ মদীনায় এবং হিজরতের পর।
৩. সূরা মুহাম্মদ নাযিল হয় তখন যখন মুসলমানরা মদীনায় হিজরত করেছে। তাদেরকে একটি জিনিস শুরু করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে গেছে। কিন্তু তারা এখনো তা শুরু করেনি এমন অবস্থায়। প্রশ্ন হলো, কি জিনিস শুরু করার নির্দেশ দেয়া হয়ে গিয়েছিল?
উত্তরঃ যুদ্ধ।
৪. সূরা মুহাম্মদ যখন নাযিল হয়, তখন মদীনার মুসলমানদের সামনে ২টি পথ খোলা ছিল, যার কোন একটি তাদেরকে গ্রহণ করতে হবে। তার মাঝে একটা ছিল যে, তারা দ্বীনে হকের দাওয়াত ও তাবলীগের কাজই শুধু নয় বরং আনুগত্য ও অনুসরণ পরিত্যাগ করে জাহেলিয়াতের কাছে আত্মসমর্পন করবে। দ্বিতীয় যে পথটি খোলা ছিল তা কি?
উত্তরঃ জীবন বাজি রেখে প্রাণপণে লাড়াই করবে এবং চিরদিনের জন্য এ বিষয়ের ফায়সালা করে দেবে যে, আরবের মাটিতে ইসলাম থাকবে না জাহিলিয়াত থাকবে।
৫. আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদেকে মুসলমানদেরকে দৃঢ় সংকল্পের যে পথ দেখিয়েছে সেটি ঈমানদারদের কি?
উত্তরঃ একমাত্র পথ।
৬. সূরা হজ্জের ৩৯ নম্বর আয়াতে মুসলমানদেরকে যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু মুসলমানদেরকে যুদ্ধের নির্দেশ দেয়া হয় কোন সূরার কত নম্বর আয়াতে?
উত্তরঃ সূরা বাকারাহ ১৯০ নম্বর আয়াতে।
৭. মুসলমানদেরকে যুদ্ধের নির্দেশ দেয়ার আগে যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হয় কোন সূরার কত নম্বর আয়াতের মাধ্যমে?
উত্তরঃ সূরা হাজ্জ, আয়াত ৩৯
৮. সূরা মুহাম্মদ এর আলোচ্য ও বক্তব্য কি?
উত্তরঃ ঈমানদারদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা এবং এ বিষয়ে প্রাথমিক পথনির্দেশনা দেয়া।
৯. কোন দিকটি বিচার করে সূরা মুহাম্মদের নাম সূরা কিতাল রাখা হয়েছে?
উত্তরঃ সূরা মুহাম্মদে ঈমানদারকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা এবং যুদ্ধ বিষয়ে প্রাথমিক পথনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিধায় সূরার নাম রাখা হয়েছে সূরা কিতাল।
১০. সূরা মুহাম্মদে শুরুতেই বলা হয়েছে যে এখন দূ’টি দলের মধ্যে মোকাবিলা হচ্ছে। তার একটির অবস্থান, তারা সত্যকে মেনে নিতে অস্বীকার করেছে এবং আল্লাহর পথে বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে। অপর দলটির অবস্থান কি?
উত্তরঃ আল্লাহর পক্ষ থেকে তার বান্দা মুহাম্মদ সা. এর উপর যে সত্য নাযিল হয়েছিল তা তারা মেনে নিয়েছে।
১১. আল্লাহ তায়ালা প্রথমোক্ত দলটির সমস্ত চেষ্টা-সাধনা ও কাজ-কর্ম নিষ্ফল করে দিয়েছেন। ঐ দলটির অবস্থা কি ছিল?
উত্তরঃ তারা সত্যকে মেনে নিতে অস্বীকার করেছে এবং আল্লাহর পথে বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছিল।
১২. আল্লাহ তায়ালা শেষোক্ত দলটির অবস্থা সংশোধন করে দিয়েছেন। ঐ দলটির অবস্থা কি ছিল?
উত্তরঃ তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে তার বান্দা মুহাম্মদ সা. এর উপর যে সত্য নাযিল হয়েছিল তা মেনে নিয়েছিল।
১৩. কাদেরকে আল্লাহর সাহায্য ও দিকনির্দেশনার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে?
উত্তরঃ মুসলমানদেরকে।
১৪. কাদেরকে সর্বোক্তম প্রতিদানের আশ্বাস দেয়া হয়েছে এবং কেন?
উত্তরঃ মুসলমানদেরকে এবং তা আল্লাহর পথে কুরবানী পেশ করার জন্য্
১৫. ন্যায় ও সত্যেও পথে তাদের প্রচেষ্টা বৃথা যাবে না। বরং দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জায়গাতেই তার ক্রমান্বয়ে এর অধিক ভাল ফল লাভ করবে-এ আশ্বাস বা সান্তনা কাদেরকে দেয়া হয়েছে?
উত্তরঃ মুসলমানদেরকে।
১৬. কারা আল্লাহ সাহায্য ও দিকনির্দেশনা হতে বঞ্চিত?
উত্তরঃ কাফেররা।
১৭. তাদের কোন প্রচেষ্টাই কার্যকর হবে না। কাদের প্রচেষ্টা এবং কাদের বিরুদ্ধে সে প্রচেষ্টা।
উত্তরঃ কাফেরদের প্রচেষ্টা ঈমানদারদের বিরুদ্ধে।
১৮. কারা দুনিয়া ও আখেরাতে খারাপ পরিণামে সম্মুখীন হবে?
উত্তরঃ কাফেররা।
১৯. আল্লাহর নবীকে মক্কা থেকে বের করে দিয়ে কাফেররা প্রকৃত পক্ষে নিজেদের কি ডেকে এনেছে?
উত্তরঃ ধ্বংস।
২০. সূরা মুহাম্মদের শুরুতে ধারাবাহিক ভাবে ৩ সম্প্রদায়ের মানুষের ব্যাপারে কথা বলা হয়েছে। তারা কারা?
উত্তরঃ ১. মুসলমান বা ঈমানদার। ২. কফির। ৩. মুনাফিক।
২১. যুদ্ধের নির্দেশ আসার আগে মুনাফিকরা নিজেদেরকে কি বলে জাহির করতো?
উত্তরঃ বড় মুসলমান।
২২. মুনাফিকরা কাফেরদের সাথে ষড়যন্ত্র করতে শুরু করেছিল কেন?
উত্তরঃ যাতে তারা নিজেদেরকে যুদ্ধের বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।
২৩. মুনাফিকদের আচরণের ব্যাপারে স্পষ্টভাবে সাবধান করা হয়েছে কি বলে?
উত্তরঃ যারা আল্লাহ ও তার দ্বীনের সাথে মুনাফিকী আচরণ করে তাদের কোন আমলই আল্লাহর কাছে গৃহীত হয়না।
২৪. যে মৌলিক প্রশ্নে ঈমানের দাবীদার প্রতিটি ব্যক্তির পরীক্ষা হচ্ছে তা হলো, ১. সে ন্যায় ও সত্যের সাথে আছে না বাতিলের সাথে? ২. তার সমাবেদনা ও সহানুভ‚তি মুসলমান ও ইসলামের প্রতি না কাফের ও কুফরীর প্রতি। তৃতীয়টি কি?
উত্তরঃ সে নিজের ব্যক্তি সত্তা ও স্বার্থকেই বেশী ভালবাসে নাকি যে ন্যায় ও সত্যের প্রতি ঈমান আনার দাবী সে করে তাকেই বেশী ভাল বাসে।
২৫. পরীক্ষায় যে ব্যক্তি মেকী প্রমাণিত হয়, আল্লাহর কাছে তার কি কি জিনিস কোন প্রতিদান লাভের উপযুক্ত বিবেচিত হয়না?
উত্তরঃ তার নামায রোযা এবং যাকাত।
২৬. মুসলমানদেরকে কি কি জিনিস দেখে সাহস না হারাতে এবং সন্ধির প্রস্তাব দিয়ে দূর্বলতা প্রকাশ না করতে উপদেশ দেয়া হয়েছে?
উত্তরঃ নিজেদের সংখ্যাল্পতা ও সহায় সম্বলহনিতা আর কাফেরদের সংখ্যাধিক্য ও সহায় সম্বলের প্রাচ‚র্য্য দেখে।
২৭. আরবে ইসলাম ও এবং মুসলমানরা টিকে থাকবে কি থাকবেনা, এ প্রশ্নের গুরুত্ব ও নাজুকতার দাবী কি ছিল?
