মুহাম্মদ নজরুল ইসলামঃঃ উম্মাহ শব্দটি মুসলিম সমাজে অতিপরিচিত
একটি পরিভাষা। আরবী অভিধান আলমায়ানীর বর্ণনা অনুযায়ী উম্মাহ শব্দটি বহু বচন হলো উমামুন।
যার শাব্দিক অর্থঃ মা, প্রজন্ম, ভাল গুণের সমন্বয়কারী একজন মানুষ, ঐতিহাসিক বন্ধন দ্বারা
একত্রিত লোকদের একটি দল, যা ভাষাগত, ধর্মীয় বা অর্থনৈতিক হতে পারে এবং যাদের মতবাদ,
রাজনীতি বা অর্থনীতিতে অভিন্ন লক্ষ্য রয়েছে। যেমনঃ আল উম্মাহ আল আরাবিয়াহ বা আরব জাতি,
আল উম্মাহ আল ইসলামিয়া বা মুসলিম জাতি ইত্যাদি।
কুরআনে হাকীমে কমপক্ষে ৪৯টি জায়গায় উম্মাহ শব্দটি এসেছে। যা নিম্নে উপস্থাপিত হলো। অনুবাদ গ্রহণ করা হয়েছে তাফহীমুল কুরআন বাংলা ওয়েবসাইট থেকে।
একঃ
رَبَّنَا
وَاجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنَا أُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكَ
وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَا ۖ إِنَّكَ أَنتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
হে আমাদের রব! আমাদের দু’জনকে তোমার মুসলিম
(নির্দেশের অনুগত) বানিয়ে দাও। আমাদের বংশ থেকে এমন একটি জাতির সৃষ্টি করো যে হবে
তোমার মুসলিম। তোমার ইবাদাতের পদ্ধতি আমাদের বলে দাও এবং আমাদের ভুলচুক মাফ করে
দাও। তুমি বড়ই ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহকারী। (সূরা আল বাকারাহঃ ১২৮)
দুইঃ
تِلْكَ
أُمَّةٌ قَدْ خَلَتْ ۖ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَلَكُم مَّا كَسَبْتُمْ ۖ وَلَا
تُسْأَلُونَ عَمَّا كَانُوا يَعْمَلُونَ
এরা ছিল কিছু লোক। এরা তো অতীত হয়ে গেছে।
তারা যা কিছু উপার্জন করেছে, তা তাদের নিজেদের জন্যই আর
তোমরা যা উপার্জন করবে, তা তোমাদের জন্য। তারা কি করতো সে
কথা তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে না। (সূরা আল বাকারাহঃ ১৩৪)
তিনঃ
تِلْكَ
أُمَّةٌ قَدْ خَلَتْ ۖ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَلَكُم مَّا كَسَبْتُمْ ۖ وَلَا
تُسْأَلُونَ عَمَّا كَانُوا يَعْمَلُونَ
তারা ছিল কিছু লোক। তারা আজ আর নেই। তারা যা
কিছু উপার্জন করেছিল তা ছিল তাদের নিজেদের জন্য। আর তোমরা যা উপার্জন করবে তা
তোমাদের জন্য। তাদের কাজের ব্যাপারে তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে না।” (সূরা
আল বাকারাহঃ ১৪১)
চারঃ
وَكَذٰلِكَ
جَعَلۡنٰكُمۡ اُمَّةً وَّسَطًا لِّتَکُوۡنُوۡا شُهَدَآءَ عَلَى النَّاسِ
وَيَكُوۡنَ الرَّسُوۡلُ عَلَيۡكُمۡ شَهِيۡدًاؕ وَمَا
جَعَلۡنَا الۡقِبۡلَةَ الَّتِىۡ كُنۡتَ عَلَيۡهَآ اِلَّا لِنَعۡلَمَ مَنۡ يَّتَّبِعُ
الرَّسُوۡلَ مِمَّنۡ يَّنۡقَلِبُ عَلٰى عَقِبَيۡهِؕ وَاِنۡ
كَانَتۡ لَكَبِيۡرَةً اِلَّا عَلَى الَّذِيۡنَ هَدَى اللّٰهُؕ وَمَا
كَانَ اللّٰهُ لِيُضِيۡعَ اِيۡمَانَكُمۡؕ اِنَّ
اللّٰهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوۡفٌ رَّحِيۡمٌ
আর এভাবেই আমি তোমাদেরকে একটি ‘মধ্যপন্থী’
উম্মাতে পরিণত করেছি, যাতে তোমরা দুনিয়াবাসীদের ওপর সাক্ষী হতে
পারো এবং রসূল হতে পারেন তোমাদের ওপর সাক্ষী। প্রথমে যে
দিকে মুখ করে তুমি নামায পড়তে, তাকে তো কে রসূলের অনুসরণ করে
এবং কে উল্টো দিকে ফিরে যায়, আমি শুধু তা দেখার জন্য কিব্লাহ
নির্দিষ্ট করেছিলাম। এটি ছিল অত্যন্ত কঠিন বিষয়,
তবে তাদের জন্য মোটেই কঠিন প্রমাণিত হয়নি যারা আল্লাহর হিদায়াত লাভ
করেছিল। আল্লাহ তোমাদের এই ঈমানকে কখনো নষ্ট করবেন না। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো,
তিনি মানুষের জন্য অত্যন্ত স্নেহশীল ও করুণাময়। (সূরা আল
বাকারাহঃ ১৪৩)
পাঁচঃ
كَانَ
النَّاسُ اُمَّةً وَّاحِدَةً فَبَعَثَ اللّٰهُ النَّبِيّٖنَ
مُبَشِّرِيۡنَ وَمُنۡذِرِيۡنَ وَاَنۡزَلَ مَعَهُمُ الۡكِتٰبَ بِالۡحَقِّ لِيَحۡكُمَ
بَيۡنَ النَّاسِ فِيۡمَا اخۡتَلَفُوۡا فِيۡهِؕ وَمَا
