এমন যদি হয়, তাহলে দেশের কি কি ক্ষতি হয়? না হলে দেশের কি কি লাভ হয়?

মুহাম্মদ নজরুল ইসলামঃঃ

১. বক্তৃতার মঞ্চ সমূহে কেবলমাত্র সভাপতি, প্রধান অতিথি আর উপস্থাপকের জন্য মাত্র ৩টি চেয়ার থাকবে। বাকী সকল অতিথি নিচে বসবেন। বক্তৃতার সময় মঞ্চে আরোহন করে বক্তৃতা দিয়ে আবার নিজ আসনে এসে বসবেন। মঞ্চটা হবে এতোই ছোট যে, এর চেয়ে বেশী লোক সেখানে যাবার কোন সুযোগ থাকবেনা। বক্তার পিছনে নেতা পাতি নেতারা মূর্তির মতো দাড়িয়ে থাকবে না।

২. সমাবেশ সমূহে একমাত্র মঞ্চের ব্যানার ব্যবহার করা হবে। অন্য কোন ধরণের কোন ব্যানার ব্যবহার করা হবে না। মিছিলের গগণ বিদারী আওয়াজ শুনে মানুষ মিছিলকারীদের চিনবে, ব্যানার ব্যবহার করা হবে না। ব্যানারের পরিবর্তে দাবী দাওয়া সম্বলিত হাতে লেখা পোষ্টার ব্যবহার করা হবে।

৩. নির্বাচন সমূহের প্রচারণার জন্য কোন মাইক ব্যবহার করা হবে না, কোন পোষ্টার দেয়ালে বা পথে ঘাটে লটকানো হবে না। প্রার্থীরা হ্যান্ডবিল ভোটারদের হাতে হাতে অথবা হোয়াইটসআপ ফেইসবুক ইত্যাদির মাধ্যমে ভোটারদের কাছে পৌছাবেন। নির্বাচন সমন্বয়ের জন্য এক আসনে নিজ বাসা বাড়ীতে অফিস হিসাবে ব্যবহার করা হবে।

৪. প্রার্থীরা তাদের অডিও বা ভিডিও বক্তৃতা রেকর্ড করে ভোটারদের কাছে পৌছাবেন। কোন ধরণের প্রচার মিছিল বা সমাবেশ করা হবে না।

৫. এলাকায় এলাকায় সামাজিক সংগঠন সমূহ প্রতিদিন লাইভ প্রোগ্রাম করে প্রার্থীদের যুক্ত করে ভোটারদের মাঝে তাদের প্রচারণা চালাবে। লাইভে ভোটাররা প্রার্থীদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করে উত্তর জেনে নেবে।

৬. ভোট কেন্দ্র ছাড়া সকল ধরণের প্রতিষ্ঠান ভোটের দিন খোলা থাকবে। যে চাইবে সে ভোট দেবে, যে চাইবেনা সে ভোট দেবে না। তবে সকল প্রতিষ্ঠানের প্রতি নির্দেশ থাকবে যে, ভোট প্রদানের জন্য সকল কর্মচারীকে ৩ ঘন্টার ছুটি দিতে হবে। এর চেয়ে বেশী সময়ের ছুটি যাদের প্রয়োজন, তারা ভোট দিতে চাইলে ১দিনের বিনা বেতনে বা নৈব্যক্তিক ছুটি নিয়ে ভোট প্রদান করবে।

৭. সবাই নিজ নিজ পৈত্রিক নিবাসে ভোটার হবে। কেবলমাত্র ভোট প্রদানের জন্য দূর দেশে থেকে ঈদের আমেজে সে পৈত্রিক নিবাসে গমন করবে। যদি যেতে তার সমস্যা হয়, তাহলে ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকবে।

৮. শহরে যাদের নিজস্ব জমি ও জমির উপর পাকা করা বাসা রয়েছে, তারা পৈত্রিক নিবাসে ভোট স্থানান্তর করতে পারবে। তবে যদি কেউ দুই জায়গায় ভোটার হয়, তাহলে কমপক্ষে ১২ বছরের স্বশ্রম কারাদন্ড ভোগ করবে।

৯. রাজনীনীতির সাথে যুক্ত সাংবাদিককে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তিনি সাংবাদিকতা করবেন, না রাজনীতি করবেন। রাজনীতি করতে ইচ্ছুক সাংবাদিকরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে নির্বাচন কভার করার কাজ থেকে বিরত থাকবেন। সাংবাদিকদের কারা রাজনীতির সাথে যুক্ত, তার একটি তালিকা (উপযুক্ত প্রমাণ সংযুক্তিসহ) প্রার্থীদের নিকট থেকে গ্রহণ করা হবে। যার নামই আসবে, তিনি নির্বাচন কাভার করা থেকে বিরত থাকবেন। যদি কোন প্রার্থী ভূল তথ্য পরিবেশন করেন, তাহলে তার প্রার্থীতা বাতিল বলে গন্য হবে। যে সব ইউটিউব চ্যানেল ও পেইজের সাবাস্ক্রাইভার সংখ্যা ১ লক্ষের কম, তারা নির্বাচন কভার করার সুযোগ পাবেনা। কেবল মাত্র স্থানীয় পর্যায়ে নিবন্ধিত সাংবাদিকরাই নির্বাচন নিউজ কাভার করার সুযোগ পাবেন।

১০. ভোট গ্রহণের শুরুতেই ‘প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ছিল’ মর্মে প্রিজাইডিং অফিসার সংশ্লিষ্ট প্রার্থী বা তার প্রতিনিধির লিখিত ঘোষনা পত্র গ্রহণ করবেন। ভোট শেষ হওয়া মাত্র “নির্বাচন সুষ্টূ হয়েছ’ মর্মে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী বা তার প্রতিনিধির লিখিত ঘোষনা পত্র গ্রহণ করবেন। তারপর ভোট গননা শুরু হবে। ভোট গননার সময় মিডিয়া সমূহ নির্দিষ্ট সাথে অবস্থান করে ভোট গননা সরাসরি লাইভ করবে। ভোট কেন্দ্রের ফলাফল সরাসরি লাইভ করা হবে। নির্বাচনের ফলাফল অফিসিয়ালী প্রিজাইডিং অফিসার প্রার্থী বা তার প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তর করবেন-যা সরাসরি লাইভ করা হবে। একই বোথের এজেন্ট একাধিক বোথ ভিজিট করার সুযোগ পাবেন না। স্থানীয় প্রভাবশালী ও মোড়লরা কোন ধরণের সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন না।

১১. ইনতিকাল, পদত্যাগ ইত্যাদি কোন কারণে কোন আসন শুন্য হলে দেখা হবে ঐ আসনের দ্বিতীয় স্থান অধিকারী ব্যক্তি কত ভোট পেয়েছিলেন। তার ভোট প্রাপ্তির সংখ্যা যদি তৃতীয় থেকে সর্বশেষ প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের যোগফলের চেয়ে বেশী হয় এবং বিজয়ী প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট সংখ্যার অর্ধেকের বেশী হয়, তাহলে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় শুন্য আসনে আসীন হবেন। এজন্য কোন নির্বাচন করা হবে না।

১২. একই ব্যক্তি একাধিক আসনে প্রতিদ্বন্দিতা করতে পারবেন না।

প্রিয় পাঠক! মতামত জানাবেন যে, উপরের এক ডজন বিষয় যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে আমাদের দেশের কি কি ক্ষতি হবে। আর যদি বাস্তবায়িত না হয়, তাহলে আমাদের দেশের কি কি লাভ হবে।

২৩শে জুন ২০২৩


Post a Comment

0 Comments