আলোচনা নোট - দেশে দেশে ইসলামী আন্দোলন ও বাংলাদেশ পরিস্থিতি - মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম

 

দেশে দেশে ইসলামী আন্দোলন

দেশে দেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পরিস্থিতি

ইসলামঃ

·      ইসলাম আরবী শব্দ যার অর্থঃ আত্মসমর্পণ করা, কোন কিছু মাথা পেতে নেয়া নিজের ইচ্ছা আর মর্জি অনুযায়ী না চলে আল্লাহর হুকুম মতে চলার জন্য তার নিকট আত্মসমর্পন করার নাম ইসলাম

·      আরবীতে ইসলাম বলতে বুঝাযআনুগত্য ও বাধ্যতা ইসলামের লক্ষ্য আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও তাঁর বাধ্যতা স্বীকার করে নেয়া

·      যিনি তৈরী করেছেন, তিনি চলার জন্য একটা নিয়ম দিয়েছেন সেই নিয়মের নাম ইসলাম

·      মালিকের নিয়ম মানলে শান্তি আসবে-তাই এর নাম ইসলাম

·      মালিকের নিয়মের কাছে আত্ম সমর্পন করতে হয়-মাথা পেতে দিতে হয়, তাই এর নাম ইসলাম

·      ইসলামী আদর্শ কবুলের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে একটা চূক্তিতে আবদ্ধ হতে হয়ঃ

إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَىٰ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُم بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ۚ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ ۖ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِي التَّوْرَاةِ وَالْإِنجِيلِ وَالْقُرْآنِ ۚ وَمَنْ أَوْفَىٰ بِعَهْدِهِ مِنَ اللَّهِ ۚ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِي بَايَعْتُم بِهِ ۚ وَذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ

 প্রকৃত ব্যাপার এই যে, আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের প্রাণ ও ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেনতারা আল্লাহর পথে লড়াই করে এবং মারে ও মরে তাদের প্রতি তাওরাত,ইনজীল ও কুরআনে(জান্নাতের ওয়াদা) আল্লাহর জিম্মায় একটি পাকাপোক্ত ওয়াদা বিশেষআর আল্লাহর চাইতে বেশী নিজের ওয়াদা পূরণকারী আর কে আছে? কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে যে কেনা-বেচা করছো সে জন্য আনন্দ করো এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য। (আত তাওবাহঃ ১১১)

আন্দোলনঃ

·      حركة, হরকত করা-নড়াচড়া করা, MOVEMENT

·      আন্দোলনঃ দোলন থেকে যার উৎপত্তি দোলন মানে নড়াচড়া আন্দোলন মানে নড়াচড়া, অশান্তি, অশৃংখলা, অব্যবস্থাপনা একটি সূদূর প্রসারী লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য সাময়িক নড়াচড়া, অশান্তি, অশৃংখলা, অব্যবস্থাপনা হলো আন্দোলন

·      সাময়িক অশান্তি

·      শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সাময়িক অশান্তি

·      পৃথিবীর ইতিহাস বলছে, যেখানেই শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে, সেখানে এর আগে সাময়িক অশান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে

·      একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা পরিবর্তন করে অন্য ব্যবস্থা কায়েমের জন্য পরিচালিত সামগ্রিক তৎপরতাই আন্দোলন

·      একটা দেশের প্রতিষ্ঠিত সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন ব্যবস্থার প্রবর্তন ও প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরিচালিত সুসংঘবদ্ধ ও সুসংগঠিত প্রচেষ্টার নাম আন্দোলন

ইসলামী আন্দোলন জিনিসটা কি?