اخۡتَلَفَ فِيۡهِ اِلَّا الَّذِيۡنَ اُوۡتُوۡهُ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَتۡهُمُ الۡبَيِّنٰتُ
بَغۡيًۢا بَيۡنَهُمۡۚ فَهَدَى اللّٰهُ الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا لِمَا اخۡتَلَفُوۡا
فِيۡهِ مِنَ الۡحَقِّ بِاِذۡنِهٖؕ وَاللّٰهُ
يَهۡدِىۡ مَنۡ يَّشَآءُ اِلٰى صِرٰطٍ مُّسۡتَقِيۡمٍ
প্রথমে সব মানুষ একই পথের অনুসারী ছিল। (তারপর
এ অবস্থা অপরিবর্তিত থাকেনি, তাদের মধ্যে মতভেদের সূচনা
হয়) তখন আল্লাহ নবী পাঠান। তারা ছিলেন সত্য সঠিক পথের অনুসারীদের জন্য
সুসংবাদদাতা এবং অসত্য ও বেঠিক পথ অবলন্বনের পরিণতির ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শনকারী।
আর তাদের সাথে সত্য কিতাব পাঠান, যাতে সত্য সম্পর্কে তাদের
মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছিল তার মীমাংসা করা যায়।---(এবং প্রথমে তাদেরকে সত্য
সম্পর্কে জানিয়ে দেয়া হয়নি বলে এ মতভেদগুলো সৃষ্টি হয়েছিল, তা
নয়) মতভেদ তারাই করেছিল যাদেরকে সত্যের জ্ঞান দান করা হয়েছিল। তারা সুস্পষ্ট
পথনির্দেশ লাভ করার পরও কেবলমাত্র পরস্পরের ওপর বাড়াবাড়ি করতে চাচ্ছিল বলেই সত্য
পরিহার করে বিভিন্ন পথ উদ্ভাবন করে। --- কাজেই যারা
নবীদের ওপর ঈমান এনেছে তাদেরকে আল্লাহ নিজের ইচ্ছাক্রমে সেই সত্যের পথ দিয়েছেন,
যে ব্যাপারে লোকেরা মতবিরোধ করেছিল। আল্লাহ যাকে চান সত্য সঠিক পথ
দেখিয়ে দেন। (সূরা আল বাকারাহঃ ২১৩)
ছয়ঃ
وَلَا
تَنكِحُوا الْمُشْرِكَاتِ حَتَّىٰ يُؤْمِنَّ ۚ وَلَأَمَةٌ مُّؤْمِنَةٌ خَيْرٌ مِّن
مُّشْرِكَةٍ وَلَوْ أَعْجَبَتْكُمْ ۗ وَلَا تُنكِحُوا الْمُشْرِكِينَ حَتَّىٰ
يُؤْمِنُوا ۚ وَلَعَبْدٌ مُّؤْمِنٌ خَيْرٌ مِّن مُّشْرِكٍ وَلَوْ أَعْجَبَكُمْ ۗ
أُولَـٰئِكَ يَدْعُونَ إِلَى النَّارِ ۖ وَاللَّهُ يَدْعُو إِلَى الْجَنَّةِ
وَالْمَغْفِرَةِ بِإِذْنِهِ ۖ وَيُبَيِّنُ آيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ
يَتَذَكَّرُونَ
মুশরিক নারীদেরকে কখনো বিয়ে করো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। একটি সম্ভ্রান্ত মুশরিক নারী তোমাদের মনহরণ
করলেও একটি মু’মিন দাসী তার চেয়ে ভালো। আর মুশরিক পুরুষদের সাথে নিজেদের নারীদের
কখনো বিয়ে দিয়ো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। একজন
সম্ভ্রান্ত মুশরিক পুরুষ তোমাদের মুগ্ধ করলেও একজন মুসলিম দাস তার চেয়ে ভালো। তারা
তোমাদের আহবান জানাচ্ছে আগুনের দিকে আর আল্লাহ নিজ
ইচ্ছায় তোমাদেরকে আহবান জানাচ্ছেন জান্নাত ও ক্ষমার দিকে। তিনি নিজের বিধান
সুস্পষ্ট ভাষায় লোকদের সামনে বিবৃত করেন। আশা করা যায়, তারা
শিক্ষা ও উপদেশ গ্রহণ করবে। (সূরা আল বাকারাহঃ ২২১)
সাতঃ
وَلْتَكُن
مِّنكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ
وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ ۚ وَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক অবশ্যই থাকতে হবে, যারা নেকী ও সৎকর্মশীলতার দিকে আহবান জানাবে, ভালো
কাজের নির্দেশ দেবে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে। যারা এ দায়িত্ব পালন করবে তারাই
সফলকাম হবে। (সূরা আলে ইমরানঃ ১০৪)
আটঃ
كُنتُمْ
خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ
عَنِ الْمُنكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ ۗ وَلَوْ آمَنَ أَهْلُ الْكِتَابِ
لَكَانَ خَيْرًا لَّهُم ۚ مِّنْهُمُ الْمُؤْمِنُونَ وَأَكْثَرُهُمُ الْفَاسِقُونَ
এখন তোমরাই দুনিয়ায় সর্বোত্তম দল। তোমাদের
কর্মক্ষেত্রে আনা হয়েছে মানুষের হিদায়াত ও সংস্কার সাধনের জন্য। তোমরা নেকীর হুকুম দিয়ে থাকো, দুষ্কৃতি থেকে বিরত
রাখো এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনো। এই আহলি কিতাবরা ঈমান
আনলে তাদের জন্যই ভালো হতো। যদিও তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক ঈমানদার পাওয়া যায়;
কিন্তু তাদের অধিকাংশই নাফরমান। (সূরা আলে ইমরানঃ ১১০)
