মুহাম্মদ নজরুল ইসলামঃঃ সোসাল মিডিয়া বিশেষ করে ফেইসবুকে আমার কিছু বন্ধু জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে সোচ্চার এবং জামায়াতের পক্ষে বলার জন্য বা লিখার জন্য উনাদের ঘুম হারাম। যে কোন বিষয়ে সামান্য সুযোগ পেলেই উনারা গর্জে উঠেন। অত্যন্ত দূঃখজনক হলেও সত্য যে, উনাদের এই গর্জে উঠার ভাষা জামায়াতে ইসলামীর চিরাচরিত ভাষার সাথে মিলেনা।
যেমনঃ
১. আদবের সাথে কথা বলা, পরমতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কথা বলা, বড়দের ব্যাপারে সম্মাণ সূচক শব্দ চয়ন ইত্যাদি বিষয় গুলো উনাদের বলা বা লেখায় স্থান পায়না।
২. উনারা এমন ভাষায় সমালোচনা করেন, অথবা সমালোচনার জবাব দেন-যা জামায়াতে ইসলামীর অফিসিয়েল সিদ্ধান্ত বিরুধী।
৩. উনাদের বক্তব্য সমালোচকদের সমালোচনার জবাব না দিয়ে “আমরা কি চাই, তা বলা” এই নীতির পরিপন্থী।
৪. উনাদের বক্তব্য থেকে কখনই জামায়াতে ইসলামীর ৩ দফা দাওয়াত
বা ৪ দফা কর্মসূচী নিয়ে কোন বক্তব্য থাকেনা।
অপর দিকেঃ
১. উনারা সোসাল মিডিয়া ছাড়া অন্য কোন ভাবে জামায়াতে ইসলামীর
সাথে সম্পর্কিত নন।
২. উনারা জামায়াতে ইসলামীর কর্মীর জন্য দৈনন্দিন আমল-যেমনঃ
নিয়মিত কুরআন হাদীস ও ইসলামী বই অধ্যয়ন, জামায়াতে নামায আদায়, আত্ম-সমালোচনা এবং ব্যক্তিগত ভাল কাজের হিসাব সংরক্ষণ ইত্যাদি যেমন করেননা, একই ভাবে উনাদের উপার্জিত সম্পদ থেকে আল্লাহর পথে নিয়মিত খরচও করেননা।
৩. উনারা ব্যক্তিগত জীবনে জামায়াতের সাংগঠনিক ব্যবস্থার অধীনে
নন,
উনারা জামায়াতে ইসলামীর কোন শাখা-উপশাখার জনশক্তি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত নন, উনাদেরকে নির্দেশ প্রদান করার জন্য সরাসরি কোন দায়িত্বশীল নেই।
৪. উনাদের যাবতীয় তৎপরতা ফেইসবুক বা সোসাল মিডিয়া কেন্দ্রীক।
উনাদের তৎপরতায় মনে হয় যে, ফেইসবুকের মাধ্যমেই উনারা জিহাদ সম্পন্ন করবেন।
অথচ,
এই পথের মুরব্বী সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী মরহুম তাঁর অনবদ্য রচনা “ইসলামী
আন্দোলন সাফল্যের শর্তাবলী”তে উল্লেখ করেছেনঃ “কাজ করার আগ্রহ ও উদ্দেশ্য গ্রহণের সাথে সাথে মানুষ সাধারণতঃ কর্মসূচীর প্রশ্ন উত্থাপন করে। কিন্তু তারা ভুলে যায়, কর্মের সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচীর মধ্যবর্তী স্থানে
কর্মীর নিজের সত্তাই হচ্ছে কাজের আসল ভিত্তি ও নির্ভর। এ বিষয়টিকে বাদ দিয়ে কাজ ও কর্মসূচীর কথা বলা ঠিক নয়।”
অতএব,
যারা ফেইসবুকের মাধ্যমে জিহাদ সম্পন্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন, তাদের প্রতি আহবানঃ আসুন, সমাজ পরিবর্তনের আগে জামায়াতে ইসলামী নির্দেশিত তরিকা অনুযায়ী নিজেকে পরিবর্তন
করার জন্য নিত্যদিন জামায়াতে ইসলামীর কর্মীর জন্য অবশ্য পালনীয়
কাজ গুলো সম্পাদন করতে উদ্যোগী হই।
মনে রাখবেন, যারা নিজেদের
ব্যক্তি গঠনের কাজ করার জন্য আত্মনিয়োগ করেন, তারা অন্যদের
নিয়ে কথা বলার খুব একটা সময় পান না। আর অন্যদের সমালোচনা বা
আলোচনা অথবা পর্যালোচনার জন্য জামায়াতে ইসলামীতে
দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিগন রয়েছেন, তারাই প্রয়োজনীয়
বিষয়ে প্রয়োজনীয় বক্তব্য প্রদান করবেন।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদের সকল প্রচেষ্টাকে ইবাদত হিসাবে
কবুল করুন। আমীন।
১২ মে ২০২০
0 Comments