আরাফাতের দিবসঃ কিছু তথ্য কিছু কথা


মুহাম্মদ নজরুল ইসলামঃঃ ২৪শে জুন ২০২৩

আরাফাতের দিনঃ

➧ ইয়াওম আরাফাহ বা আরাফাতের দিন-দিনটাকে ইয়াওমে উকুফ বা অবস্থানের দিনও বলা হয়ে থাকে

➧ চন্দ্র বর্ষে লাইলাতুল কাদর যেমন হাজারো রজনীর চেয়ে উত্তম, তেমনি দিন হিসাবে ইয়াওম আরাফাহ হচ্ছে সর্বাধিক উত্তম দিন

আরাফাতের দিবস কোনটিঃ

➧ হিজরী বর্ষের ১২তম এবং সর্বশেষ মাস জিলহাজ্জ মাসের নবম তারিখ হলো ইয়াওম আরাফাহ

➧ হজ্জ পালনকারী ব্যক্তিদের হজ্জের আনুষ্ঠানিকতায় এটি দ্বিতীয় দিন হজ্জের আনুষ্ঠানিকতার দিন সমূহের মাঝে এই দিনকে বলা হয় يَوْمَ الْحَجِّ  الْأَكْبَرِ হজ্জের বড় দিন

(এই বিষয়ে আমার অন্য লিখাঃ বাংলাদেশে আরাফাতের রোযা কোন দিন-২৭শে জুন, না ২৮শে জুন, না ৯ই জিলহজ্জ পড়ুন এবং মন্তব্য করুন)

আরাফার দিন কি?

➧ রাসূল সা. বলেছেনঃ الحج عرفة হজ্জ হচ্ছে আরাফাহ হজ্জের নানাবিধ আহকামের আরকানের মাঝে যদি আরাফাতে ৯ই জিলহজ্জের জোহর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়ে ইহরাম অবস্থায় অবস্থান করা না হয়, তাহলে হজ্জ আদায় হবে না

➧ রাসূল সা. হজ্জ করার সময় এই দিনে আরাফাতে অবস্থান করেছে এবং এখানেই ঐতিহাসিক বিদায় হজ্জের ভাষণ প্রদান করেছেন যেখানে আজ নামিরা মসজিদ নামক বিশাল মসজিদ তৈরী করা হয়েছে এবং যেখানে দাড়িয়ে রাসূল সা. ভাষণ দিয়েছিলেন, ঠিক সেখানেই দাড়িয়ে এখন ভাষণ প্রদান করা হয়ে থাকে

➧ আরাফাতে অবস্থানকালীন সময়ে জোহরের ওয়াক্তে একবার আজান দিয়ে ইকামত দিয়ে কসর করে দুই রাকাত জোহরের নামায আদায় করার সাথে সাথে আবার ইকামত দিয়ে দুই রাকাত আসরের নামায আদায় করা হয়

➧ আরাফাতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হাজী সাহেবদের অবস্থান করতে হয় কিন্তু এখানে মাগরিবের নামায আদায় না করে পরবর্তী গন্তব্য মুজদালিফাতে ‘মাশআরুর হারাম’ এ গিয়ে এশার সময়ে প্রথমে মাগরিব পরে এশার নামায একসাথে আদায় করে ফজর পর্যন্ত ‘মাশআরুর হারাম’-মুজদালিফাতে অবস্থান করতে হয় সূরা আল বাকারাহ ১৯৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা বলেনঃ

فَإِذَا أَفَضْتُم مِّنْ عَرَفَاتٍ فَاذْكُرُوا اللَّهَ عِندَ الْمَشْعَرِ الْحَرَامِ ۖ وَاذْكُرُوهُ كَمَا هَدَاكُمْ

“তারপর আরাফাত থেকে অগ্রসর হয়ে ‘মাশআরুর হারাম’ এর কাছে থেমে আল্লাহকে স্মরণ করো এবং এমনভাবে স্মরণ করো যেভাবে স্মরণ করার জন্য তিনি তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন

➧ এই দিনে আরাফাতে অবস্থানকারী হাজী সাহেবদের জন্য আরাফাতের দিবসের রোযা নাই রাসূল সা. বলেছেনঃ صيام يوم عرفة لغير الحاضرين আরাফাতের দিবসের রোযা যারা আরাফাতে অনুপস্থিত, তাদের জন্য

➧ আরাফাতের দিবসে রোযা পূর্বের পরের দুই বছরের গোনাহ মাফের মাধ্যম রাসূল সা. বলেছেনঃ يكفر عن ذنوب السنة الماضية والقادمة ইহা মুছে দেয় পূর্ববর্তী বছরের এবং আগামী বছরের গোনাহ

আরাফাহকে আরাফাহ নাম করণের বিশেষত্বঃ

ব্যাপারে নানাবিধ মতামত পাওয়া যায়

. হযরত আদম . হযরত হাওয়া . জান্নাত থেকে দুনিয়ায় প্রেরিত হওয়ার পর তাদের প্রথম সাক্ষাৎ এখানেই হয়েছিল মানবজাতির একজনের সাথে আরেকজনের এখানেই প্রথম পরিচয় হয়েছে বলে এর নামঃ আরাফাহ-বা পরিচয় বা চিনে নেয়ার স্থান।

. হযরত জিব্রাইল . এখানে আদম . এর সাথে প্রথম সাক্ষাৎ এখানে করে তাকে প্রশ্ন করেনঃ أَعَرَفْتَ আপনি কি আমাকে চিনতে পেরেছেন? তখন আদম . জবাব দেনঃ عَرَفْتُ হ্যাঁ, চিনেছি সেই হিসাবে স্থানটির নাম করণ করা হয়েছেঃ আরাফাহ।

. বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজী সাহেবরা এখানে জমায়েত হোন এবং পরস্পর পরস্পরের সাথে পরিচিত হোন বলে এর নাম করা হয়েছেঃ আরাফাহ

আরাফাতের দিবসের বিশেষত্বঃ

. দ্বীনের পরিপূর্ণতা নিয়ামতের পরিসমাপ্তির দিনঃ

এই দিনে ইসলাম নামক দ্বীনকে পরিপূর্ণতা প্রদান করা হয়েছে এবং উম্মতে মুহাম্মাদীর প্রতি সকল নিয়ামতের পরিপূর্ণতা দান করা হয়েছে, আর ইসলামকেই কেবলমাত্র আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে গ্রহণীয় দ্বীন হিসাবে ঘোষনা প্রদান করা হয়েছে কুরআনে হাকীমের সূরা আল মায়িদাহ এর নম্বর আয়াতে বলা হয়েছেঃ

الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا

“আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি, আমার নিয়ামত তোমাদের প্রতি সম্পূর্ণ করেছি এবং তোমাদের জন্য ইসলামকে তোমাদের দীন হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছি

দিনটি ছিল জুমুয়াবার, আল্লাহ রাসূল সা. আরাফাতে দাড়ানো অবস্থায় ছিলেন এমন অবস্থায় উপরোক্ত আয়াত নাযিল হয়েছে বলে হযরত উমর রা. বর্ণিত হাদীস সূত্রে জানা যায়

২. আরাফাতে অবস্থানকারীদের জন্য ঈদের দিনঃ

যে সব হাজী সাহেব আরাফাতের দিনে আরাফার ময়দানে অবস্থান করবেন, সে সব হাজী সাহেবদের জন্য এই দিন ঈদের দিন রাসূল সা. বলেছেনঃ

يوم عرفة و يوم النحر و أيام التشريق عيدنا أهل الإسلام ، وهي أيام أكل وشرب

আরাফাতের দিন, কুরবানীর দিন এবং আইয়্যাম তাশরীকের দিন সমূহ আহলে ইসলামে ঈদের দিন আর এই দিন গুলো পানাহারের দিন

হযরত উমর রা. বলেনঃ জুমুয়ার দিন এবং আরাফাতের দিন, দুটি দিনই আমাদের জন্য ঈদের দিন

রাসূল সা. এই দিনে রোযা রাখেননি এবং আরাফায় অবস্থানকারীদেরকে রোযা রাখতে নিষেধ করেছেন