নয়ঃ
لَيْسُوا
سَوَاءً ۗ مِّنْ أَهْلِ الْكِتَابِ أُمَّةٌ قَائِمَةٌ يَتْلُونَ آيَاتِ اللَّهِ
آنَاءَ اللَّيْلِ وَهُمْ يَسْجُدُونَ
কিন্তু সমস্ত আহলি কিতাব এক ধরনের নয়। এদের
মধ্যে কিছু লোক রয়েছে সত্য পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত। তারা রাতে আল্লাহর আয়াত পাঠ করে
এবং তাঁর সামনে সিজদাবনত হয়। (সূরা আলে ইমরানঃ ১১৩)
দশঃ
فَكَيْفَ
إِذَا جِئْنَا مِن كُلِّ أُمَّةٍ بِشَهِيدٍ وَجِئْنَا بِكَ عَلَىٰ هَـٰؤُلَاءِ
شَهِيدًا
তারপর চিন্তা করো, তখন তারা কি করবে যখন আমি প্রত্যেক উম্মাত থেকে একজন সাক্ষী আনবো এবং
তাদের ওপর তোমাকে (অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে) সাক্ষী
হিসেবে দাঁড় করাবো। (সূরা আন নিসাঃ ৪১)
এগারঃ
وَأَنزَلْنَا
إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ
الْكِتَابِ وَمُهَيْمِنًا عَلَيْهِ ۖ فَاحْكُم بَيْنَهُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ ۖ
وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَهُمْ عَمَّا جَاءَكَ مِنَ الْحَقِّ ۚ لِكُلٍّ جَعَلْنَا
مِنكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا ۚ وَلَوْ شَاءَ اللَّهُ لَجَعَلَكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً
وَلَـٰكِن لِّيَبْلُوَكُمْ فِي مَا آتَاكُمْ ۖ فَاسْتَبِقُوا الْخَيْرَاتِ ۚ إِلَى
اللَّهِ مَرْجِعُكُمْ جَمِيعًا فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ
তারপর হে মুহাম্মাদ! তোমাদের প্রতি এ কিতাব
নাযিল করেছি, যা সত্য নিয়ে এসেছে এবং আল কিতাবের মধ্য
থেকে তার সামনে যা কিছু বর্তমান আছে তার সত্যতা প্রমাণকারী ও তার সংরক্ষক। কাজেই তুমি আল্লাহর নাযিল করা
আইন অনুযায়ী লোকদের বিভিন্ন বিষয়ের ফায়সালা করো এবং যে সত্য তোমার কাছে এসেছে তা
থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করো না।--তোমাদের প্রত্যেকের জন্য একটি শরীয়াত ও একটি কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করে রেখেছি।
আল্লাহ চাইলে তোমাদের সবাইকে একই উম্মতের অন্তর্ভুক্ত করতে পারতেন। কিন্তু তিনি
তোমাদের যা দিয়েছেন তার মধ্যে তোমাদের পরীক্ষা করার জন্য এমনটি করেছেন। কাজেই
সৎকাজে একে অপরের চাইতে অগ্রবর্তী হবার চেষ্টা করো। শেষ পর্যন্ত তোমাদের সবাইকে
আল্লাহর দিকে ফিরে যেতে হবে। তারপর তিনি সেই প্রকৃত সত্যটি তোমাদের জানিয়ে দেবেন
যে ব্যাপারে তোমরা মতবিরোধ করে আসছিলে। (সূরা আল মায়িদাহঃ ৪৮)
বারঃ
وَلَوْ
أَنَّهُمْ أَقَامُوا التَّوْرَاةَ وَالْإِنجِيلَ وَمَا أُنزِلَ إِلَيْهِم مِّن رَّبِّهِمْ
لَأَكَلُوا مِن فَوْقِهِمْ وَمِن تَحْتِ أَرْجُلِهِم ۚ مِّنْهُمْ أُمَّةٌ
مُّقْتَصِدَةٌ ۖ وَكَثِيرٌ مِّنْهُمْ سَاءَ مَا يَعْمَلُونَ
হায়, যদি তারা তাওরাত,
ইনজিল ও অন্যান্য কিতাবগুলো প্রতিষ্ঠিত করতো, যা
তাদের রবের পক্ষ থেকে তাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল! তাহলে তাদের জন্য রিযিক ওপর থেকেও
বর্ষিত হতো এবং নীচে থেকেও উত্থিত হতো। তাদের মধ্যে
কিছু লোক সত্যপন্থী হলেও অধিকাংশই অত্যন্ত খারাপ কাজে লিপ্ত। (সূরা আল
মায়িদাহঃ ৬৬)
তেরঃ
وَلَا
تَسُبُّوا الَّذِينَ يَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ فَيَسُبُّوا اللَّهَ عَدْوًا
بِغَيْرِ عِلْمٍ ۗ كَذَٰلِكَ زَيَّنَّا لِكُلِّ أُمَّةٍ عَمَلَهُمْ ثُمَّ إِلَىٰ
رَبِّهِم مَّرْجِعُهُمْ فَيُنَبِّئُهُم بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
আর (হে ঈমানদারগণ!) এরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে
যাদেরকে ডাকে তোমরা তাদেরকে গালি দিয়ো না। কেননা, এরা শিরক
থেকে আরো খানিকটা অগ্রসর হয়ে অজ্ঞতাবশত যেন আল্লাহকে গালি দিয়ে না বসে। আমি তো এভাবে প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর জন্য তাদের কার্যক্রমকে সুশোভন করে