·      আপনি আপনার বাড়ীতে ছিলেন হঠাৎ করে কোন এক ঘুর্ণিঝড়ে আপনার সব লন্ডভন্ড আপনি বাড়ী হারিয়ে ফেলে চলে গেলেন দূরদেশেআপনার বাড়ীর এড্রেস আপনার জানা আছে কিন্তু ম্যাপ নাই কিভাবে যাবেন জানেন না

·      এমন অবস্থায় কেউ একজন আপনাকে একটা ম্যাপ দিল সাথে একজন গাইড দিল ম্যাপের মাঝে শুধু রেখা আছে সেই রেখা ধরে আপনি পথ চলা শুরু করলেন কিন্তু পথের মাঝে আছে হাজার প্রতিবন্ধকতা তাই গাইড আপনাকে বাতলে দিল প্রতিবন্ধকতাটা কি? দূর পথ ফাঁড়ি দিতে কি কি সমস্যায় পড়বে? সেই সব সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা সমূহ মাড়িয়ে মঞ্জিলে পৌছতে পারবে পথের মাঝে এমন ঠিকানা পাবে, যা দেখে তুমি তোমার বাড়ীর কথা ভূলে যাবে মনে হবে বাড়ীর চেয়ে পথের ঠিকানায়ই সুখ বেশী-তাই তুমি বাড়ীর কথা ভূলে পথেই ঠিকানা খোলে বসবে এমন অবস্থা থেকে সতর্ক করবে তোমার গাইড তুমি পথের মাঝে এমন সংগী পাবে, যে তোমাকে তোমার বাড়ীতে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা ভূলিয়ে দেবে সেই কুচক্রী থেকে বাঁচিয়ে তোমাকে তোমার পথযাত্রার সম্পর্কে সতর্ক করবে এই গাইড

·      তুমি ছিলে জান্নাতে কোন কারণে তুমি এখন দুনিয়ায় দুনিয়া থেকে জান্নাতে যেতে এখন তোমার সফর পিরিওড তোমার জান্নাতে যাওয়ার জন্য ম্যাপ অব জান্নাহ হলোঃ কুরআন-ذلك الكتاب لا ريب فيه আর গাইড হলেনঃ মুহাম্মদ সা.

لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا

আসলে তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে ছিল একটি উত্তম আদর্শ এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে আল্লাহ‌ ও শেষ দিনের আকাঙ্ক্ষী এবং বেশী করে আল্লাহকে স্মরণ করে। (আল আহযাবঃ ২১)

·      যাত্রা পথে সুখের ঠিকানাঃ

وَاعْلَمُوا أَنَّمَا أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلَادُكُمْ فِتْنَةٌ وَأَنَّ اللَّهَ عِندَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ

এবং জেনে রেখোতোমাদের অর্থ-সম্পদ ও তোমাদের সন্তান-সন্তুতি আসলে পরীক্ষার সামগ্রী আর আল্লাহর কাছে প্রতিদান দেবার জন্য অনেক কিছুই আছে। (আল আনফালঃ ২৮)

·      যাত্রা পথে সংগী-শয়তানঃ

الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ

যে বারবার ফিরে আসেযে মানুষের মনে প্ররোচনা দান করে। (আন নাসঃ ০৫)

ইসলামী আন্দোলনের ইতিহাসঃ

·      আদম আ. থেকে এর শুরু আজ অবধি একই আন্দোলন

·      আদম আ. থেকে একই কর্মসূচী ছিলনা

·      সকলের প্রতি ইসলামী আন্দোলনের কর্মসূচী ছিলঃ আল্লাহর নির্ভেজাল গোলামী এবং আল্লাহর খলিফা হিসাবে দায়িত্ব পালন

·      দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামী আন্দোলনঃ এটা ছিল নূহ, ইব্রাহীম, মুসা, ঈসা এবং মুহাম্মদ সা. এর প্রতি

شَرَعَ لَكُم مِّنَ الدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِ نُوحًا وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰ ۖ أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ ۚ كَبُرَ عَلَى الْمُشْرِكِينَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَيْهِ ۚ اللَّهُ يَجْتَبِي إِلَيْهِ مَن يَشَاءُ وَيَهْدِي إِلَيْهِ مَن يُنِيبُ