উত্তরঃ জীবন কুরবানী করার ও সহায় সম্পদ অকৃপণভাবে কাজে লাগানো।
২৮. একটি প্রশ্ন সামনে ছিল, যার কারণে মুসলমানদেও আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক থাকা সত্তে¡ও আল্লাহর পথে অর্থ ব্যয় করার আহবান জানানো হয়েছে। প্রশ্নটা কি?
উত্তরঃ আরবে ইসলাম ও মুসলমানরা টিকে থাকবে কি থাকবে না।
২৯. যে আল্লাহর পথে অর্থ ব্যয়ে কৃপণতা দেখাবে সে আল্লাহর কি করতে পারবেনা?
উত্তরঃ আল্লাহর কো ক্ষতি করতে পারবেনা।
৩০. কে মানুষের মুখাপেক্ষী নন?
উত্তরঃ আল্লাহ।
৩১. আল্লাহ কখন একটি দলকে অপসারণ করে অপর কোন দল বা গোষ্ঠীকে তাদের স্থলাভিষিক্ত করেন?
উত্তরঃ কোন দল বা গোষ্ঠী যদি দ্বীনের জন্য কুরবানী পেশ করতে টালবাহান করে।
৩২. আল্লাহ কাদের কাজ-কর্ম ব্যর্থ করে দিয়েছেন?
উত্তরঃ যারা কুফরী করেছে এবং আল্লাহর পথে চলতে বাঁধা দিয়েছে।
৩৩. সূরা মুহাম্মাদ শুরু হয়েছে “যারা কুফরী করেছে” শব্দাবলী দিয়ে। এখানে কুফরী বলতে কি বুঝানো হয়েছে?
উত্তরঃ যারা হযরত মুহাম্মদ সা. যে শিক্ষা ও পথনির্দেশনা পেশ করেছেন, তা মেনে নিতে অস্বীকার করেছে।
৩৪. وَصَدُّوا عَن سَبِيلِ اللَّهِ অর্থাৎ “এবং আল্লাহর পথে চলতে বাঁধা দিয়েছে” এর দূ’টি অর্থ কি কি?
উত্তরঃ ১. তারা নিজেরা আল্লাহর পথে আসা থেকে বিরত থেকেছে। ২. তারা অন্যদেও আল্লাহর পথে আসতে বাধা দিয়েছে।
৩৫. অন্যদের আল্লাহর পথে আসতে বাঁধা দেয়া উপায় ও পন্থা ৩টি কি কি?
উত্তরঃ ১. জোরপূর্বক কাউকে ঈমান গ্রহণ থেকে বিরত রাখা। ২. ঈমান গ্রহণকারী ব্যক্তির উপর এমন জুলুম জালানো যে, তার জন্য ঈমানের উপর টিকে থাকা এবং এই ভয়ংকর পরিস্থিতিতে অন্যদের ঈমান গ্রহণ কঠিন হয়ে পড়ে। ৩. নানা উপায়ে দ্বীন ও দ্বীনের অনুসারীদের বিরুদ্ধে মানুষকে বিভ্রান্ত করা।
৩৬. যারা কুফরী করেছে এবং আল্লাহর পথে চলতে বাধা দিয়েছে, তাদের সমস্ত কাজ-কর্ম আল্লাহ কি করে দিয়েছেন?
উত্তরঃ ব্যর্থ করে দিয়েছেন।
৩৭. আল্লাহ কাদের কাজ-কর্ম ব্যর্থ করে দিয়েছেন?
উত্তরঃ যারা কুফরী করে এবং আল্লাহর পথে চলতে বাধা দিয়েছে।
৩৮. أَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ কথাটি ৩টি ব্যাপক অর্থ বহন করে। তা কি কি?
উত্তরঃ ১. তাদের চেষ্টা ও শ্রম সঠিক পথে ব্যয়িত হওয়ার তাওফীক ছিনিয়ে নেয়া। ২. তারা যে কাজ ভাল মনে করে আঞ্জাম দিয়ে আসছে, তা সব ধ্বংস করে দেয়া। ৩. ন্যায় ও সত্যের পথ বন্ধ করতে চলমান চেষ্টা সাধনা ব্যর্থ করে দেয়া।
৩৯. কাফেররা তাদের নিজেদের ধারণায় কিছু কাজ ভাল মনে করে আঞ্জাম দিয়ে আসছিল। তার যে কোন ২টি কি কি?
উত্তরঃ ১. কা’বা ঘরের তত্তাবধান। ২. হাজীদের খেদমত। ৩. মেহমানদের আপ্যায়ন। ৪. আত্মীয়-স্বজনদের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা।
৪০. একদল মানুষ যারা কিছু কাজ করার কারণে তাদের খারাপ কাজগুলো তাদেও থেকে দূর করা এবং তাদের অবস্থা শুধরে দেয়া হয়েছে। ওরা কি কি কাজ করেছে?
উত্তরঃ ১. ঈমান এনেছে। ২. নেক কাজ করেছে। ৩. মুহাম্মদের প্রতি যা নাযিল হয়েছে, তা মেনে নিয়েছে।
৪১. ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ, আখেরাত, পূর্ববর্তী নবী-রাসূল ও পূর্ববর্তী কিতাব সমূহ যতই মেনে চলা হোক, তা তার জন্য কোন কল্যাণকর হবে না। যতক্ষণ না একটি অবশিষ্ট কাজ করা হবে, তা কি?
উত্তরঃ নবী মুহাম্মদ সা. কে এবং তাঁর আনিত শিক্ষা সমূহকে মেনে না নেয়া।
৪২. كَفَّرَ عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ (তাদের খারাপ কাজগুলো তাদের থেকে দূর করে দিয়েছেন) এই কথাটি দূ’টি অর্থ কি কি?
উত্তরঃ ১. জাহেলী যুগে কৃত গুনাহ হিসাব থেকে বাদ দেয়া।২. আকীদা, বিশ্বাস, ধ্যান-ধারণা, নৈতিক চরিত্র এবং কাজ-কর্মের পংকিলতা থেকে মুক্ত করা।
৪৩. وَأَصْلَحَ بَالَهُمْ (এবং তাদের অবস্থা শুধরে দিয়েছেন) এই কথাটির দূ’টি অর্থ কি কি?
উত্তরঃ ১. অতীতের অবস্থা পরিবর্তণ করে ভবিষ্যতের জন্য সঠিক পথে নিয়ে আসা এবং জীবনকে সুবিন্যস্ত ও সুসজ্জিত করা। ২. দূর্বল, অসহায় ও নির্যাতিত অবস্থা থেে বের করা।
৪৪. যারা কুফরী করেছে তারা কার আনুগত্য করছে, আর যারা ঈমান গ্রহণকারী তারা কিসের অনুসরণ করছে?
উত্তরঃ কাফিরেরা বাতিলের আর ঈমানদাররা রবের পক্ষ থেকে আসা সত্যের।
৪৫. كَذَٰلِكَ يَضْرِبُ اللَّهُ لِلنَّاسِ أَمْثَالَهُمْ এই আয়াতের শাব্দি অনুবাদ হলো- “আল্লাহ তায়ালা এভাবে মানুষের জন্য তাদের উদাহরণ পেশ করেন”। কিন্তু এই আয়াতের প্রকৃত অর্থ কি.
উত্তরঃ “এভাবে আল্লাহ তায়ালা উভয় দলকে তাদের অবস্থান সঠিক ভাবে বলে দেন। তাদের একদল বাতিলের অনুসরণ করতে বদ্ধ পরিকর। তাই আল্লাহ তায়ালা তাদের সমস্ত চেষ্টা-সাধনাকে নিষ্ফল করে দিয়েছেন। কিন্তু অপর দল ন্যায় ও সত্যের আনুগত্য গ্রহণ করেছে। তাই আল্লাহ তাদেরকে সমস্ত অকল্যাণ থেকে মুক্ত করে তাদের অবস্থা সংশোধন করে দিয়েছেন।
৪৬. কাফেরদের সাথে যখন মুসলমানদের মোকাবিলা হবে, তখন মুসলমানদের প্রথম কাজ কি হবে?
উত্তরঃ কাফেরদের হত্যা করা।
৪৭. কাফেরদের মোকাবেলার ক্ষেত্রে কখন তাদেরকে শক্ত করে বাঁধতে বলা হয়েছে?
উত্তরঃ যখন তাদেরকে আচ্ছামত পর্যূদস্ত করা হবে।
৪৮. যুদ্ধবাজরা অস্্র সংবরণ না করা পর্যন্ত যুদ্ধবন্দিদের সাথে মুসলমানদের ২রকমের আচরণের এখতিয়ার দেয়া হয়েছে, তা কি কি?
উত্তরঃ অনুকম্পাদ দেখানো অথবা মুক্তিপণ গ্রহণ।
৪৯. আল্লাহ কাদের আমল সমূহ কখনো ধ্বংস করেন না?