দিয়েছি। তারপর তাদের ফিরে আসতে হবে তাদের রবের দিকে।
তখন তিনি তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে তাদেরকে জানিয়ে দেবেন। (সূরা আল আনআমঃ
১০৮)
চৌদ্দঃ
وَلِكُلِّ
أُمَّةٍ أَجَلٌ ۖ فَإِذَا جَاءَ أَجَلُهُمْ لَا يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً ۖ وَلَا
يَسْتَقْدِمُونَ
প্রত্যেক জাতির জন্য অবকাশের একটি সময়
নির্দিষ্ট রয়েছে। তারপর যখন কোন জাতির সময় পূর্ণ হয়ে যাবে তখন এক মুহূর্তকালের
জন্যও তাকে বিলম্বিত বা ত্বরান্বিত করা হবে না। (সূরা আল আরাফঃ ৩৪)
পনেরঃ
قَالَ
ادْخُلُوا فِي أُمَمٍ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِكُم مِّنَ الْجِنِّ وَالْإِنسِ فِي
النَّارِ ۖ كُلَّمَا دَخَلَتْ أُمَّةٌ لَّعَنَتْ أُخْتَهَا ۖ حَتَّىٰ إِذَا
ادَّارَكُوا فِيهَا جَمِيعًا قَالَتْ أُخْرَاهُمْ لِأُولَاهُمْ رَبَّنَا
هَـٰؤُلَاءِ أَضَلُّونَا فَآتِهِمْ عَذَابًا ضِعْفًا مِّنَ النَّارِ ۖ قَالَ
لِكُلٍّ ضِعْفٌ وَلَـٰكِن لَّا تَعْلَمُونَ
আল্লাহ বলবেনঃ যাও, তোমরাও সেই জাহান্নামে চলে যাও, যেখানে চলে গেছে
তোমাদের পূর্বের অতিক্রান্ত জ্বীন ও মানবগোষ্ঠী। প্রত্যেকটি দলই নিজের
পূর্ববর্তী দলের প্রতি অভিসম্পাত করতে করতে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। অবশেষে যখন
সবাই সেখানে একত্র হয়ে যাবে তখন পরবর্তী প্রত্যেকটি দল পূর্ববর্তী দলের ব্যাপারে
বলবে, হে আমাদের রব! এরাই আমাদের গোমরাহ করেছে, কাজেই এদেরকে আগুনের দ্বিগুণ শাস্তি দাও। জওয়াবে বলা হবে, প্রত্যেকের জন্য দ্বিগুণ শাস্তিই রয়েছে কিন্তু তোমরা জানো না। (সূরা
আল আরাফঃ ৩৮)
ষোলঃ
وَمِن
قَوْمِ مُوسَىٰ أُمَّةٌ يَهْدُونَ بِالْحَقِّ وَبِهِ يَعْدِلُونَ
মূসার জাতির মধ্যে
এমন একটি দলও ছিল, যারা সত্য অনুযায়ী পথনির্দেশ দিতো এবং
সত্য অনুযায়ী ইনসাফ করতো। (সূরা আল আরাফঃ ১৫৯)
সতেরঃ
وَإِذْ
قَالَتْ أُمَّةٌ مِّنْهُمْ لِمَ تَعِظُونَ قَوْمًا ۙ اللَّهُ مُهْلِكُهُمْ أَوْ
مُعَذِّبُهُمْ عَذَابًا شَدِيدًا ۖ قَالُوا مَعْذِرَةً إِلَىٰ رَبِّكُمْ
وَلَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ
আর তাদের একথাও স্মরণ করিয়ে দাও, যখন তাদের একটি দল অন্য দলকে বলেছিল, “তোমরা এমন
লোকদের উপদেশ দিচ্ছো কেন যাদেরকে আল্লাহ ধ্বংস করবেন বা কঠোর শাস্তি দেবেন?”
জবাবে তারা বলেছিল, “এসব কিছু এ জন্যই করছি
যেন আমরা তোমাদের রবের সামনে নিজেদের ওযর পেশ করতে পারি এবং এ আশায় করছি যে,
হয়তো এ লোকেরা তাঁর নাফরমানী করা ছেড়ে দেবে।” (সূরা আল আরাফঃ
১৬৪)
আঠারোঃ
وَمِمَّنْ
خَلَقْنَا أُمَّةٌ يَهْدُونَ بِالْحَقِّ وَبِهِ يَعْدِلُونَ
আমার সৃষ্টির মধ্যে একটি দল এমনও আছে যে, যথার্থ সত্য অনুযায়ী পথনির্দেশ দেয় এবং সত্য অনুযায়ী বিচার করে। (সূরা
আল আরাফঃ ১৮১)
ঊনিশঃ
وَمَا
كَانَ النَّاسُ إِلَّا أُمَّةً وَاحِدَةً فَاخْتَلَفُوا ۚ وَلَوْلَا كَلِمَةٌ
سَبَقَتْ مِن رَّبِّكَ لَقُضِيَ بَيْنَهُمْ فِيمَا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
শুরুতে সমস্ত মানুষ ছিল একই জাতি।
পরবর্তীকালে তারা বিভিন্ন আকীদা-বিশ্বাস ও মত-পথ তৈরী করে নেয়। আর যদি তোমার রবের পক্ষ থেকে আগেভাগেই একটি কথা স্থিরীকৃত না হতো তাহলো
যে বিষয়ে তারা পরস্পর মতবিরোধ করছে তার মীমাংসা হয়ে যেতো। (সূরা ইউনুসঃ ১৯)
বিশঃ
وَلِكُلِّ
أُمَّةٍ رَّسُولٌ ۖ فَإِذَا جَاءَ رَسُولُهُمْ قُضِيَ بَيْنَهُم بِالْقِسْطِ
وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ
প্রত্যেক উম্মতের জন্য একজন রসূল রয়েছে। যখন কোন উম্মতের কাছে তাদের রসূল এসে যায় তখন পূর্ণ ইনসাফ সহকারে তাদের
বিষয়ের ফায়সালা করে দেয়া হয় এবং তাদের প্রতি সামান্য পরিমাণও জুলুম করা হয় না। (সূরা
ইউনুসঃ ৪৭)
একুশঃ
قُل
لَّا أَمْلِكُ لِنَفْسِي ضَرًّا وَلَا نَفْعًا إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ ۗ لِكُلِّ