. আল্লাহর কসম প্রদানের দিনঃ

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা এই দিনের কসম করেছেন সূরা আল বুরুজ এর শুরুর আয়াতে বলা হয়েছেঃ

 ﴿ وَالسَّمَاءِ ذَاتِ الْبُرُوجِ﴾﴿وَالْيَوْمِ الْمَوْعُودِ﴾﴿وَشَاهِدٍ وَمَشْهُودٍ﴾

“কসম মজবুত দুর্গ বিশিষ্ট আকাশের এবং সেই দিনের যার ওয়াদা করা হয়েছেআর যে দেখে তার এবং সেই জিনিসের যা দেখা যায়” (সূরা বুরুজঃ ১-৩)

হযরত আবু হুরায়রা রা. নবী সা. থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেছেনঃ اليوم الموعود يوم القيامة واليوم المشهود يوم عرفة والشاهد يوم الجمعة- আল মাওউদ-মানে কিয়ামতের দিন, আল মাশহুদ মানে আরাফাতের দিন আর শাহিদ মানে জুমুয়ার দিন

অপর দিকে সূরা আল ফাজরের শুরুতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা কসম করে বলেছেনঃ

﴿ وَالْفَجْرِ﴾﴿وَلَيَالٍ عَشْرٍ﴾﴿وَالشَّفْعِ وَالْوَتْرِ﴾

“ফজরের কসম,  দশটি রাতের, জোড় ও বেজোড়ের।” (সূরা আল ফাজরঃ ১-)

 ইবনে আব্বাস রা. বলেনঃ الشَّفْعِ মানে কুরবানীর দিন আর الْوَتْرِ মানে আরাফার দিন

. রোযা রেখে দুই বছরেরর গোনাহ মাফের দিনঃ

এই দিনের রোযা দুই বছরের গোনাহ মাফ হওয়ার সুযোগ করে দেয়

হযরত আবি কাতাদাহ রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ রাসূল সা. কে আরাফাতের দিনের রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ يكفر السنة الماضية، والسنة القابلة এই দিনের রোযা গত বছর আগামী বছরের গোনাহকে মিটিয়ে ফেলে

তবে তা কেবল যারা হাজী নন, তাদের জন্য-কেননা রাসূল সা. আরাফাতে অবস্থানের সময় রোযা ত্যাগ করেছেন এবং কাউকে রোযা থাকতেও নিষেধ করেছেন

. আল্লাহর কসম কৃত ১০টি দিবসের একটিঃ

সূরা আল ফাজর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা وَلَيَالٍ عَشْرٍ বলে যে কসম করেছেন, ইবনে আব্বাস রা. বলেছেনঃ এটি জিলহাজ্জ এর ১০দিন যে দিবস গুলো মাহাত্ব সম্পর্কে কুরআনে হাকীমে বলা হয়েছেঃ

﴿وَأَذِّن فِي النَّاسِ بِالْحَجِّ يَأْتُوكَ رِجَالًا وَعَلَىٰ كُلِّ ضَامِرٍ يَأْتِينَ مِن كُلِّ فَجٍّ عَمِيقٍ﴾﴿لِّيَشْهَدُوا مَنَافِعَ لَهُمْ وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ فِي أَيَّامٍ مَّعْلُومَاتٍ عَلَىٰ مَا رَزَقَهُم مِّن بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ ۖ فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْبَائِسَ الْفَقِيرَ﴾

“এবং লোকদেরকে হজ্জের জন্য সাধারণ হুকুম দিয়ে দাও, তারা প্রত্যেকে দূর-দূরান্ত থেকে পায়ে হেঁটে ও উটের পিঠে চড়ে তোমার কাছে আসবেযাতে এখানে তাদের জন্য যে কল্যাণ রাখা হয়েছে তা তারা দেখতে পায় এবং তিনি তাদেরকে যেসব পশু দান করেছেন তার উপর কয়েকটি নির্ধারিত দিনে আল্লাহর নাম নেয় নিজেরাও খাও এবং দুর্দশাগ্রস্ত অভাবীকেও খাওয়াও।” (সূরা আল হাজ্জঃ ২৭-২৮)

