এটিএম আযহারুল ইসলামের হেদায়াত – মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম



পবিত্র মাহে রামাদ্বান উপলক্ষে বৃহত্তর ইফতার মাহফিলের আয়োজন করতো সে সময়ে বাংলাদেশ কুরআন সুন্নাহ পরিষদ। রামাদ্বানের সময়সূচী গরমের মৌসূমে চলে আসাতে সে সব বড় বড় আয়োজন বন্ধ হয়ে যায়। কাতারের বাংলাদেশ কমিউনিটি নিয়ে হাল আমলে এর চেয়ে বড় আয়োজন আর কেউ করতে পারেননি।
এবারের ইফতার মাহফিলে অতিথি হিসাবে আসলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জনাব এটিএম আযহারুল ইসলাম। কাতারের মুশেরিব এলাকায় মেট্রো রেল জংশনের এখন যেখানে অবস্থান, ঠিক সেই এলাকায় ডানা ফ্লাট নামে একটা ফার্নিশড ফ্লাট ছিল। সেখানেই জনাব আযহারুল ইসলামের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। এর পশ্চিম গেসে ছিল ঢাকা হোটেল। ঢাকা হোটেলে ৪ তলাতে ছিল কুরআন সুন্নাহ পরিষদের অফিস এবং বিশাল মিলনায়তন। দুইটি ফ্লাটের সংযোগ দেয়াল ভেংগে তৈরী করা হয়েছিল এই মিলনায়তন। দুই ফ্লাটের ভাড়া ছিল মাত্র ২৫শ রিয়াল। যা বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী ভাড়া হওয়ার কথা ২০ হাজার রিয়াল।
সে বছর ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয় সালাতা বার্ণ ক্লিনিকের পশ্চিমে তদানিন্তন আবু বকর মাদ্রাসাতে। মাদ্রাসার প্লে গ্রাউন্ডের ময়দানে আয়োজিত ইফতার মাহফিল ছিল ২ দিন ব্যাপী। প্রথম দিন পুরুষদের জন্য আর দ্বিতীয় দিন মহিলাদের জন্য বা পারিবারের জন্য। সেই ইফতার মাহফিলে খাদ্য বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল বারী খান। আমি ছিলাম তার সহকারী। আগে বিরানীর জন্য ১টা প্যাকেট ব্যবহার করা হতো, আর ফ্রুট-সালাত-খেজুর ইত্যাদির জন্য আরেকটা প্যাকেট। ঐ প্যাকেটটা হতো দৃষ্টি নন্দন। আমরা প্যাকেট কিনতে গেলাম ইরানী মার্কেটে। গিয়ে হিসাব করে দেখলাম তদানিন্তন সময়ের প্রায় ২৬শ রিয়াল সেইভ হবে-যদি আমরা দৃষ্টি নন্দন প্যাকেট না দেই। সাথে সাথে ডিসিশন নিয়ে ফেলি। হিজরত করি পলিথিনের শপিং ব্যাগে। সেই থেকে আজ অবধি পলিথিনের শপিং ব্যাগই চলছে। তবে সেই বিশাল আয়োজন আর নাই।
ইফতার মাহফিল উপলক্ষে আগত মেহমান জনাব এটিএম আযহারুল ইসলাম সে সময় কুরআন সুন্নাহ পরিষদের একটি ঘরোয়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে এক হেদায়াতী বক্তব্যে তিনি যা বলেছিলেন, তা আমি নোট করেছিলাম। যার বিবরণ নিম্নরূপঃ
১. সিলেবাসের বইঃ সদস্য সিলেবাসের বইগুলো পড়ার সাথে সাথে উচ্চতর সিলেবাস পড়ে শেষ করতে হবে। পড়া বই বারবার পড়তে হবে।
২. তাফহীমূল কুরআনঃ তাফহীমূল কুরআন পুরোটা পড়ে শেষ করতে হবে।
৩. রাসায়েল মাসায়েলঃ মাওলানার লিখা রাসায়েল মাসায়েল বইটির সকল খন্ড পড়ে শেষ করতে হবে।
৪. নিজ সন্তানঃ নিজের ছেলে মেয়েদের ইসলামী আন্দোলনে শামীল করতে হবে।
৫. ব্যক্তিগত বার্ষিক পরিকল্পনাঃ প্রতি ডিসেম্বর মাসে আগামী বছরের ব্যক্তিগত বার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
৬. সাংগঠনিক কাজঃ
     ক. সাংগঠনিক কাজ করতে হবে কাজের ফলাফলের ভিত্তিতে।
     খ. কাজের শুরুতে ৫টি প্রশ্নঃ
               ১. কি কাজ করবো?
               ২. কেন করবো?
               ৩. কিভাবে করবো?
               ৪. কখন করবো?
               ৫. কাদের নিয়ে করবো?
৭. পরিষদ সদস্যরাঃ
     -  হতে হবে ঢালের ন্যায়।
     - যে কোন অবস্থায় সংগঠনের আভ্যন্তরীন পরিবেশ ভাল রাখা। আর এ জন্য শর্ত ৪টিঃ
     ১. আনুগত্য।
     ২. পরামর্শ ভিত্তিক কাজ করা।
     ৩. মুহাসাবা।
     ৪. পারস্পরিক সম্পর্ক।
     - আত্মগঠনঃ
        o   সময় কাজে লাগানো।
        o   আরবী পড়া।
        o   চরিত্র গঠন।
     - টীম স্পিরিট বজায় রাখতে হবে।
     - আল্লাহর সাথে সুগভীর সম্পর্ক স্থাপন-এজন্য তাহাজ্জুদ নামায।

Post a Comment

1 Comments