أُمَّةٍ أَجَلٌ ۚ إِذَا جَاءَ أَجَلُهُمْ فَلَا يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً ۖ وَلَا
يَسْتَقْدِمُونَ
বলো, “নিজের
লাভ-ক্ষতিও আমার ইখতিয়ার নেই। সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল।” প্রত্যেক জাতির জন্য অবকাশের একটি নির্দিষ্ট সময় আছে, এ সময় পূর্ণ হয়ে গেলে তারা মুহূর্তকালও সামনে পেছনে করতে পারবে না। (সূরা
ইউনুসঃ ৪৯)
বাইশঃ
وَلَوْ
أَنَّ لِكُلِّ نَفْسٍ ظَلَمَتْ مَا فِي الْأَرْضِ لَافْتَدَتْ بِهِ ۗ وَأَسَرُّوا
النَّدَامَةَ لَمَّا رَأَوُا الْعَذَابَ ۖ وَقُضِيَ بَيْنَهُم بِالْقِسْطِ ۚ
وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ
আল্লাহর নাফরমানী করেছে এমন প্রতিটি ব্যক্তির
কাছে যদি সারা দুনিয়ার ধন-দৌলত থাকতো তাহলে সেই আযাব থেকে বাঁচার বিনিময়ে সে তা
দিতে উদ্যত হতো। যখন তারা এ আযাব দেখবে তখন তারা মনে মনে পস্তাতে থাকবে। কিন্তু তাদের মধ্যে পূর্ণ ইনসাফ সহকারে ফায়সালা করা হবে, তাদের প্রতি কোন জুলুম হবে না। শোনো, আকাশ ও
পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব আল্লাহরই। (সূরা ইউনুসঃ ৫৪)
তেইশঃ
وَلَئِنْ
أَخَّرْنَا عَنْهُمُ الْعَذَابَ إِلَىٰ أُمَّةٍ مَّعْدُودَةٍ لَّيَقُولُنَّ مَا
يَحْبِسُهُ ۗ أَلَا يَوْمَ يَأْتِيهِمْ لَيْسَ مَصْرُوفًا عَنْهُمْ وَحَاقَ بِهِم
مَّا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ
আর যদি আমি একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত
তাদের শাস্তি পিছিয়ে দেই তাহলে তারা বলতে থাকে, কোন্
জিনিস শাস্তিটাকে আটকে রেখেছে? শোনো! যেদিন সেই শাস্তির সময়
এসে যাবে সেদিন কারো ফিরানোর প্রচেষ্টা তাকে ফিরাতে পারবে না এবং যা নিয়ে তারা
বিদ্রূপ করছে তা-ই তাদেরকে ঘেরাও করে ফেলবে। (সূরা হুদঃ ০৮)
চব্বিশঃ
وَلَوْ
شَاءَ رَبُّكَ لَجَعَلَ النَّاسَ أُمَّةً وَاحِدَةً ۖ وَلَا يَزَالُونَ
مُخْتَلِفِينَ
অবশ্যই তোমার রব চাইলে সমগ্র মানবজাতিকে একই
গোষ্ঠীভুক্ত করতে পারতেন, কিন্তু এখন তারা বিভিন্ন পথেই চলতে থাকবে।
(সূরা হুদঃ ১১৮)
পঁচিশঃ
وَقَالَ
الَّذِي نَجَا مِنْهُمَا وَادَّكَرَ بَعْدَ أُمَّةٍ أَنَا أُنَبِّئُكُم
بِتَأْوِيلِهِ فَأَرْسِلُونِ
সেই দু’জন কয়েদীর মধ্য থেকে যে বেঁচে গিয়েছিল
এবং দীর্ঘকাল পরে এখন যার মনে পড়েছিল, সে বললো,
“আমি আপনাদের এর তা’বীর বলে দিচ্ছি, আমাকে
একটু (কারাগারে ইউসুফের কাছে) পাঠিয়ে দিন।” (সূরা ইউসুফঃ ৪৫)
ছাব্বিশঃ
كَذَٰلِكَ
أَرْسَلْنَاكَ فِي أُمَّةٍ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهَا أُمَمٌ لِّتَتْلُوَ
عَلَيْهِمُ الَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَهُمْ يَكْفُرُونَ بِالرَّحْمَـٰنِ ۚ
قُلْ هُوَ رَبِّي لَا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ
مَتَابِ
হে মুহাম্মাদ! এহেন মাহাত্ম সহকারে আমি
তোমাকে নবী বানিয়ে পাঠিয়েছি এমন এক জাতির
মধ্যে যার আগে বহু জাতি অতিক্রান্ত হয়ে গেছে, যাতে তোমার
কাছে আমি যে পয়গাম অবতীর্ণ করেছি তা তুমি এদেরকে শুনিয়ে দাও, এমন অবস্থায় যখন এরা নিজেদের পরম দয়াময় আল্লাহকে অস্বীকার করছে। এদেরকে বলে দাও, তিনিই আমার রব, তিনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই, তাঁরই ওপর আমি ভরসা
করেছি এবং তাঁরই কাছে আমাকে ফিরে যেতে হবে। (সূরা আর রা’দঃ ৩০)
সাতাশঃ
مَّا
تَسْبِقُ مِنْ أُمَّةٍ أَجَلَهَا وَمَا يَسْتَأْخِرُونَ
কোন জাতি তার নিজের নির্ধারিত সময়ের পূর্বে
যেমন ধ্বংস হতে পারে না, তেমনি সময় এসে যাওয়ার পরে অব্যাহতিও পেতে
পারে না। (সূরা আল হিজরঃ ০৫)
আটাশঃ
وَلَقَدْ
بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا
الطَّاغُوتَ ۖ فَمِنْهُم مَّنْ هَدَى اللَّهُ وَمِنْهُم مَّنْ حَقَّتْ عَلَيْهِ
الضَّلَالَةُ ۚ فَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَانظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ
الْمُكَذِّبِينَ
প্রত্যেক জাতির মধ্যে আমি একজন রসূল পাঠিয়েছি
এবং তার মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি যে, “আল্লাহর
বন্দেগী করো এবং তাগূতের বন্দেগী পরিহার করো।” এরপর
তাদের মধ্য থেকে কাউকে আল্লাহ সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছেন এবং কারোর ওপর পথভ্রষ্টতা
চেপে বসেছে। তারপর পৃথিবীর বুকে একটু ঘোরাফেরা করে দেখে
নাও যারা সত্যকে মিথ্যা বলেছে তাদের পরিণাম কি হয়েছে। (সূরা আন নাহলঃ ৩৬)
ঊনত্রিশঃ
وَيَوْمَ
نَبْعَثُ مِن كُلِّ أُمَّةٍ شَهِيدًا ثُمَّ لَا يُؤْذَنُ لِلَّذِينَ كَفَرُوا
وَلَا هُمْ يُسْتَعْتَبُونَ
(সেদিন কি ঘটবে, সে ব্যাপারে এদের কি কিছুমাত্র হুঁশও আছে) যেদিন আমি উম্মতের মধ্য থেকে
একজন করে সাক্ষী দাঁড় করাবো, তারপর
কাফেরদের যুক্তি-প্রমাণ ও সাফাই পেশ করার সুযোগও দেয়া হবে না। আর তাদের কাছে তাওবা ও ইসতিগফারেরও দাবী জানানো হবে না। (সূরা আন নাহলঃ
৮৪)
ত্রিশঃ
وَيَوْمَ
نَبْعَثُ فِي كُلِّ أُمَّةٍ شَهِيدًا عَلَيْهِم مِّنْ أَنفُسِهِمْ ۖ وَجِئْنَا
بِكَ شَهِيدًا عَلَىٰ هَـٰؤُلَاءِ ۚ وَنَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ تِبْيَانًا
لِّكُلِّ شَيْءٍ وَهُدًى وَرَحْمَةً وَبُشْرَىٰ لِلْمُسْلِمِينَ
(হে মুহাম্মাদ! এদেরকে সেই দিন সম্পর্কে
হুঁশিয়ার করে দাও) যেদিন আমি প্রত্যেক উম্মাতের মধ্যে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে
একজন সাক্ষী দাঁড় করিয়ে দেবো, যে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে
এবং এদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবার জন্য আমি তোমাকে নিয়ে আসবো। (আর এ সাক্ষ্যের
প্রস্তুতি হিসেবে) আমি এ কিতাব তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যা
সব জিনিস পরিষ্কারভাবে তুলে ধরে এবং যা সঠিক
পথনির্দেশনা, রহমত ও সুসংবাদ বহন করে তাদের জন্য যারা
আনুগত্যের শির নত করে দিয়েছে। (সূরা আন নাহলঃ ৮৯)
একত্রিশঃ
وَلَا
تَكُونُوا كَالَّتِي نَقَضَتْ غَزْلَهَا مِن بَعْدِ قُوَّةٍ أَنكَاثًا
تَتَّخِذُونَ أَيْمَانَكُمْ دَخَلًا بَيْنَكُمْ أَن تَكُونَ أُمَّةٌ هِيَ أَرْبَىٰ
مِنْ أُمَّةٍ ۚ إِنَّمَا يَبْلُوكُمُ اللَّهُ بِهِ ۚ وَلَيُبَيِّنَنَّ لَكُمْ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَا كُنتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ
তোমাদের অবস্থা যেন সেই মহিলাটির মতো না হয়ে
যায় যে নিজ পরিশ্রমে সূতা কাটে এবং তারপর নিজেই তা ছিঁড়ে কুটি কুটি করে ফেলে। তোমরা নিজেদের কসমকে পারস্পরিক ব্যাপারে ধোঁকা ও প্রতারণার হাতিয়ারে পরিণত
করে থাকো, যাতে এক দল অন্য দলের তুলনায় বেশী ফায়দা হাসিল
করতে পারো। অথচ আল্লাহ এ অঙ্গীকারের মাধ্যমে তোমাদেরকে পরীক্ষার মুখোমুখি করেন। আর কিয়ামতের দিন অবশ্যই তিনি তোমাদের সমস্ত মতবিরোধের রহস্য উন্মোচিত করে
দেবেন। (সূরা আন নাহলঃ ৯২)
বত্রিশঃ
وَلَوْ
شَاءَ اللَّهُ لَجَعَلَكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَلَـٰكِن يُضِلُّ مَن يَشَاءُ
وَيَهْدِي مَن يَشَاءُ ۚ وَلَتُسْأَلُنَّ عَمَّا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
যদি (তোমাদের মধ্যে কোন মতবিরোধ না হোক) এটাই
আল্লাহর ইচ্ছা হতো তাহলে তিনি তোমাদের সবাইকে একই উম্মতে পরিণত করতেন। কিন্তু তিনি যাকে চান গোমরাহীর মধ্যে ঠেলে দেন এবং যাকে চান সরল সঠিক পথ
দেখান। আর অবশ্যই তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে তোমাদের
জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (সূরা আন নাহলঃ ৯৩)
তেত্রিশঃ
إِنَّ
إِبْرَاهِيمَ كَانَ أُمَّةً قَانِتًا لِّلَّهِ حَنِيفًا وَلَمْ يَكُ مِنَ
الْمُشْرِكِينَ
প্রকৃতপক্ষে ইবরাহীম নিজেই ছিল একটি পরিপূর্ণ
উম্মত, আল্লাহর হুকুমের অনুগত এবং একনিষ্ঠ। সে কখনো মুশরিক ছিল
না। (সূরা আন নাহলঃ ১২০)
চৌত্রিশঃ
وَكُلَّ