উত্তরঃ যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়।
৫০. আল্লাহ চাইলে কাফেরদের সাথে নিজেই বুঝাপড়া করতেন। কিন্তু কেন করেন না?
উত্তরঃ ঈমানদারদের পরীক্ষা করার জন্য।
৫১. “যখন কাফেরদের সাথে তোমাদের মোকাবেলা হবে” - একথাটি দ্বারা আয়াতটি কখন নাযিল হয়েছে বলে স্পষ্ট জানা জায়। এ কথাটি কিসের ইংগিত দেয়?
উত্তরঃ একথাটি দ্বারা স্পষ্ট জানা যায় যে, আয়াতটি যুদ্ধের নির্দেশ আসার পর কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্বে নাযিল হয়েছে। আর ইংগিত দেয় যে, তখনও মোকাবেলা হয়নি।
৫২. সূরা হজ্জ আর সূরা বাকারার আয়াতের মাধ্যমে যুদ্ধের নির্দেশ দেয়ার পর মদীনা মুনাফিক ও দূর্বল ঈমানের লোকদের অবস্থা কেমন হয়েছিল? কেন হয়েছিল?
উত্তরঃ মৃত্যু যেন তাদের মাথার উপর এসে হাজির। আর তা হয়েছিল ভয়ে ও আতংকে।
৫৩. কোন কোন সূরার কত নম্বর আয়াতে যুদ্ধের নির্দেশ দেয়ার পর মদীনার মুনাফিক ও দূর্বল ঈমানের লোকরা ভীত ও আতংকি হয়ে পড়েছিল?
উত্তরঃ সূরা হজ্জ-আয়াতঃ ৩৯ এবং সূরা বাকারা-আয়াতঃ ১৯০
৫৪. কোন জিনিসটি নবীর জন্য শুভনীয় নয়?
উত্তরঃ শত্রুকে যুদ্ধে উচিত মত শিক্ষা দেয়ার আগেই নবীর হাতে তারা বন্দী হওয়া।
৫৫. তোমরা পার্থিব স্বার্থ কামনা করো। কিন্তু আল্লাহর কাছে বিচার্য বিষয় কি”
উত্তরঃ আখেরাত।
৫৬. এটি কুরআনের সর্ব প্রথম আয়াত যুদ্ধের আইন-কানুন সম্পর্কে প্রাথমিক দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে-এটি কোন সুরার কোন আয়াত।
উত্তরঃ সূরা মুহাম্মাদের ৪নম্বর আয়াত।
৫৭. যুদ্ধে মুসলিম সেনাবাহিনীর মূল লক্ষ কি থাকে, কেন থাকে?
উত্তরঃ লক্ষ থাকে শত্রæর সামরিক শক্তি ধ্বংস করা। যাতে যুদ্ধ করার ক্ষমতা না থাকে এবং যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে।
৫৮. কোন লক্ষ থেকে বিচ্যুত হয়ে শত্রæর লোকজনকে বন্দী করতে লেগে যাওয়া অনুচিত?
উত্তরঃ শত্রুর সামরিক শক্তি ধ্বংস করার লক্ষ।
৫৯. যুদ্ধের ময়দানে শত্রæ সেনাদেরকে যুদ্ধবন্দী করার প্রতি মনোযোগ দেয়া কেবল কখন উচিত?
উত্তরঃ যখন শত্রুর শক্তির আচ্ছামত মূলোৎপাটন পবে এবং যুদ্ধের ময়দানে তাদের কেবল মুষ্টিমেয় কিছু লোকই অবশিষ্ট থাকবে।
৬০. যুদ্ধের দিক নির্দেশনা দিতে গিয়ে মুসলমানদেরকে যুদ্ধ ক্ষেত্রে শত্রæর সামরিক শক্তি ধ্বংসের পূর্বে শত্রæ সেনাদেরকে বন্দি করতে লাগতে নিষেধ করা হয়েছে কেন?
উত্তরঃ যাতে মুসলমানেরা মুক্তিপণ লাভ বা ক্রীতদাস সংগ্রহের লোভে পড়ে যুদ্ধের মূল লক্ষ ও উদ্দেশ্য ভ‚লে না বসে।
৬১. যুদ্ধে যারা গ্রেফতার হবে, তাদের সম্পর্কে দুইটি এখতিয়ার কি কি?
উত্তরঃ দয়াপরবশ হয়ে মুক্তি দান অথবা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়া।
৬২. যুদ্ধবন্দিদের দয়াপরবশ হয়ে ছেড়ে দেয়া বা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়ার নিয়মের মাধ্যমে একটি সাধারণ বিধানের উৎপত্তি হয়, তা কি?
উত্তরঃ যুদ্ধবন্দিদের হত্যা করা যাবে না।
৬৩. যুদ্ধবন্দি ব্যাপাওে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. হাসান বাসরী, আতা এবং হাম্মাদ-এর বক্তব্য কি?
উত্তরঃ যুদ্ধরত অবস্থায় মানুষকে হত্যা করা যেতে পারে। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলে এবং বন্দীরা দখলে চলে আসলে তাকে হত্যা করা বৈধ নয়।
৬৪. ঘাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ যুদ্ধবন্দিদের একজনকে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমরের রা. হাতে দিয়ে তাকে হত্যার নির্দেশ দিলে তিনি অস্বীকৃতি জানিয়ে কি বললেন?
উত্তরঃ “আমাদেরকে বন্দী অবস্থায় কাউকে হত্যা করার নির্দেশ দেয়া হয়নি।”
৬৫. এটা কোন স্বাভাবিক ব্যাপক ভিত্তিক নিয়ম-বিধি নয়, বরং একটি ব্যতিক্রমী নিয়ম-বিধি, যা কেবল অনিবার্য প্রয়োজনের ক্ষেত্রেই কাজে লাগানো হবে এবং ইসলামী রাষ্ট্রের শাসক জরুরী মনে করলে তা করতে পারেন। জিনিসটা কি?
উত্তরঃ কোন বন্দী অথবা কিছু সংখ্যক বন্দীকে হত্যা করা।
৬৬. বদরের যুদ্ধের ২জন যুদ্ধবন্দিকে হত্যা করা হয়েছিল। তারা কারা?
উত্তরঃ উকবা ইবনে আবী ম’আইত এবং নাদ্বর ইবনে হারেস।
৬৭. এজন কবি যে এক যুদ্ধের সময় যুদ্ধবন্ধি হয়ে মুসলমানদের কাছে আসে। রাসূল সা. এর নির্দেশে তাকে হত্যা করা হয়। কে সেই কবি, কোন যুদ্ধে সে বন্দি হয়?
উত্তরঃ কবি আবু আযয। ওহুদ যুদ্ধে।
৬৮. বনী কুরাইযা মুসলমানদের কর্তৃক অবরুদ্ধ হওয়ার পর তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেয়ার জন্য কাকে বিচারক হিসাবে গ্রহণ করেছিল?
উত্তরঃ হযরত সা’দ ইবনে মুআয।
৬৯. কোন গোত্রের সকল পুরষদেরকে হত্যা করার জন্য ফায়সালা দেয়া হয়েছিল এবং কে ফায়সালা দিয়েছিলেন?
উত্তরঃ বনী কুরাইযা গোত্রের। ফায়সালাকারী-হযরত সা’দ ইবনে মুআয।
৭০. খায়বার যুদ্ধে বন্দীদের মধ্যে মাত্র একজন ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছিল। সে কে এবং কি তার অপরাধ?
উত্তরঃ কিনান ইবনে আবীল। সে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল।
৭১. কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া যুদ্ধবন্দীদের ব্যাপারে নবী সা. এর কর্মনীতি কি ছিল? আর কাদের কর্মধারা ছিল অনুরূপ?
উত্তরঃ যুদ্ধবন্দিদের হত্যা না করা। খোলাফায়ে রাশেদীনের কর্মধারা।
৭২. হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রাহ. এর খিলাফাত যুগে কি কারণে কতজন যুদ্ধবন্দিকে হত্যা করা হয়েছিল?
উত্তরঃ মুসলমানদেরকে অনেক কষ্ট দেয়ার কারণে মাত্র ১জন কে।
৭৩. যুদ্ধবন্দিদের হত্যার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব কেবলমাত্র কার? আর কার সে অধিকার নেই?
উত্তরঃ সিদ্ধান্তের অধিকার সরকারের। কোন সৈনিকের সে অধিকার নেই।
৭৪. কোন অবস্থায় ব্যক্তি কোন যুদ্ধবন্দিকে হত্যা করতে পারে?