তিনি তোমাদের জন্য দ্বীনের সেই সব নিয়ম-কানুন নির্ধারিত করেছেন যার নির্দেশ তিনি নূহকে দিয়েছিলেন এবং (হে মুহাম্মাদ) যা এখন আমি তোমার কাছে অহীর মাধ্যমে পাঠিয়েছি আর যার আদেশ দিয়েছিলাম আমি ইব্রাহীম আ., মূসা আ. ও ঈসাকে আ. তার সাথে তাগিদ করেছিলাম এই বলে যে, এ দ্বীনকে কায়েম করো এবং এ ব্যাপারে পরস্পর ভিন্ন হয়ো না (হে মুহাম্মাদ) এই কথাটিই এসব মুশরিকের কাছে অত্যন্ত অপছন্দনীয় যার দিকে তুমি তাদের আহবান জানাচ্ছো আল্লাহ‌ যাকে ইচ্ছা আপন করে নেন এবং তিনি তাদেরকেই নিজের কাছে আসার পথ দেখান যারা তাঁর প্রতি রুজু করে। (আশ শুরাঃ ১৩)

·      তাদের আন্দোলনের মূল মন্ত্রঃ দুনিয়ার সবকিছু আল্লাহর রঙে রঙিন করাصِبْغَةَ اللَّهِ ۖ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ صِبْغَةً ۖ وَنَحْنُ لَهُ عَابِدُونَ বলোঃ আল্লাহর রঙ ধারণ করো! আর কার রঙ তার চেয়ে ভালো? আমরা তাঁরই ইবাদতকারী (আল বাকারাহঃ ১৩৮)

আল্লাহর রঙে করিয়া রঙিন, সাজাবো এ ধরণীর সকল কিছু-বিলাবো জীবন, অর্থ সম্পদ, রইবোনা পড়ে কাহারো পিছু

রাসূলের যুগে ইসলামী আন্দোলনঃ

·      রাসূল সা. সারা জীবন যে কাজ গুলো করেছেন, তা করার নাম ইসলামী আন্দোলন

·      রাসূল সা. সারা জীবন যে কাজ থেকে বিরত থেকেছেন, তা থেকে বিরত থাকার নাম ইসলামী আন্দোলন

·      রাসূল সা. সারা জীবন যা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছেন, সে জিনিস বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করার নাম ইসলামী আন্দোলন

·      মুহাম্মদ সা. সারা জীবন যা বাস্তবায়িত হতে বাঁধরা সৃষ্টি করেছেন, সে সব জিনিস বাস্তবায়নের বাঁধা প্রদানের নাম ইসলামী আন্দোলন

·      আমরা ইসলামী আন্দোলন করলে, আমাদের আন্দোলন হতে হবে রাসূল সা. এর ইসলামী আন্দোলনের মতো নবী সা. বলেছেনঃ مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ علَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ যে ব্যক্তি এমন কর্ম করল, যার সম্পর্কে আমাদের কোন প্রকার নির্দেশ নেই, তা প্রত্যাখ্যাত। (মুসলিম)

·      রাসূল সা. এর যুগের ইসলামী আন্দোলন ছিল ৫টি কাজের সমন্বয়ে আর কিয়ামত অবধি সে ইসলামী আন্দোলন পরিচালিত হবে, তার মাপকাটি হলো রাসূল সা. এর ইসলামী আন্দোলন তাই তার কাজ হবে ঐ ৫টি আর তা হলোঃ

. দাওয়াত ইলাল্লাহ

·      দাওয়াত ইলাল্লাহ সম্পর্কে কুরআনঃ

. কুরআনের সরাসরি নির্দেশঃ

ادْعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ ۖ وَجَادِلْهُم بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ ۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِ ۖ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ

হে নবী! প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিমত্তা এবং সদুপদেশ সহকারে তোমার রবের পথের দিকে দাওয়াত দাও এবং লোকদের সাথে বিতর্ক করো সর্বোত্তম পদ্ধতিতে তোমার রবই বেশী ভালো জানেন কে তাঁর পথচ্যুত হয়ে আছে এবং সে আছে সঠিক পথে। (আন নাহলঃ ১২৫)