إِنسَانٍ أَلْزَمْنَاهُ طَائِرَهُ فِي عُنُقِهِ ۖ وَنُخْرِجُ لَهُ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ كِتَابًا يَلْقَاهُ مَنشُورًا
প্রত্যেক মানুষের ভাল-মন্দ কাজের নিদর্শন আমি
তার গলায় ঝুলিয়ে রেখেছি এবং কিয়ামতের দিন তার জন্য বের করবো
একটি লিখন, যাকে সে খোলা কিতাবের আকারে পাবে। (সূরা
বনী ইসরাঈলঃ ১৩)
পঁয়ত্রিশঃ
وَلِكُلِّ
أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنسَكًا لِّيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَىٰ مَا رَزَقَهُم مِّن
بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ ۗ فَإِلَـٰهُكُمْ إِلَـٰهٌ وَاحِدٌ فَلَهُ أَسْلِمُوا ۗ
وَبَشِّرِ الْمُخْبِتِينَ
প্রত্যেক উম্মতের জন্য আমি কুরবানীর একটি
নিয়ম ঠিক করে দিয়েছি, যাতে (সে উম্মতের) লোকেরা সে পশুদের ওপর
আল্লাহর নাম নেয় যেগুলো তিনি তাদেরকে দিয়েছেন। (এ বিভিন্ন
নিয়মের উদ্দেশ্য একই) কাজেই তোমাদের ইলাহও সে একজনই এবং তোমরা তাঁরই ফরমানের
অনুগত হয়ে যাও। আর হে নবী! সুসংবাদ দিয়ে দাও বিনয়ের নীতি অবলম্বনকারীদেরকে। (সূরা আল হাজ্জঃ ৩৪)
ছত্রিশঃ
لِّكُلِّ
أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنسَكًا هُمْ نَاسِكُوهُ ۖ فَلَا يُنَازِعُنَّكَ فِي الْأَمْرِ
ۚ وَادْعُ إِلَىٰ رَبِّكَ ۖ إِنَّكَ لَعَلَىٰ هُدًى مُّسْتَقِيمٍ
প্রত্যেক উম্মতের
জন্য আমি একটি ইবাদাতের পদ্ধতি নির্দিষ্ট করেছি,
যা তারা অনুসরণ করে; কাজেই হে মুহাম্মাদ! এ
ব্যাপারে তারা যেন তোমার সাথে ঝগড়া না করে। তুমি
তোমার রবের দিকে দাওয়াত দাও। অবশ্যই তুমি সঠিক সরল পথে আছো। (সূরা আল হাজ্জঃ
৬৭)
সাঁইত্রিশঃ
مَا
تَسْبِقُ مِنْ أُمَّةٍ أَجَلَهَا وَمَا يَسْتَأْخِرُونَ
কোন জাতি তার সময়ের পূর্বে শেষ হয়নি এবং তার
পরে টিকে থাকতে পারেনি। (সূরা আল মুমিনুনঃ ৪৩)
আটত্রিশঃ
ثُمَّ
أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا تَتْرَىٰ ۖ كُلَّ مَا جَاءَ أُمَّةً رَّسُولُهَا كَذَّبُوهُ
ۚ فَأَتْبَعْنَا بَعْضَهُم بَعْضًا وَجَعَلْنَاهُمْ أَحَادِيثَ ۚ فَبُعْدًا
لِّقَوْمٍ لَّا يُؤْمِنُونَ
তারপর আমি একের পর এক নিজের রসূল পাঠিয়েছি।
যে জাতির কাছেই তার রসূল এসেছে সে-ই তার প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছে, আর আমি একেরপর এক জাতিকে ধ্বংস করে গেছি এমনকি তাদেরকে স্রেফ কাহিনীই
বানিয়ে ছেড়েছি,--অভিসম্পাত তাদের প্রতি যারা ঈমান আনে না। (সূরা
আল মুমিনুনঃ ৪৪)
ঊনচল্লিশঃ
وَإِنَّ
هَـٰذِهِ أُمَّتُكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَأَنَا رَبُّكُمْ فَاتَّقُونِ
আর তোমাদের এ উম্মত হচ্ছে একই উম্মত এবং আমি
তোমাদের রব, কাজেই আমাকেই তোমরা ভয় করো। (সূরা আল
মুমিনুনঃ ৫২)
চল্লিশঃ
وَيَوْمَ
نَحْشُرُ مِن كُلِّ أُمَّةٍ فَوْجًا مِّمَّن يُكَذِّبُ بِآيَاتِنَا فَهُمْ
يُوزَعُونَ
আর সেদিনের কথা একবার চিন্তা করো, যেদিন আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্য থেকে এমন সব লোকদের এক একটি দলকে ঘেরাও
করে আনবো যারা আমার আয়াত অস্বীকার করতো। তারপর তাদেরকে (তাদের শ্রেণী অনুসারে
স্তরে স্তরে) বিন্যস্ত করা হবে। (সূরা আন নামলঃ ৮৩)
একচল্লিশঃ
وَلَمَّا
وَرَدَ مَاءَ مَدْيَنَ وَجَدَ عَلَيْهِ أُمَّةً مِّنَ النَّاسِ يَسْقُونَ وَوَجَدَ
مِن دُونِهِمُ امْرَأَتَيْنِ تَذُودَانِ ۖ قَالَ مَا خَطْبُكُمَا ۖ قَالَتَا لَا
نَسْقِي حَتَّىٰ يُصْدِرَ الرِّعَاءُ ۖ وَأَبُونَا شَيْخٌ كَبِيرٌ
আর যখন সে মাদয়ানের কুয়ার কাছে পৌঁছল, সে দেখলো, অনেক লোক তাদের পশুদের পানি পান করাচ্ছে
এবং তাদের থেকে আলাদা হয়ে একদিকে দু’টি মেয়ে নিজেদের পশুগুলো আগলে রাখছে। মূসা
মেয়ে দু’টিকে জিজ্ঞেস করলো, “তোমাদের সমস্যা কি?” তারা বললো, “আমরা আমাদের জানোয়ারগুলোকে পানি পান
করাতে পারি না যতক্ষণ না এ রাখালেরা তাদের জানোয়ারগুলো সরিয়ে নিয়ে যায়, আর আমাদের পিতা একজন অতি বৃদ্ধ ব্যক্তি।” (সূরা আল কাসাসঃ ২৩)