উত্তরঃ যদি বন্দি পালিয়ে যাওয়া বা কোন প্রকার কুমতলবের আশংকা সৃষ্টি হয়, তাহলে পরিস্থিতির মুখোমুখি ব্যক্তি বন্দিকে হত্যা করতে পারে।
৭৫. কোন বন্দিকে হত্যা করার ব্যাপারে ইসলামী ফিকাহবিদগন ৩টি বিষয় পরিস্কার বর্ণনা করেছেন, তা কি কি?
উত্তরঃ ১. বন্দি যদি ইসলাম গ্রহণ করে। ২. বন্দি সরকারের কাছ থেকে বন্টন বা বিক্রি হয়ে ব্যক্তি মালিকানাভ‚ক্ত হয়ে গেলে। ৩. কষ্ট দিয়ে হত্যা করা যাবেনা।
৭৬. যুদ্ধবন্দীদের সম্পর্কে সাধারণ ভাবে যে বিধান দেয়া হয়েছে তা কি কি?
উত্তরঃ তাদের প্রতি দয়া করো নয় তো মুক্তিপণের আদান প্রদান করো।
৭৭. ইহসানের মধ্যে ৪টি জিনিস অন্তর্ভূক্ত, তা কি কি?
উত্তরঃ ১. বন্দী থাকা অবস্থায় তার সাথে ভাল আচরণ করতে হবে। ২. হত্যা বা স্থায়ীভাবে বন্দী করার বদলে দাস বানিয়ে মুসলমানদের মাঝে বন্টন করতে হবে। ৩. জিযিয়া আরো করে তাকে জিম্মি বানিয়ে নিতে হবে। ৪. কোন বিনিময় ছাড়াই তাকে মুক্ত করে দিতে হবে।
৭৮. জিম্মি অর্থ কি?
উত্তরঃ নিরাপত্তা প্রাপ্ত।
৭৯. মুক্তিপণ গ্রহণের ৩টি পন্থা কি কি?
উত্তরঃ ১. অর্থের বিনিময়ে মুক্তি। ২. বিশেষ কোন সেবা গ্রহণের শর্তে মুক্তি। ৩. শত্রæদের হাতে বন্দী নিজের লোকদেও সাথে বিনিময়।
৮০. যুদ্ধবন্দীদের ব্যাপারে শরীয়াতী বিধান ইসলামী সরকারকে কোন একটি মাত্র উপায় ও পন্থার অনুরণ বাধতামূলক করে না দিয়ে সরকারের জন্য কি সুযোগ করে দিয়েছে?
উত্তরঃ সরকার যখন যে উপায় ও পন্থাটিকে সর্বাধিক উপযুক্ত মনে করবে সে পন্থা অনুসারে কাজ করতে পারে।
৮১. একজন যুদ্ধবন্দী যতক্ষণ সরকারের হাতে বন্দী থাকবে, ততক্ষণ সরকারের দায়িত্ব কি?
উত্তরঃ তার খাদ্য, পোষাক ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
৮২. বন্দীদের ব্যাপারে কোন কোন বিষয়গুলোর বৈধতা ইসলামী শরীয়াতে নেই?
উত্তরঃ বন্দীদের ক্ষুধার্ত ও ব¯্রহনি রাখা বা তাদেরকে শাস্তি দেয়া।
৮৩. বদর যুদ্ধের বন্দীদের বিভিন্ন পরিবারের মাঝে বন্টনের প রনবী সা. কি নির্দেশ দিয়েছিলেন?
উত্তরঃ استوصوا بالاسارى خيرا বা “এসব বন্দীদের সাথে ভাল আচরণ করবে।”
৮৪. একজন যুদ্ধবন্দীর বক্তব্য “আমাকে যে আনসারদের পরিবারে রাখা হয়েছিল তারা আমাকে সকাল সন্ধ্যায় রুটি খেতে দিত। কিন্তু নিজেরা শুধু খেজুর খেয়ে থাকতো।” এটি কার উক্তি, তিনি কোন যুদ্ধে বন্দী হন?
উত্তরঃ আবু আযীয। বদর যুদ্ধে বন্দী হন।
৮৫. একজন যুদ্ধবন্দী সম্পর্কে নবী সা.কে জানানো হলো, “সে একজন অনলবর্ষী বক্তা। সে আপানর বিরুদ্ধে বক্তৃতা করতো। তার দাঁত উপড়িয়ে দিন।” কে সেই যুদ্ধবন্দী? এর জবাবে নবী সা. কি বললেন?
উত্তরঃ যুদ্ধবন্দী সুহাইল ইবনে আমর। রাসূল সা. বললেন, আমি যদি তার দাঁত উপড়িয়ে দেই, তাহলে নবী হওয়া সত্তে¡ও আল্লাহ আমার দাঁত উপড়িয়ে দেবেন।
৮৬. রাসূলের যুগের এমন এক বন্দী যাকে বন্দী অবস্থায় উত্তম খাদ্য ও দুধ সরবরাহ করা হতো, কে সে? সে কোন অঞ্চলের নেতা?
উত্তরঃ সুমামা ইবনে উসাল। ইয়ামামা অঞ্চলের নেতা।
৮৭. বন্দী হওয়ার পূর্বে ও পরে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে, তার ব্যাপারে বিধান কি?
উত্তরঃ বন্দী হওয়ার পূর্বে ইসলাম গ্রহণ করলে তাকে মুক্ত ও স্বাধীন করে দেয়া হবে। বন্দী হওয়ার পরে ইসলাম গ্রহণ করলে তাকে মুক্ত বা স্বাধী করে দেয়া হবে না।
৮৮. ঊনী উকাইল গোত্রের এক ব্যক্তি বন্দী হয়ে এসে বললো যে, সে ইসলাম গ্রহণ করেছে। নবী সা. জবাবে কি বললেন?
উত্তরঃ لو قلتها وأنت تملك أمرك أفلحت كل الفلاح বা “যখন তুমি স্বাধীন ছিলে তখন যদি একথাটি বলতে তাহলে তুমি নিসন্দেহে সফলকাম হতে।”
৮৯. “বন্দী যদি মুসলমানের হাতে পড়ার পরে ইসলাম গ্রহণ করে, তাহলে সে নিহত হওয়া থেকে রক্ষা পাবে, তবে দাস থেকে যাবে।” এ উক্তিটি কার?
উত্তরঃ হযরত উমর রা. এর।
৯০. ইসলামে বন্দীদের প্রতি ইহসানের তৃতীয় পন্থাটি কি?
উত্তরঃ জিযিয়া আরোপ করে তাদেরকে ইসলামের যিম্মী নাগরিক বানানো।
৯১. যাদের কাছ থেকে জিযিয়া নেয়া হয়, তাদেরকে পরিভাষায় কি বলে?
উত্তরঃ যিম্মি বা নিরাপত্তা প্রদত্ত।
৯২. যিম্মিরা ইসলামে কাদের মতো স্বাধীনতা নিয়ে থাকবে?
উত্তরঃ মুসলমানদের মতো।
৯৩. আস সিয়ারুল কাবীর গ্রন্থেও লেখক কে?
উত্তরঃ ইমাম মুহাম্মদ।
৯৪. ইমাম মুহাম্মাদের দৃষ্টিতে কাদেরকে যিম্মী নাগরকি বানানো বৈধ?
উত্তরঃ যে সব ব্যক্তিদেরকে দাস বানানো বৈধ।
৯৫. ইমাম মুহাম্মদের দৃষ্টিতে যিম্মীদের ব্যাপারে মুসলমানদের শাসকের কি অধিকার রয়েছে?
উত্তরঃ যিম্মিদের উপর জিযিয়া ও তাদের ভ‚মির উপর ভ‚মি কর আরোপের অধিকার।
৯৬. কিতাবুল আমওয়াল গ্রন্থটির গ্রন্থকার কে?
উত্তরঃ আবু উবায়েদ।
৯৭. ইতিপূর্বে ইরানবাসীরা আমাদের ঘাড়ে চেপেছিল। তারা আমাদের অনেক কষ্ট দিয়েছে, আমাদের সাথে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করেছে এবং আমাদের উপর নানাভাবে বাড়াবাড়ি ও জুলুম করেছে। এর পর আল্লাহ তায়ালা যখন আপনাদের পাঠালেন তখন আপনাদের আগমনে আমরা খুব খুশী হলাম এবঙ আপনাদের বিরুদ্ধে কোন প্রতিরোধ গড়ে তুলিনি। কিংবা যুদ্ধেও অংশ গ্রহণ করিনি। এখন আমার শুনছি যে, আপনি আমাদের দাস বানিয়ে নিতে চাচ্ছেন। এ উক্তিটি কারা কাকে বলেছিলেন?
উত্তরঃ বিজিত ইরাকের এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের একটি প্রতিনিধি দলের উক্তি। হযরত উমরকে উদ্দেশ্য করে।
৯৮. তোমাদের স্বাধীনতা আছে, তোমরা মুসলমান হয়ে যাও, কিংবা জিযিয়া দিতে স্বীকৃতি দিয়ে স্বাধীন হয়ে যাও। এই উক্তিটি কে কাদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন?
