মুহাম্মদ নজরুল ইসলামঃঃ জামায়াতের পক্ষ নিয়ে যারা নিয়মিত ফেইসবুকে ঝড় তুলেন, জামায়াতকে সমর্থন করতে গিয়ে যারা চরমোনাই, কাওমী, আওয়ামীলীগসহ বিভিন্ন দলের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করেন, সেই সব জিহাদীদের আজকের সর্বশেষ তৎপরতা হলোঃ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলে ছবি সহ খবরেরপোষ্ট। যেখানে দেখানো হয়েছে, মিয়া গোলাম পরওয়ার জেল থেকে মুক্তি পেয়ে দুই হাত উপরে উঠিয়ে হাসি মুখে জনতার অভিবাদনের জবাব দিচ্ছেন।
অথচ খবরটি ১০০ ভাগ মিথ্যা। প্রকৃত সত্য
কথা হচ্ছেঃ জনাব মিয়া গোলাম পরওয়ার সকল মামলা থেকে হাইকোর্ট কর্তৃক জামিন পেয়েছেন
মাত্র। কিন্তু তিনি এখনো মুক্তি পানি। বেইল বন্ডের কাগজ পত্র নিয়ে তার আইনজীবিরা জেলগেটেগিয়ে প্রেসব্রিফিং করছেন।
এখানে সংগত কারণে বলে রাখি যে, জামায়াতে
ইসলামীর খবর জানার জন্য জামায়াতে ইসলামীর নিজস্ব ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজ, ইউটিউব চ্যানেলের
সাথে সাথে একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলও রয়েছে। যা আপনি এখনই সাবস্ক্রাইব করে রাখতে পারেন।
বলছিলাম জামায়াতে ইসলামী সমাবেশ নিয়ে
কথা। যারা জামায়াতের পক্ষ নিয়ে অতিআবেগী হয়ে জিহাদী ভাব নিয়ে ফেইসবুকে ঝড় তুলেন, তাদের
আইডি থেকে জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশের লাইভ পাবো-এমন আশা করেছিলাম। কিন্তু কথিত ফেইসবুক
জিহাদীদের একজনও ঐ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন না।
কারণ কি? কারণ হলোঃ ফেইসবুকে লেখা সহজ,
আলোচনা এবং সমালোচনা করাও সহজ। কিন্তু ময়দানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতির মোকাবেলা করা
চাট্টিখানি কথা নয়। জামায়াতের সমাবেশে উপস্থিত হলে খরচের বিষয় আছে, গায়ের ঘাম ঝরানোর
বিষয় আছে, পুলিশী গ্রেফতারের আশংকা আছে, মারামারির সম্ভাবনা আছে, রক্ত ঝরানোর প্রয়োজন
হতে পারে, পরিস্থিতি বেশামাল হলে শহীদ হওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে। এতো ধরণের রিস্ক নেয়ার
সময় কোথায়। তার চেয়ে এসি রুমে বসে কি বোর্ডের মাধ্যমে জিহাদ কত সহজ না!!! তাই উনারা
অনুপস্থিত ছিলেন। জামায়াত নামধারী ঐসব ফেইসবুক জিহাদীদের কাউকে আমরা সেই দিনের সমাবেশ
কাভার করতে দেখিনি।
তাদের অনুপস্থিতির কারণে সমাবেশ বিঘ্ন
হয়নি। সোসাল মিডিয়াতে কেবলমাত্র জামায়াত নেতৃবৃন্দের ফেইসবুক আইডি থেকে প্রচারিত লাইভের
ভিউ ২০ লাখ ছাড়িয়েছে। সেই সব ফেইসবুক জিহাদীদের অনুপস্থিতির কারণে সমাবেশের কোন ক্ষতি
হয়নি, সমাবেশের প্রচারেও কোন কমতি হয়নি, তাদের অনুপস্থিতি কেউ টেরও পায়নি।
কিন্তু সমাবেশ শেষ হতেই আবার লম্পজম্প
শুরু হলো সেই সব বিপ্লবীদের। স্মরণ কালের ঐতিহাসিক সমাবেশ, জামায়াত হারিয়ে যায়নি ইত্যাদি
নানান মুখরোচক ভাষায় ফেইসবুক অঙ্গনকে আবার গরম করা শুরু করলেন আমাদের জিহাদী ভাইয়েরা।
এরপরই লজ্জাজনক ভাবে আহত করা হলো চরমোনাইর
মেয়রপ্রার্থী মুহতারাম ফজলুল কারীমকে। যেখানে জামায়াতে ইসলামী অফিসিয়ালী সেই ঘটনার
নিন্দা জানালো, সেখানে ফেইসবুক জিহাদীরা আগ বাড়ীয়ে ফজলুল কারীম সাহেব ও তার দলের সমালোচনায়
বিভূর। তাদের ভাষা দেখে মনে হলো, যেন তারা খুবই খুশী হয়েছেন। যা জামায়াতে ইসলামীর নীতি
ও আদর্শের পরিপন্থী, জামায়াতে ইসলামীর আকাবিরদের দেয়া শিক্ষার পরিপন্থী, ময়দানে কর্মরত
মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে অভ্যস্ত কর্মীদের আখলাকের পরিপন্থী।
এই ফেইসবুক জিহাদীদের ব্যাপারে এর আগে
আমার দুইটি লেখায় উল্লেখ করেছি যে, উনারা কেবল কী বোর্ডের সাথে আছেন, বাস্তব ময়দানে
উনাদের কোন উপস্থিতি নেই। এমনকি জামায়াতের নীতি ও আদর্শের সাথে উনাদের দৈনন্দিন জীবনও
নাই। উনাদের প্রতিদিনের কুরআন, হাদীস ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়নের খবর জিরো। উনাদেরকে
মসজিদের জামায়াতে পাওয়া যায়না, উনারা সংগঠনের তারবিয়াতি বৈঠকে অনুপস্থিত। যেখানে সমাবেশ
সহ আগামীর কর্মসূচী বাস্তবায়নে সংগঠন তার জনশক্তির কাছে আর্থিক কুরবানী দাবী করেছে
এবং নিয়মিত জনশক্তি কেউ ওয়াদা করেছে, কেউ ইতিমধ্যে আর্থিক কুরবানীতে শরীক হয়েছে, সেখানে
উনাদেরকে হারিকেন বাতি জ্বালিয়েও পাওয়া মুশকিল।
অতএব, ফেইসবুক জিহাদীদের সম্পর্কে সতর্ক
থাকুন। সংগঠনের সঠিক তথ্য জানার জন্য সংগঠনের ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজসহ সোসাল মিডিয়ার
অন্যান্য লিংকে যুক্ত হোন। নিজে যুক্ত হোন, অন্যদের শেয়ার করুন।
- জামায়াতে ইসলামীর অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ লিংক-এখানে ক্লিক করুন।
- জামায়াতে ইসলামীর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল লিংক-এখানে ক্লিক করুন।
- জামায়াতে ইসলামীর অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেল লিংক-এখানে ক্লিক করুন।
- জামায়াতে ইসলামীর ওয়েবসাইট লিংক-এখানে ক্লিক করুন।
0 Comments