ইবনে আব্বাস রা. এ নির্ধারিত দিন বলতে জিলহাজ্জের ১০দিন বলে উল্লেখ করেছেন আর এই ১০দিনের ১টি হলো আরাফাতের দিন আর এই ১০দিনের ইবাদত জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর মতো উত্তম আমলের চেয়েও উত্তম আমল বলে হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে

. আল্লাহ পক্ষ থেকে আদম সন্তানের অঙ্গিকার গ্রহণের দিনঃ

হযরত ইবনে আব্বাস রা. বর্ণনা করেন যে, নবী সা. বলেছেনঃ আল্লাহ নামান নামক স্থান তথা আরাফাতে আদমের পিঠে থাকা অবস্থায় অঙ্গিকার গ্রহণ করেছিলেন, তিনি তার পিঠ থেকে প্রত্যেক সন্তান বের করেন যা সে জন্ম দেবে। অতঃপর তাদেরকে সামনে অনুর ন্যায় রাখেন। অতঃপর তাদের সামনাসামনি হয়ে কথা বলেন। তিনি বলেনঃ

وَإِذۡ أَخَذَ رَبُّكَ مِنۢ بَنِيٓ ءَادَمَ مِن ظُهُورِهِمۡ ذُرِّيَّتَهُمۡ وَأَشۡهَدَهُمۡ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمۡ أَلَسۡتُ بِرَبِّكُمۡۖ قَالُواْ بَلَىٰ شَهِدۡنَآۚ أَن تَقُولُواْ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ إِنَّا كُنَّا عَنۡ هَٰذَا غَٰفِلِينَ

আর স্মরণ কর, যখন তোমার রব বনী-আদমের পৃষ্ঠদেশ হতে তাদের বংশধরকে বের করলেন এবং তাদেরকে তাদের নিজদের উপর সাক্ষী করলেন যে, ’আমি কি তোমাদের রব নই’? তারা বলল, ’হ্যাঁ, আমরা সাক্ষ্য দিলাম।’ যাতে কিয়ামতের দিন তোমরা বলতে না পার যে, নিশ্চয় আমরা এ বিষয়ে অনবহিত ছিলাম”(সূরা আল আরাফঃ ১৭১) মুসনাদে আহমাদে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।

৭. গোনাহ মাফ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির দিনঃ

হযরত আয়েশা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেনঃ

مَا مِنْ يَوْمٍ أَكْثَرَ مِنْ أَنْ يُعْتِقَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِيهِ عَبْدًا مِنَ النَّارِ مِنْ يَوْمِ عَرَفَةَ وَإِنَّهُ لَيَدْنُو عَزَّ وَجَلَّ ثُمَّ يُبَاهِي بِهِمُ الْمَلاَئِكَةَ فَيَقُولُ مَا أَرَادَ هَؤُلاَءِ

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা আরাফাতের দিন জাহান্নাম থেকে যতো অধিক সংখ্যক বান্দাকে নাজাত দেন, অন্য কোন দিন এতো অধিক বান্দাকে নাজাত দেন না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা এ দিন (বান্দার) নিকটবর্তী হন, অতঃপর তাদের সম্পর্কে ফেরেশতাদের নিকট গৌরব করে বলেনঃ তারা কী চায়?