উত্তরঃ হযরত উমার রা. বিজিত ইরাকের প্রতিনিধি দলকে উদ্দেশ্য করে।
৯৯. যুদ্ধে যাদের বন্দী করা হয়েছে, তাদের মধ্য থেকে কৃষকদের প্রত্যেককে ছেড়ে দাও। এই কথাটি কে কাকে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন।
উত্তরঃ হযরত উমর রা. হযরত আবু মুসা আশআরীকে লিখা চিঠিতে।
১০০. বন্দীদের সাথে ইহসান করার চত‚র্থ পন্থা কি?
উত্তরঃ কোন প্রকার মুক্তিপণ বা বিনিময় না নিয়েই বন্দীকে ছেড়ে দেয়া।
১০১. এটি একটি বিশেষ অনুকম্পা - কোন জিনিসটাকে অনুকম্পা বলে উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তরঃ যুদ্ধবন্দীদেরকে কোন মুক্তিপন বা বিনিময় না নিয়ে ছেড়ে দেয়া।
১০২. শত্রæর কওমের কোন ব্যক্তিকে মুক্তি দেয়া কোন ক্রমেই যক্তির দাবী হতে পারেনা। কিন্তু কেন?
উত্তরঃ মুক্তিলাভ করার পর সে পুনরায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আসেব।
১০৩. “মুতইম ইবনে আদ্দী যদি জীবিত থাকতো আর সে এসব জঘন্য লোকগুলো সম্পর্কে আমার সাথে আলোচনা করতো, তাহলে আমি তার খাতিরে এদের ছেড়ে দিতাম।” এই কথাগুলো কে কাদের সম্পর্কে বলেছেন?
উত্তরঃ কথাগুলো নবী সা. বদর যুদ্ধবন্দীদের সম্পর্কে বলেছেন।
১০৪. নবী সা. যখন তায়েফ থেকে মক্কায় ফিরেছিলেন, সে সময় কে তাঁকে নিজের আশ্রয়ে নিয়েছিল এবং কে অ¯্র সজ্জিত হয়ে নিজের হেফাজতে তাঁকে হারাম শরীফে নিয়ে গিয়েছিল?
উত্তরঃ মুতইম ইবনে আদদী আর তার ছেলে।
১০৫. কে সেই ব্যক্তি যার সুপারিশ গ্রহণ করলে নবী সা. বদরের যুদ্ধবন্দীদের মুক্তি প্রদানের কথা করতেন বলে বলেছিলেন এবং কেন?
উত্তরঃ ব্যক্তিটি মুতইম ইবনে আদদী। আর এজন্য যে, সে তায়েফ ফেরত নবী সা.কে আশ্রয় দিয়েছিল আর তার ইহসানের প্রতিদান দেয়ার জন্যই।
১০৬. রাসূল সা. এর জিজ্ঞাসার জবাবে ইয়ামামার নেতা সুমাম তিনটি পয়েন্টে বক্তব্য প্রদান করেন, তা কি কি?
উত্তরঃ ১. আপনি যদি আমাকে হত্যা করেন, তাহলে এমন এক ব্যক্তিকে হত্যা করবেন, যার রক্তের কিছু মূল্য আছে। ২. যদি আমার প্রতি ইহসান করেন, তাহলে এমন ব্যক্তির প্রতি ইহসান করা হবে, যে ইহসান স্বীকার করে। ৩. আর যদি আপনি অর্থ চান তাহলে তা আপনাকে প্রদান করা হবে।
১০৭. ইয়ামামার নেতা যাকে বন্দী করে রাসূল সা. এর নিকটে আনা হয়। তার নাম কি?
উত্তরঃ সুমাম ইবনে উসাল।
১০৮. ইয়ামামার নেতা রাসূল সা.কে ৩দফা বক্তব্য প্রদানের পর রাসূল সা. কি করলেন?
উত্তরঃ তিনি তাকে ছেড়ে দিতে আদেশ দিলেন।
১০৯. মুক্তি পেয়ে ইয়ামামার নেতা সুমাম কি করলেন?
উত্তরঃ পার্শবর্তী খেজুর বাগানে গিয়ে গোসল করলেন এবং কালিমা পড়ে মুসলমান হয়ে গেলেন।
১১০. মুসলমান হয়ে ইয়ামামার নেতা সুমাম রাসূল সা.কে কি বললেন?
উত্তরঃ আজকের দিনের আগে আমার কাছে আপনার চেয়ে কোন ব্যক্তি এবং আপনার দ্বীনের চেয়ে কোন দ্বীন অধিক ঘৃণীত ছিলনা। কিন্তু এখন আমার কাছে আপনার চেয়ে কোন ব্যক্তি এবং আপনার দ্বীনের চেয়ে কোন দ্বীন অধিক প্রিয় নয়।
১১১. উমরা করার জন্য ইয়ামামার নেতা সুমাম মক্কা গিয়ে সেখানে কুরাইশদের কি জানিয়ে দিলেন?
উত্তরঃ মুহাম্মদ সা. অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত আজকের দিনের পর ইয়ামামা থেকে কোন শস্য তোমরা পাবেনা।
১১২. কোন এলাকার রসদ বন্ধ না করার জন্য মক্কাবাসীরা রাসূল সা. এর নিকট আবেদন করেছিল?
উত্তরঃ ইয়ামামা।
১১৩. ঊনু কুরাইযার বন্দীদের মধ্য থেকে ২জন বন্দীর মৃত্যুদন্ড রহিত করা হয়। তারা কারা?
উত্তরঃ ১. যাবীর ইবনে বাতা। ২. আমর ইবনে সা’দ (অথবা সু’দা)।
১১৪. বনু কুরাইযার বন্দীদের মধ্য থেকে ২জন বন্দীকে মুক্তি দেয়া হয় তাদের পূর্ববর্তী দুইটি ভাল কাজের জন্য। প্রশ্ন হচ্ছে কোন বন্দী কি ভাল কাজ করেছিলেন?
উত্তরঃ যাবীর-যিনি জাহেলী যুগে বুআস যুদ্ধের সময় হযরত সাবেত ইবনে কায়েসকে আশ্রয় দিয়েছিল। আমার ইবনে সাদ-বনী কুরাইযা গোত্র যখন বিশ্বাসঘাতকতা করে, তখন সে তার গোত্রকে বিশ্বাসঘাতকতা করতে নিষেধ করেছিল।
১১৫. বনু কুরাইযার দুইজন যুদ্ধবন্দীর মৃত্যু দন্ড রহিত করা হয় কি উদ্দেশ্যে?
উত্তরঃ তাদের ইহসানের প্রতিদান দিতে।
১১৬. বনু কুরাইযার বন্দী যাবীর ইবনে বাতার মৃত্যুদন্ড রহিত করে তাকে কার হাতে তুলে দেয়া হয়?
উত্তরঃ হযরত সাবেত ইবনে কায়েস এর হাতে।
১১৭. বনী মুসতালিক যুদ্ধের একজন মহিলা বন্দী। যাকে রাসূল সা. বিয়ে করেন। তিনি কে?
উত্তরঃ হযরত জুয়াইরিয়া।
১১৮. বনী মুসতালিক যুদ্ধের বন্দী জুয়াইরিয়াকে রাসূল সা. বিয়ে করার ফল কি হলো?
উত্তরঃ সকল মুসলমান তাদের অংশের বন্দীদের মুক্ত করে দিলেন। এতে ১০০টি পরিবারের ব্যক্তিবর্গ মুক্তি পেল।
১১৯. কোন একটি কারণে মুসলমানদের পক্ষে পাওয়া যুদ্ধবন্দীরা রাসূল সা. এর আত্মীয় হয়ে গেল। বিধায় যুদ্ধবন্দীরা যার বাগে পড়েছিল, তারা সবাই তাদেরকে মুক্তি দিয়ে দিল। কারণটি কি, এটি কোন যুদ্ধের ঘটনা?
উত্তরঃ একজন যুদ্ধবন্দী জুয়াইরিয়াকে রাসূল সা. বিয়ে করার ফলে সকল যুদ্ধবন্দী তার আত্মীয় হয়ে গেল। এটি বনী মুস্তালিক যুদ্ধের ঘটনা।
১২০. কখন মক্কার ৮০জন ব্যক্তি তানযীমের দিকে এগিয়ে এসে ফজরের নামাযের সময় রাসূলের ক্যাম্পে আক্রমণ চালায়?
উত্তরঃ হুদায়বিয়ার সন্ধির সময়।
১২১. হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় রাসূল সা.এর ক্যাম্পে আক্রমণকারীদের সংখ্যা কত ছিল, তাদেরকে রাসূল সা. ছেড়ে দিলেন কেন?