বিয়াল্লিশঃ
وَنَزَعْنَا
مِن كُلِّ أُمَّةٍ شَهِيدًا فَقُلْنَا هَاتُوا بُرْهَانَكُمْ فَعَلِمُوا أَنَّ
الْحَقَّ لِلَّهِ وَضَلَّ عَنْهُم مَّا كَانُوا يَفْتَرُونَ
আর আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্য থেকে একজন
সাক্ষী বের করে আনবো তারপর বলবো, “আনো
এবার তোমাদের প্রমাণগুলো।” সে সময় তারা জানবে, সত্য রয়েছে আল্লাহর কাছে এবং তারা যা কিছু মিথ্যা বানিয়ে রেখেছিল তা সবই
উধাও হয়ে যাবে। (সূরা আল কাসাসঃ ৭৫)
তেতাল্লিশঃ
إِنَّا
أَرْسَلْنَاكَ بِالْحَقِّ بَشِيرًا وَنَذِيرًا ۚ وَإِن مِّنْ أُمَّةٍ إِلَّا خَلَا
فِيهَا نَذِيرٌ
আমি তোমাকে সত্য সহকারে পাঠিয়েছি
সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী বানিয়ে। আর এমন কোন সম্প্রদায় অতিক্রান্ত হয়নি
যার মধ্যে কোন সতর্ককারী আসেনি। (সূরা ফাতিরঃ ২৪)
চুয়াল্লিশঃ
كَذَّبَتْ
قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ وَالْأَحْزَابُ مِن بَعْدِهِمْ ۖ وَهَمَّتْ كُلُّ أُمَّةٍ
بِرَسُولِهِمْ لِيَأْخُذُوهُ ۖ وَجَادَلُوا بِالْبَاطِلِ لِيُدْحِضُوا بِهِ
الْحَقَّ فَأَخَذْتُهُمْ ۖ فَكَيْفَ كَانَ عِقَابِ
এর পূর্বে নূহের (আ) কওম অস্বীকার করেছে এবং
তাদের পরে আরো বহু দল ও গোষ্ঠী এ কাজ করেছে। প্রত্যেক উম্মত তার রসূলকে পাকড়াও
করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা সবাই বাতিলের হাতিয়ারের সাহায্যে হককে অবদমিত
করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি। দেখে নাও, কত কঠিন ছিল আমার শাস্তি। (সূরা আল মুমিনঃ ৫)
পয়তাল্লিশঃ
وَلَوْ
شَاءَ اللَّهُ لَجَعَلَهُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَلَـٰكِن يُدْخِلُ مَن يَشَاءُ فِي
رَحْمَتِهِ ۚ وَالظَّالِمُونَ مَا لَهُم مِّن وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ
আল্লাহ যদি চাইতেন তাহলে এদের সবাইকে এক
উম্মতের অন্তর্ভুক্ত করে দিতেন। কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা তাঁর রহমতের মধ্যে শামিল
করেন। জালেমদের না আছে কোন অভিভাবক না আছে সাহায্যকারী। (সূরা আশ
শুরাঃ ০৮)
ছেচল্লিশঃ
بَلْ
قَالُوا إِنَّا وَجَدْنَا آبَاءَنَا عَلَىٰ أُمَّةٍ وَإِنَّا عَلَىٰ آثَارِهِم
مُّهْتَدُونَ
তা নয়, বরং এরা বলে,
আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে একটি পন্থার ওপর পেয়েছি, আমরা তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলছি। (সূরা আয যুখরূফঃ ২২)
সাতচল্লিশঃ
وَكَذَٰلِكَ
مَا أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ فِي قَرْيَةٍ مِّن نَّذِيرٍ إِلَّا قَالَ
مُتْرَفُوهَا إِنَّا وَجَدْنَا آبَاءَنَا عَلَىٰ أُمَّةٍ وَإِنَّا عَلَىٰ
آثَارِهِم مُّقْتَدُونَ
এভাবে তোমার পূর্বে আমি যে জনপদেই কোন
সতর্ককারীকে পাঠিয়েছি, তাদের স্বচ্ছল লোকেরা একথাই বলেছে, আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে একটি পন্থার অনুসরণ করতে দেখেছি। আমরাও তাদেরই
পদাঙ্ক অনুসরণ করছি। (সূরা আয যুখরূফঃ ২৩)
আটচল্লিশঃ
وَلَوْلَا
أَن يَكُونَ النَّاسُ أُمَّةً وَاحِدَةً لَّجَعَلْنَا لِمَن يَكْفُرُ
بِالرَّحْمَـٰنِ لِبُيُوتِهِمْ سُقُفًا مِّن فِضَّةٍ وَمَعَارِجَ عَلَيْهَا
يَظْهَرُونَ
সমস্ত মানুষ একই পথের অনুসারি হয়ে যাবে যদি
এই আশঙ্কা না থাকতো তাহলে যারা দয়াময় আল্লাহর সাথে কুফরি করে আমি তাদের ঘরের ছাদ। (সূরা আয যুখরূফঃ ৩৩)
ঊনপঞ্চাশঃ
وَتَرَىٰ
كُلَّ أُمَّةٍ جَاثِيَةً ۚ كُلُّ أُمَّةٍ تُدْعَىٰ إِلَىٰ كِتَابِهَا الْيَوْمَ
تُجْزَوْنَ مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
সে সময় তোমরা প্রত্যেক গোষ্ঠীকে নতজানু দেখতে
পাবে। প্রত্যেক গোষ্ঠীকে এসে তার আমলনামা দেখার জন্য আহবান জানানো হবে। তাদের বলা
হবে, তোমরা যেসব কাজ করে এসেছো তোমাদেরকে তার প্রতিদান দেয়া হবে। (সূরা আল জাসিয়াঃ
২৮)
0 Comments