হযরত জাবির রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেনঃ “যিলহজ মাসের দশ দিন থেকে উত্তম আল্লাহর নিকট কোন দিন নেই”। তিনি (হযরত জাবির) বলেনঃ এক ব্যক্তি বলেঃ হে আল্লাহর রাসূল, এ দিনগুলোই উত্তম, না এ দিনগুলো আল্লাহর রাস্তায় জিহাদসহ উত্তম? তিনি বললেনঃ “জিহাদ ছাড়াই এগুলো উত্তম।

ومَاَ مِنْ يَوْم أفْضَلُ عِنْد الله مِنْ يَوم عَرَفةَ، يَنْزِلُ الله تَبَارْكَ وتَعَالى إلى السْمَاءِ الدُّنيا فَيُباهي بِأهْلِ الأرض أهَلْ السْمَاءِ، فيقول: انْظُروا إلى عِبَادِي جَاءوا شُعْثًا غُبْرًا حَاجِين جَاءْوا مِنْ كُلِ فجٍّ عَمِيقْ يَرجُونَ رَحْمَتي ولم يَروا عَذَابي، فَلَم يُرَ يومٌ أكثر عتيقًا مِنْ النَّار مِنْ يَوم عَرَفْة

“আল্লাহর নিকট আরাফার দিন থেকে উত্তম কোন দিন নেই, আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন অতঃপর জমিনে বাসকারীদের নিয়ে আসমানে বাসকারীদের সাথে গর্ব করেন। তিনি বলেনঃ আমার বান্দাদের দেখ, তারা হজের জন্য এলোমেলো চুল ও ধূলিময় অবস্থায় দূর-দিগন্ত থেকে এসেছে। তারা আমার রহমত আশা করে, অথচ তারা আমার আযাব দেখেনি। সুতরাং এমন কোনো দিন দেখা যায় না যাতে আরাফার দিনের তুলনায় জাহান্নাম থেকে অধিক মুক্তি পায়”।(ইবনু হিব্বান)

৮. বান্দাদের নিয়ে আল্লাহর গর্ব করার দিনঃ

হযরত আবূ হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেনঃ

إِنَّ اللَّهَ يُبَاهِي بِأَهْل عَرَفَاتْ مَلَائِكَة السْمَاءِ فَيَقُولُ: انْظُرُوا إِلَى عِبَادِي جَاَءُونِي شُعْثًا غُبْرًا

 “আল্লাহ তা’আলা আরাফার লোকদের নিয়ে আসমানের ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করেন, তিনি বলেনঃ আমার বান্দাদের দেখ তারা এলোমেলো চুল ও ধূলিময় অবস্থায় আমার কাছে এসেছে”। (ইবনু হিব্বান)

৯. দোয়া কবুলের দিনঃ

আমর ইবনু শু’আইব রাহি. কর্তৃক পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও তার দাদার সনদে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেনঃ

خَيْرُ الدُّعَاءِ دُعَاءُ يَوْمِ عَرَفَةَ وَخَيْرُ مَا قُلْتُ أَنَا وَالنَّبِيُّونَ مِنْ قَبْلِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ‏.

আরাফাতের দিনের দু’আই উত্তম দুআ। আমি ও আমার আগের নবীগণ যা বলেছিলেন তার মধ্যে সর্বোত্তম কথাঃ “আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বূদ নেই। তিনি এক, তার কোন অংশীদার নেই, সার্বভৌমত্ব তারই এবং সমস্ত কিছুর উপর তিনি সর্বশক্তিমান”

১০. আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ঘোষনার দিনঃ

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেনঃ

وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ وَأَبُو هُرَيْرَةَ يَخْرُجَانِ إِلَى السُّوقِ فِي أَيَّامِ الْعَشْرِ يُكَبِّرَانِ، وَيُكَبِّرُ النَّاسُ بِتَكْبِيرِهِمَا. وَكَبَّرَ مُحَمَّدُ بْنُ عَلِيٍّ خَلْفَ النَّافِلَةِ

হযরত ইবন ওমর ও আবু হুরায়রা (রাঃ) এই দশ দিন তাকবীর বলতে বলতে বাজারের দিকে যেতেন এবং তাদের তাকবীরের সঙ্গে অন্যরাও তাকবীর বলত।

আসুন, মহিমান্বিত এই দিবসকে আমরা ইবাদতের দিন, গোনাহ মার্জনার দিন, বারাকা হাসিলের দিন হিসাবে গ্রহণ করি আমাদের কথায়, আমাদের আমলে, আমাদের সংস্কৃতিতে। আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতায়ালা আমাদের কবুল করুন।

Post a Comment

0 Comments