উত্তরঃ ৮০জন। ছেড়ে দেয়া হয় এজন্য যে, যাতে এ নাজুক পরিস্থিতিতে বিষয়টি যুদ্ধের কারণ হয়ে না দাড়ায়।
১২২. মক্কা বিজয়ের পর গোটা আরব উপদ্বীপ অনুগত হতে কয় বছর সময় লাগে।
উত্তরঃ ২বছর।
১২৩. মক্কা বিজয়ের সময় রাসূল সা.এর উদারতা দেখে আরববাসীরা কোন বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছিল?
উত্তরঃ তাদের মোকাবেলা কোন নিষ্ঠুর ও কঠোর হৃদয় জালেমের সাথে নয়। তাদের মোকাবেলা অত্যন্ত দয়াবান ও উদার নেতার সাথে।
১২৪. হুনায়েন যুদ্ধেও পর কোন গোত্রের প্রতিনিধি দল তাদের বন্দীদের মুক্ত করার জন্য হাজির হয়?
উত্তরঃ হাওয়াযিন গোত্র।
১২৫. হাওয়াযিন গোত্র বন্দীদের মুক্ত করার জন্য যখন হাজির হলো, তখন কি হয়েগিয়েছিল?
উত্তরঃ সকল বন্দীদের বন্টন করা হয়ে গিয়েছে।
১২৬. হাওয়াযিন গোত্রের কতজন বন্দীকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল? তারা কোন যুদ্ধের বন্দী?
উত্তরঃ ৬ হাজার বন্দীকে, ওরা হুনায়িন যুদ্ধের বন্দী।
১২৭. হাওয়াযিন গোত্রের বন্দীদের মুক্তি প্রদানের ফায়সালার মাধ্যমে যে বিষয়গুলো শিক্ষা হিসাবে পাওয়া যায় তা কি কি?
উত্তরঃ বন্টিত হওয়ার পর সরকার নিজে বন্দীদের মুক্ত করে দেয়ার অধিকার রাখেনা। বন্দীদের যেসব লোকের মালিকানায় দেয়া হয়েছে তাদের সম্মতির ভিত্তিতে অথবা বিনিময় দিয়ে বন্দী মুক্ত করা যেতে পারে।
১২৮. বন্দীদের প্রতি ইহসান হিসাবে হযরত আবু বকর রা. কাকে মুক্তি দিয়েছিলেন?
উত্তরঃ আশয়াস ইবনে কায়েসকে।
১২৯. বন্দীদের প্রতি ইহসান হিসাবে হযরত উমর রা. কাকে মুক্তি দিয়েছিলেন?
উত্তরঃ হুরমুযানকে ও মানাযির ও মায়াসানের বন্দীদেরকে।
১৩০. অর্থের বিনিময়ে বন্দীদের ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারে ইমাম মুহাম্মদের মত কি?
উত্তরঃ “প্রয়োজন দেখা দিলে মুসলমানরা অর্থের বিনিময়ে বন্দীদের ছেড়ে দিতে পারেন।”
১৩১. অর্থের বিনিময়ে বন্দীদের মুক্তি প্রদানের দৃষ্টান্ত রাসূল সা. এর জীবনে কয়টি এবং তা কখন?
উত্তরঃ ১টি। এবং তা বদর যুদ্ধের সময়্
১৩২. বদর যুদ্ধের বন্দীদের একজনকে সর্বোচ্চ কত অর্থ নিয়ে মুক্তি দেয়া হয়?
উত্তরঃ এক হাজার থেকে ৪ হাজার মুদ্রা।
১৩৩. ব্যাপক ভাবে অর্থের বিনিময়ে বন্দীদেরকে মুক্তি দেয়ার বিষয়টি মুসলিম ফিকাহবিদগন অপছন্দ করেছেন কেন?
উত্তরঃ কারণ অর্থের বিনিময়ে যাদের ছাড়া হবে তারা পূণরায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে তরবারী ধরবে।
১৩৪. কুরআনে মুক্তিপন গ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়েছে। কথাটা কি সত্য?
উত্তরঃ সত্য।
১৩৫. যুদ্ধবন্দীদেরকে কোন সেবা গ্রহণের মাধ্যমে মুক্তি দেয়ার দৃষ্টান্ত কোন যুদ্ধে দেখা যায়। এবং সে সেবা কি ছিল?
উত্তরঃ বদর যুদ্ধে। আর সেবা ছিল-আনসাদের ১০জন করে শিশুকে লেখাপড়া শিখানো।
১৩৬. একজন সুন্দরী নারী, যিনি যুদ্ধবন্দী হয়ে আসলে সালামা ইবনুল আকওয়ার অংশে পড়েন। রাসূল সা. বার বার বলে মহিলাটিকে চেয়ে নিলেন। কিন্তু কেন নিলেন?
উত্তরঃ ঐ মহিলাকে মক্কায় পাঠিয়ে তার বিনিময়ে বহু মুসলমান বন্দীকে মুক্ত করালেন।
১৩৭. সাকীফ গোত্র ২জন মুসলমানকে বন্দী করে। ঐ দুইজন মুসলমানকে কিভাবে মুক্ত করা হয়?
উত্তরঃ সাকীফের মিত্র বনী উকাইলের এক ব্যক্তি মুসলমানদের হাতে বন্দী হয়। তাকে তায়েফ পাঠিয়ে তার বিনিময়ে ঐ দুই মুসলমানকে মুক্ত করা হয়।
১৩৮. বন্দী বিনিময় সম্পর্কে ইমাম আবু হানিফার ২টি মত কি কি?
উত্তরঃ ১. বিনময় না করা উচিত। ২. বিনিময় করা যেতে পারে।
১৩৯. বন্দী বিনিময় সম্পর্কে ইমাম আবু ইউসুফ, ইমাম মুহাম্মদ, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম মালেক এবং ঈমাম আহমাদের মত কি?
উত্তরঃ বিনিময় জায়েজ।
১৪০. বন্দীদের মাঝে যে মুসলমান হয়ে যাবে, তাকে বিনিময়ের ব্যাপারে ইমামদের মত কি?
উত্তরঃ তাদেরকে কাফেরদের হাতে তুলে দেয়া যাবে না।
১৪১. ইসলাম যুদ্ধবন্দীদের জন্য ব্যাপক আইন রচনা করার হেতু কি?
উত্তরঃ এ আইনের মাধ্যমে প্রত্যেক যুগে এবং সব রকম পরিস্থিতিতে এ সমস্যার মোকাবিলা করার অবকাশ আছে।
১৪২. বাতিলের পূজারীদের মাথা চ‚ণৃ করা আল্লাহর কাজ হলে তিনি ভ‚মিকম্প বা ঝড়-তুফনের মাধ্যমে চোখের পলকে একাজ করতে পারতেন। তাহলে আল্লাহর উদ্দেশ্য কি?
উত্তরঃ ন্যায ও সত্যের অনুসারীদের পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের গুণাবলীকে সুন্দর ও পরিমার্জিত করা।
১৪৩. যারা শাহাদাত লাভ করলো, তাদের জন্য এটা কোন ধরনের বানিজ্য?
উত্তরঃ লোকসানের নয় লাভের বানিজ্য।
১৪৪. আল্লাহর পথে জীবন দানকারীর তিনটি মর্যাদা কি কি?
উত্তরঃ ১. আল্লাহ তাদের পথ প্রদর্শণ করবেন। ২. তাদের অবস্থা সংশোধন করে দেবেন। ৩. তাদেরকে বেহেশতে প্রবেশ করাবেন।
১৪৫. আল্লাহর পথে জীবন দানকারীরা যে সব মর্যাদা লাভ করবে, তাদের মাঝে একটি হলো, তাদের পথ প্রদর্শণ করবেন। এখানে পথ প্রদর্শণ অর্থ কি?
উত্তরঃ জান্নাতের দিকে পথ প্রদর্শন।
১৪৬. আল্লাহর পথে জীবন দানকারীরা যে সব মর্যাদা লাভ করবে, তাদের মাঝে একটি হলো, তাদের অবস্থা সংশোধন করা। এখানে অবস্থা সংশোধন অর্থ কি?
উত্তরঃ জান্নাতে প্রবেশ করার পূর্বে আল্লাহ তাদেরকে উপহার হিসেবে প্রদত্ত পোষাকে সজ্জিত করে সেখানে নিয়ে যাবেন এবং পার্থিব জীবনে যে সব কালিমা তাদের লেগেছিল তা দূর করবেন।
১৪৭. “তোমরা আল্লাহকে সাহায্য করো, আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন” আল্লাহকে সাহায ্য করার অর্থ কি?