. রাসূলের কাজ ও পরিচয় বুঝাতেঃ

قُلْ هَٰذِهِ سَبِيلِي أَدْعُو إِلَى اللَّهِ

তাদেরকে পরিষ্কার বলে দাওঃ আমার পথতো এটাই, আমি আল্লাহর দিকে ডাকি। (ইউসুফঃ ১০৮)

. নবীর প্রেরণের উদ্দেশ্য বুঝাতেঃ

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا  - وَدَاعِيًا إِلَى اللَّهِ بِإِذْنِهِ وَسِرَاجًا مُّنِيرًا

হে নবী! আমি তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী বানিয়ে, সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী করে আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহ্বানকারীরূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপ হিসেবে। (আল আহযাবঃ ৪৫-৪৬)

. দায়ীর প্রশংসা করেঃ

وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّن دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ

সেই ব্যক্তির কথার চেয়ে আর কার কথা উত্তম হবে যে আল্লাহ‌র দিকে ডাকলো, সৎ কাজ করলো এবং ঘোষণা করলো আমি মুসলমান (হা-মীম-আস সিজদাঃ ৩৩)

. উম্মতে মুহাম্মদীর দায়িত্ব ও কর্তব্য ব্যাখ্যা করেঃ

وَلْتَكُن مِّنكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ ۚ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ

তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক অবশ্যি থাকতে হবে, যারা নেকী ও সৎকর্মশীলতার দিকে আহবান জানাবে, ভালো কাজের নির্দেশ দেবে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে যারা এ দায়িত্ব পালন করবে তারাই সফলকাম হবে (আলে ইমরানাঃ ১০৪)

·      সকল নবীদের দাওয়াতের সুর ও আবেদন একই ধরণের যেমনঃ

. সবাই তাওহীদের দাওযাত দিয়েছেন, গাইরুল্লাহর সার্বভৌমত্ব পরিহারের আহবান করেছেন

. সমাজের খুটিনাটি সমস্যার প্রসংগে না গিয়ে আল্লাহর আইন না থাকার যে সব বড় বড় সমস্যায় মানুষ জর্জরিত, সেগুলোর কড়া সমালোচনা করেছেন

. দাওয়াত কবুল না করার পরিণাম সম্পর্কে দুনিয়া আখেরাতে যা হতে পারে, সে সম্পর্কে সতর্ক ভীতি প্রদার্শণ করেছেন

·      নবীদের দাওয়াতের মেজাজ গভীর ভাবে অনুধাবন ও অনুশীলন করলে বুঝা যায়, সে সময়ের সমাজ ব্যবস্থা বদলের আপোষহীন বিপ্লবী ঘোষনা আর এজন্য প্রতিষ্ঠিতদের সাথে সংঘাত অনিবার্য

. শাহাদাত আলান নাস

·      নবীর পরিচয় তিনি দায়, আবার তিনির অন্য পরিচয় তিনি দাওয়াতের বাস্তব নমূনা, মূর্ত প্রতীক রূপে শাহেদ এবং শহীদ

·      কুরআনের বক্তব্যঃ

إِنَّا أَرْسَلْنَا إِلَيْكُمْ رَسُولًا شَاهِدًا عَلَيْكُمْ كَمَا أَرْسَلْنَا إِلَىٰ فِرْعَوْنَ رَسُولًا

আমি তোমাদের নিকট একজন রাসূল পাঠিয়েছি তোমাদের জন্য সাক্ষী স্বরূপ যেমন ফেরাউনের নিকট একজন রাসূল পাঠিয়ে ছিলাম। (মুজ্জাম্মিলঃ ১৫)

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا

হে নবী! আমি তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী বানিয়ে, সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী করে। (আল আহযাবঃ ৪৫)

وَكَذَٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا لِّتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُونَ الرَّسُولُ عَلَيْكُمْ شَهِيدًا

আর এভাবেই আমি তোমাদেরকে একটি ‘মধ্যপন্থী’ উম্মাতে পরিণত করেছিযাতে তোমরা দুনিয়াবাসীদের ওপর সাক্ষী হতে পারো এবং রাসূল হতে পারেন তোমাদের ওপর সাক্ষী (আল বাকারাহঃ ১৪৩)

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُونُوا قَوَّامِينَ لِلَّهِ شُهَدَاءَ بِالْقِسْطِ

হে ঈমানদারগণ! সত্যের ওপর স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত ও ইনসাফের সাক্ষ্যদাতা হয়ে যাও (আল মায়িদাহঃ ৮)

وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّن كَتَمَ شَهَادَةً عِندَهُ مِنَ اللَّهِ

তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হতে পারেযার কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি সাক্ষ্য রয়েছে এবং সে তা গোপন করে চলে? (আল বাকারাহঃ ১৪০)

·      শাহাদাত মূলত দাওয়াতের বাস্তব রূপ

·      নবী রাসূলরা দুইটিউপাযে দাওয়াতের দায়িত্ব পালন করেছেনঃ

. মৌখিক সাক্ষ্য

. আমলী সাক্ষ্য

·      নবী সা. মৌখিক দাওয়াতের সাথে সাথে শুহাদা আলান নাস এর ভূমিকা পালন করেছেন

·      সাহাবায়ে কিরাম ছিলেন দায়ী ইলাল্লাহর দাওয়াতের বাস্তব নমূনা তাদের নমূনা ব্যাপারে স্বয়ং আল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছেন সূরা ফুরকানের শেষ ও সূরা মুমিনুনের প্রথম রূকুতে

·      ইসলামী আন্দোলনে শাহাদাত আলান নাস এর গুরুত্ব বেশী কেননা, এ ধরণের বাস্তব সাক্ষ্যদানকারী একদল তৈরী হলে পরে আল্লাহর সাহায্য ও জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর কাজের সাফল্য নির্ভর করে

. ক্বিতাল ফী সাবিলিল্লাহ

·      দায়ী যখন আমলী শাহাদাত প্রদানে সক্ষম হয়, তখন দায়ীকে দাওয়াত থেকে বিরত রাখতে, আওয়াজকে স্তব্দ করে দিতে জুলুম নির্যাতন ও লোভ প্রলোভন যখন হার মানে, সমাজের মানুষের উপর যখন দায়ীর দাওয়াত ফেলে নৈতিক প্রভাব

·      কায়েমী স্বার্থবাদীরা তখন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রতিপত্তির কারণে দায়ীকে নিশ্চিহ্ন করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়্

·      মক্কী জিন্দেগীতে প্রতিশোধ নেয়ার সীমিত অনুমতি দেয়া হয়েছে সূরা আন নাহল ও সূরা আশ শুরার মাধ্যমে

·      মাদানী জিন্দেগীতে সূরা হজ্জের মাধ্যমে প্রতিশোধ নেয়ার এবং সূরা মুহাম্মদের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ যুদ্ধের নির্দেশ দেয়া হয় বিধায় সূরা মুহাম্মদের আরেক নাম সূরা কিতাল

·      ইসলামী আন্দোলনে এ সংঘাত অনিবার্যঃ

الَّذِينَ آمَنُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۖ وَالَّذِينَ كَفَرُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ الطَّاغُوتِ فَقَاتِلُوا أَوْلِيَاءَ الشَّيْطَانِ ۖ إِنَّ كَيْدَ الشَّيْطَانِ كَانَ ضَعِيفًا

যারা ঈমানের পথ অবলম্বন করেছে তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে আর যারা কুফরির পথ অবলম্বন করেছে তারা লড়াই করে তাগুতের পথে কাজেই শয়তানের সহযোগীদের সাথে লড়ো এবং নিশ্চিত জেনে রাখো, শয়তানের কৌশল আসলে নিতান্তই দুর্বল। (আন নিসাঃ ৭৬)

·      ইসলামী সমাজ পরিচালনার লোক তৈরী, ঈমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া, আমলী শাহাদাতের মাধ্যমে জনগনের মন জয় এবং তাদের সাথী করতে পারলে আন্দোলনের সংঘর্ষের স্তর অতিক্রম করে সাফল্যের দ্বার প্রান্তে উপনীতি হতে হয়