উত্তরঃ আল্লাহর বানী ও বিধানকে সমুন্নত করার জন্য জান ও মাল দিয়ে জিহাদ করা।
১৪৭.০১ (تعس ) অর্থ কি?
উত্তরঃ হোঁচট লেগে হুমড়ি খেয়ে পড়া।
১৪৮. ﴿أَفَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ دَمَّرَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ وَلِلْكَافِرِينَ أَمْثَالُهَا﴾ আয়াতাংশের দু’টি অর্থ। একটি অর্থ- এসব কাফেররা যে ধ্বংসের মুখোমুখি হয়েছিল এখন যে কাফেররা মুহাম্মদ সা. এর দাওয়াত মানছে না তাদের জন্যও ঠিক অনুরূপ শাস্তি নির্ধারিত হয়ে আছে। অপর অর্থটি কি?
উত্তরঃ অপর অর্থ হলো- শুধু নিয়ার আযাব দ্বারাই তাদের ধ্বংসের পরিসমাপ্তি ঘটেনি। আখেরাতেও তাদের জন্য এ ধ্বংস নির্ধারিত হয়ে আছে।
১৪৯. (لنا عزى ولا عزى لكم ) এটি কার উক্তি। এর বাংলা অনুবাদ কি?
উত্তরঃ এটি আবু সুফিয়ানের উক্তি। এর বাংলা অনুবাদ “আমাদের আছে উযযা দেবতা, তোমাদের তো উয্যা নেই।”
১৫০. ওহুদের পাহাড়ে আবু সুফিয়ানের উক্তি لنا عزى ولا عزى لكم এর জবাবে তাকে কি বলা হলো?
উত্তরঃ (الله مولانا ولا مولى لكم ) “আমাদের পৃষ্ঠপোষক ও সাহায্যকারী আল্লাহ, কিন্তু তোমাদের পৃষ্ঠপোষক ও সাহায্যকারী নেই।”
১৫১. আল্লাহ যাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন তারা কারা? যে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন তার বৈশিষ্ট্য কি?
উত্তরঃ তারা ঈমান গ্রহণকারী ও সৎকর্মশীল। আর সেই জান্নাত যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা বয়ে যায়।
১৫২. কাফেররা কাদের মতো পানাহার করছে? এদের চ‚ড়ান্ত ঠিকানা কোথায়?
উত্তরঃ কাফেররা জন্তু জানোয়ারের মতো পানাহার করছে । এদের চ‚ড়ান্ত ঠিকানা জাহান্নাম।
১৫৩. জীন জন্তু খায় অথচ আদৌ চিন্তা করেনা। চিন্তা করেনা ৩টি বিষয়ে। তা কি কি?
উত্তরঃ ১. রিযিক কোথা থেকে এসেছে। ২. রিযিক কে তৈরী করেছে? ৩. রিডিকের সাথে সাথে তার উপর রিযিক দাতার কি কি অধিকার বর্তাচ্ছে।
১৫৪. হিজরতের সময় রাসূল সা. মক্কা শহরের দিকে দায়িয়ে মক্কা শহরকে উদ্দেশ্য করে মোট ৩টি কথা বলেন। তা কি কি?
উত্তরঃ ১. আল্লাহর কাছে তুমি (মক্কা) দুনয়িার সব শহরের চেয়ে প্রিয়। ২. আল্লাহর সমস্ত শহরের মধ্যে ইমি তোমাদের সবচেয়ে বেশী ভালবাসি। ৩. ঐদি মুশরিকরা আমাকে বের করে না দিতো, তাহলে আমি কখনো তোমাকে ছেড়ে যেতাম না।
১৫৫. কোন আচরণের মাধ্য মক্কাবাসী প্রকৃত পক্ষে নিজেদের দূর্ভাগ্য ডেকে এনেছে?
উত্তরঃ নবী সা.কে মক্কা থেকে বহিস্কার করে।
১৫৬. কোন আয়াতের বাচনভঙ্গি স্পষ্ট বলে দিচ্ছে যে তা অবশ্যম্ভাবী রূপে হিজরতের পরপর নাযিল হয়ে থাকবে?
উত্তরঃ সূরা মুহাম্মদের ১৩ নম্বর আয়াত- ﴿وَكَأَيِّن مِّن قَرْيَةٍ هِيَ أَشَدُّ قُوَّةً مِّن قَرْيَتِكَ الَّتِي أَخْرَجَتْكَ أَهْلَكْنَاهُمْ فَلَا نَاصِرَ لَهُمْ﴾ হে নবী, অতীতের কত জনপদ তো তোমার সে জনপদ থেকে অধিক শক্তিশালী ছিল, যারা তোমাকে বের করে দিয়েছিল। আমি তাদের এমনভাবে ধ্বংস করছি যে, তাদের কোন রক্ষাকারী ছিলনা।
১৫৭. মুত্তাকীদের জন্য যে জান্নাতের ওয়াদা করা হয়েছে, তার অবস্থা কি?
উত্তরঃ তার মাঝে থাকবে স্বচ্ছ ও নির্মল পানির নহর। বইতে থাকবে এমন সব দূধের নহর যার স্বাদে সামান্য কোন পরিবর্তন বা বিকৃতিও আসবে না। শরাবের এমন নহর যা পানকারীদেও জন্য হবে অতীব সুস্বাদু এবং বইতে থাকবে স্বচ্ছ মধুর নহর। সব রকমের ফল। বরেব পক্ষ থেকে ক্ষমা।
১৫৮. যারা চিরদিন জাহান্নামে থাকেব, তাদেরকে কি পান করানো হবে। এর ফলাফল কি হবে?
উত্তরঃ গরম পানি পান করানো হবে। তাতে তাদের নাড়িভ‚ঁড়ি ছিন্ন ভিন্ন করে দেবে।
১৫৯. ( اسن) বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ ( اسن) এমন পানি, যার স্বাদ ও বর্ণ পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে অথবা যার মধ্যে কোন ভাবে গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে।
১৬০. (غير اسن) অর্থ কি? এর বৈশিষ্ট কি?
উত্তরঃ নির্ভেজাল পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন পানি। এর বৈশিষ্ট হলো-এর মাঝে কোন প্রকার সংমিশ্রন থাকে না।
১৬১. وَأَنْهَارٌ مِّن لَّبَنٍ لَّمْ يَتَغَيَّرْ طَعْمُهُ অর্থাৎ “এমন সব দুধে নহর বইতে থাকবে যার স্বাদে সামান্র কোন পরিবর্তন বা বিকৃতিও আসবে না।” মারফু হাদীসে এর কি ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে?
উত্তরঃ “তা পশুর বাঁট বা স্তন থেকে নির্গত দুধ হবে না।”
১৬২. জান্নাতের দুধের বৈশিষ্ট বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছে “তার স্বাদ কোন পরিবর্তন আসবে না” এর মানে কি?
উত্তরঃ অর্থাৎ পশুর পালন থেকে নির্গত দুধে যে এক ধরনের গন্ধ থাকে, তার লেশমাত্রও থাকবেনা।
১৬৩. “শরাবের এমন নহর বইতে থাকবে পানকারীদের জন্য যা হবে অতীব সুস্বাদু” মারফু হাদীসে এর কি ব্যাখ্যা করা হয়েছে?
উত্তরঃ ‘পদদলন বা মাড়ানো দ্বারা ঐ শরাব নির্গত হবে না”।
১৬৪. “তা হবে পানকারীদেও জন্য অতীব সুস্বাদু” অর্থ কি?
উত্তরঃ অর্থাৎ-“তা দুনিয়ার মদের মত তীব্র ও গন্ধযুক্ত হবে না।
১৬৫. সূরা সাফ্ফাতে বেহেশতের যে শরাবের বর্ণনা দেয়া হয়েছে, তা কি?
উত্তরঃ ঐ শরাব পান করায় শরীরের কোন ক্ষতি হবেনা, বুদ্ধি বিভ্রমও ঘটবে না।
১৬৬. সূরা ওয়াকিয়াতে জান্নাতে প্রদত্ত শরাবের যে বর্ণনা এসেছে তা কি?
উত্তরঃ তার কারণে মাথাও ধরবে না কিংবা ব্যক্তির বিবেকও লুপ্ত হবেনা।
১৬৭. وَأَنْهَارٌ مِّنْ عَسَلٍ مُّصَفًّى “এবং বইতে থাকবে স্বচ্ছ মধুর নহর”। মারফু হাদীসে এর কি ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে?