·      কিতাল ফি সাবিলিল্লাহ সম্পর্কে কুরআনঃ

وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ لِلَّهِ ۖ فَإِنِ انتَهَوْا فَلَا عُدْوَانَ إِلَّا عَلَى الظَّالِمِينَ

তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকো যতক্ষণ না ফিতনা নির্মূল হয়ে যায় এবং দীন একমাত্র আল্লাহর জন্য নিদিষ্ট হয়ে যায় তারপর যদি তারা বিরত হয় তাহলে জেনে রাখো যালেমদের ছাড়া আর করোর ওপর হস্তক্ষেপ করা বৈধ নয়(আল বাকারাহঃ ১৯৩)

وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ ۚ فَإِنِ انتَهَوْا فَإِنَّ اللَّهَ بِمَا يَعْمَلُونَ بَصِيرٌ

হে ঈমানদারগণ! এ কাফেরদের সাথে এমন যুদ্ধ করো যেন গোমরাহী ও বিশৃংখলা নির্মূল হয়ে যায় এবং দীন পুরোপুরি আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট হয়ে যায়। (আল আনফালঃ ৩৯)

قَاتِلُوا الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَا بِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَلَا يُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَلَا يَدِينُونَ دِينَ الْحَقِّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ حَتَّىٰ يُعْطُوا الْجِزْيَةَ عَن يَدٍ وَهُمْ صَاغِرُونَ

আহলি কিতাবদের মধ্য থেকে যারা আল্লাহ ও পরকালের ঈমান আনে না যা কিছু আল্লাহ ও তার রাসূল গণ্য করেছেন তাকে হারাম করো না এবং সত্য দীনকে নিজেদের দীনে পরিণত করে না, তাদের সাথে যুদ্ধ করো যে পর্যন্ত না তারা নিজের হাতে জিযিয়া দেয় ও পদানত হয়ে থাকে। (আত তাওবাহঃ ২৯)

إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَىٰ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُم بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ۚ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ ۖ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِي التَّوْرَاةِ وَالْإِنجِيلِ وَالْقُرْآنِ ۚ وَمَنْ أَوْفَىٰ بِعَهْدِهِ مِنَ اللَّهِ ۚ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِي بَايَعْتُم بِهِ ۚ وَذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ

প্রকৃত ব্যাপার এই যে, আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের প্রাণ ও ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে এবং মারে ও মরে তাদের প্রতি তাওরাত,ইনজীল ও কুরআনে(জান্নাতের ওয়াদা) আল্লাহর জিম্মায় একটি পাকাপোক্ত ওয়াদা বিশেষ আর আল্লাহর চাইতে বেশী নিজের ওয়াদা পূরণকারী আর কে আছে? কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে যে কেনা-বেচা করছো সে জন্য আনন্দ করো এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য। (আত তাওবাহঃ ১১১)

·      কেতাল ফি সাবিলিল্লাহ আল কুরআনের ইক্বামতে দীনের একটি পরিভাষা এটি আল্লাহ কর্তৃক নির্দেশিত দ্বীনকে বিজয়ী আদর্শ হিসাবে প্রতিষ্ঠা ও যাবতীয় ফেতনা ফাসাদের মূলোৎপাটনের জন্য

. ইক্বামাতে দ্বীন

·      ইকামাতে দ্বীন অর্থ দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টা আর দ্বীন কাযেম মানে কোন জনপদে দ্বীন ইসলাম বিজয়ী আদর্শ হিসাবে প্রতিষ্ঠা হওয়া দ্বীন পূর্ণ অনুসরণে কোন বাঁধা না থাকে

·      যেখানেকুরআনের আইন কায়েম নাই, সেখানে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আইনের কারণে অনেক বিষয় আমল করা সম্ভব হয়না

·      শিক্ষা ব্যবস্থা ইসলাম বিরোধী আদর্শ শিখালে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার মন হয়না

·      যারা সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করেন, তারা ইসলামী আদর্শের বিরোধী হলে সে সমাজের মানুষ ইসলাম অনুসরণের সুযোগ পায় না