উত্তরঃ তা মৌমাছির পেট থেকে নির্গত মধূ হবে না অর্থাৎ ঐ মধূ ঝর্ণা থেকে নির্গত হবে এবং নদী-নালায় প্রবাহিত হবে।
১৬৮. জান্নাতিদেরকে যে সব নিয়ামত প্রদান করার পর সব শেষে আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমার উল্লেখ করা হয়েছে। এই ক্ষমার কয়টি অর্থ হতে পারে এবং তা কি কি?
উত্তরঃ ২টি। ১. এসব নিয়ামাতের চেয়ে বড় নিয়ামাত হলো আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দেবেন। ২. পৃথিবীতে তাদেও দ্বারা যেসব ক্রুটি-বিচ্যুতি হয়েছে জান্নাতে তাদের সামনে কখনো তা উল্লেখ করা হবেনা।
১৬৯. আল্লাহ জান্নাতিদের ত্রæটি-বিচ্যুতির উপর চিরদিনের জন্য পর্দা টেনে দেবেন কেন?
উত্তরঃ যাতে তারা জান্নাতে লজ্জিত না হয়।
১৭০. “এরা সে সব লোক যাদের অন্তরে আল্লাহ মোহর লগিয়ে দিয়েছেন”-কাদের অন্তরে মোহর লাগানো হয়েছে?
উত্তরঃ কাফের, মুনাফিক ও আহলে কিতাবের মধ্যকার আল্লাহদ্রোহী ব্যক্তি, যারা নবী সা. মজলিসে এসে বসতো, তাঁর বানী ও নির্দেশাবলী এবং কুরআনের আয়াত সমূহ শুনতো।
১৭১. “তার আলামত তো এসে গিয়েছে” এখানে কিসের আলামত এসে গেছে। আলামতটি কি?
উত্তরঃ কিয়ামাতের আলামাত। আলামাতটি হলো শেষ নবীর আগমন, এর পর কিয়ামত পর্যন্ত কোন নবী আসবেন না।
১৭২. হাদীসের বর্ণনা অনুযায়ী রাসূল সা. শাহাদাত ও মধ্যমা আংগুলি উঠিয়ে বললেন, بعثت أنا والساعة كها تين । আরবী এই বাক্যাংশের অনুবাদ কি? দূ’টি আংগুলি উঠিয়ে রাসূল কি বুঝালেন।
উত্তরঃ অনুবাদ হলো-“আমার আগমন ও কিয়ামাত এ দূটি আংগুলির মতো”। অর্থাৎ দূ’টি আংগুলির মাঝে যেমন আর কোন আগুল নেই, তেমনি আমার ও কিয়ামতের মাঝে আর কােন নবী পাঠানো হবোন। আমার পওে এখন শুধু কিয়ামাতেরই আগমন ঘটবে।
১৭৩. “আমি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে একশ বার ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকি” এ উক্তিটি কার?
উত্তরঃ হযরত মুহাম্মদ সা. এর।
১৭৪. কুরআনের বলা হয়েছে “তাদের এ অবস্থার জন্য আফসোস”। কাদের অবস্থার জন্য আফসোস।
উত্তরঃ যাদের মনে রোগছিল এবং তাকাচ্ছিল এমন ভাবে যে তার উপর মৃত্যু চেয়ে বসেছে।
১৭৫. ঈমানদাররা বলেছিল যুদ্ধের নির্দেশ সম্বলিত কোন সূরা কেন নাযিল হয়না? কিন্তু যখন নাযিল হলো এবং তাকে যুদ্ধের কথা বলা হলো, তখন যাদের মনে রোগ ছিল তারা কি করছিল।
উত্তরঃ তাদের এমন ভাবে তাকাচ্ছিল যেন মৃত্যু তাদের উপর চেয়ে বসেছে।
১৭৬. যখন ইসলামের জন্য জীবন বাজি রাখার সময় আসলো তখন কি হলো?
উত্তরঃ মুনাফিকদের মুনাফিকী প্রকাশ হয়ে পড়লো এবং ঈমানের লোক দেখানে ে যমুখোশ তারা পরিছিল তা খুলে পড়লো।
১৭৭. إِن تَوَلَّيْتُمْ অর্থ যদি তোমরা ইসলাম থেকে ফিরে যাও। এর দ্বিতীয় আরেকটি অনুবাদ আছে, তা কি?
উত্তরঃ “যদি তোমরা মানুষের শাসক হয়ে যাও।
১৭৮. ইসলামে আত্মীয়তা বন্ধন ছিন্ন করা কি?
উত্তরঃ হারাম।
১৭৯. (رحم ) শব্দটি আরবী ভাষায় রূপক অর্তে কি বুঝাতে ব্যবহৃত হয়?
উত্তরঃ নৈকট্য ও আত্মীয়তা বুঝাতে।
১৮০. আত্মীয়তা রক্ষা করার অর্থ কি?
উত্তরঃ আত্মীয়ের উপকার করার যতটুকুম সামর্থ ব্যক্তির আছে, তা করতে দ্বিধা না করা।
১৮১. আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার অর্থ কি?
উত্তরঃ খারাপ ব্যবহার বা আচরণ করা অথবা যে উপকার করা তার পক্ষে সম্ভব তা না করে পাশ কাটিয়ে চলা।
১৮২. হযরত উমর রা. আত্মীয়তা সম্পর্ক বিষয়ে গোটা ইসলামী অঞ্চলে সাধারণ নির্দেশ জারী করলেন। নির্দেশটা কি?
উত্তরঃ যে দাসীর গর্ভে তার মালিকের ঔরসজাত সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছে, তাকে বিক্রি করা যাবেনা।
১৮৩. “মনের উপরে তাদের তালা লাগানো আছে” এই কথাটির অর্থ কি?
উত্তরঃ “তাদের মনে এমন তালা লাগানো আছে, যা ন্যায় ও সত্যকে চিনে না এমন লোকদের জন্যই নির্দিষ্ট।”
১৮৪. “তারা কি মনে করে নিয়েছে যে, আল্লাহ তাদের মনের ঈর্ষা ও বিদ্বেষ প্রকাশ করবেন না?” ওরা কারা?
উত্তরঃ যে সব লোকের মনে রোগ আছে।
১৮৫. কে জিহাদকারী এবং কে ধৈর্য্যশীল তা যাঁচাই করার জন্য আল্লাহ কি করবেন?
উত্তরঃ পরীক্ষা করবেন।
১৮৬. আল্লাহ কেন পরীক্ষা করবেন?
উত্তরঃ কে জিহাদকারী এবং কে ধৈর্য্যশীল তা যাচাই করার জন্য।
১৮৭. কারা আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবেনা?
উত্তরঃ যারা কুফরী করেছে, আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করেছে, সঠিক পথ স্পষ্ট হওয়ার পরও রাসূলের সাথে বিরোধ করেছে।
১৮৮. “বরং আল্লাহ তাদের সব কৃতকর্ম ধ্বংস করে দিবেন” এই আয়াতাংশে দুইটি অর্থ। তার একটি হলো, নিজেদের বিবেচনায় তারা যেসব কাজ-কর্মকে নেকীর কাজ মনে করে আনজাম দিয়েছে, আল্লাহ তা সবই ধ্বংস করে দেবেন। এজন্য তারা আখেরাতে কোন পারিশ্রমিক পাবেনা। দ্বিতীয় অর্থটি কি?
উত্তরঃ “তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দ্বীনের পথে বাঁধা সৃষ্টি করার জন্য যে সব কৌশন অবলম্বন করেছে তা সবই ব্যর্থ ও নিষ্ফল হয়ে যাবে।”
১৮৯. আমল সমূহের কল্যাণকর ও ফলপ্রসু হওয়া সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে কিসের উপর?
উত্তরঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যেও উপর।
১৯০. সূরা মুহাম্মাদে মুমিনদের উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছেল আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করতে। সাথে আর কি বলা হয়েছে?
উত্তরঃ নিজেদের আমল ধ্বংস না করতে বলা হয়েছে।
১৯১. তিন সম্প্রদায় মানুষকে আল্লাহ কখনো ক্ষমা করবেন না। তারা কারা।
উত্তরঃ ১. কুফর অবলম্বনকারী। ২. আল্লাহর পথে বাঁধা সৃষ্টিকারী। ৩. কুফরীসহ মৃত্যুবরণকারী।
১৯২. যারা আল্লাহর পথে অর্থ ব্যয় করতে কৃপণতা করে, তারা প্রকৃত পক্ষে কার সাথে কৃপণতা করে?
উত্তরঃ নিজের সাথে।
১৯৩. যদি কোন জাতি আল্লাহর দিকে থেকে ফিরিয়ে নেয়। তাহলে আল্লাহ কি করবেন।
উত্তরঃ ঐ জাতির স্থলে অন্য কোন জাতিকে নিয়ে আসবেন।
অন্যান্য সূরা ও বইয়ের উপর প্রশ্নোত্তর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
0 Comments