·      ব্যক্তি জীবনে ব্যক্তিগত ভাবে দ্বীন যতটুকু মানা হয়, তা পরিপূর্ণ দ্বীনের তুলনায় কিছুই নয়

·      ব্যক্তিগত ভাবে সামগ্রিক ও পরিপূর্ণ দ্বীন তো দূরের কথা আনুষ্ঠানিক ইবাদত গুলোও করা সম্ভব নয় যেমনঃ

o  নামায কায়েম হয় না, পড়া হয়

o  যাকাত আদায় করা হয় না

o  রোযার পরিশে হয়না রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ছাড়া

o  রাষ্ট্রীয় বাধ্যবাধকতার কারণে হজ্জের সুযোগ হয়না

o  সমাজ জীবনের বিভিন্ন পর্যায় আল্লাহর আনুগত্য করা সম্ভব হয়না

o  অর্থনীতিতে সুদ মুক্ত থাকা যায়না

o  সমাজ জীবনের বেহায়াপনার জেনা চূরি থেকে বাঁচা সম্ভব হয়না

o  দ্বীন এসেছে আল্লাহ পক্ষ থেকে কায়েম হবার জন্য যেখানে দ্বীন আনুষ্ঠানিক সামগ্রিক দিক বিভাগে আমল করা যায়, সেখানেই কেবল দ্বীন কায়েম আছে বলে মনে করতে হবে

o  নবী রাসূলের দায়িত্ব ছিল দ্বীন কায়েম করা সূরা আশ শুরাঃ ১৩

شَرَعَ لَكُم مِّنَ الدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِ نُوحًا وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰ ۖ أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ ۚ كَبُرَ عَلَى الْمُشْرِكِينَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَيْهِ ۚ اللَّهُ يَجْتَبِي إِلَيْهِ مَن يَشَاءُ وَيَهْدِي إِلَيْهِ مَن يُنِيبُ

তিনি তোমাদের জন্য দ্বীনের সেই সব নিয়ম-কানুন নির্ধারিত করেছেন যার নির্দেশ তিনি নূহকে দিয়েছিলেন এবং (হে মুহাম্মাদ) যা এখন আমি তোমার কাছে অহীর মাধ্যমে পাঠিয়েছি আর যার আদেশ দিয়েছিলাম আমি ইব্রাহীম আ., মূসা আ. ও ঈসাকে আ. তার সাথে তাগিদ করেছিলাম এই বলে যে, এ দ্বীনকে কায়েম করো এবং এ ব্যাপারে পরস্পর ভিন্ন হয়ো না (হে মুহাম্মাদ) এই কথাটিই এসব মুশরিকের কাছে অত্যন্ত অপছন্দনীয় যার দিকে তুমি তাদের আহবান জানাচ্ছো আল্লাহ‌ যাকে ইচ্ছা আপন করে নেন এবং তিনি তাদেরকেই নিজের কাছে আসার পথ দেখান যারা তাঁর প্রতি রুজু করে। (আশ শুরাঃ ১৩)

·      এভাবে দ্বীন কায়েমের চূড়ান্ত প্রচেষ্টা চালানোই ইসলামী আন্দোলনেরঃ

. জাগতিক লক্ষ্য

. আখেরাতের লক্ষ্য হলোঃ আল্লাহর সন্তুষ্ঠি নাজাত

. আমর বিল মারুফ ওয়া নাহী আনিল মুনকার

·      সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ দেয়ার পর্যায়ঃ

·      . সাধারণ ভাবে গোটা উম্মতে মুহাম্মদীর দায়িত্ব

·      . সরকারী প্রশাসনের মাধ্যমে এ কাজ আনজমা দেয়া শরীয়াতের প্রধান স্পিরিট

·      উপরোক্ত সবকটি কাজের সমষ্টির নাম ইসলামী আন্দোলন

ইসলামী আন্দোলনের মুজাস্সাম নমূনা হচ্ছেন নবী মুহাম্মদ সা.

·      ইসলামী আন্দোলনের মুজাস্সাম নমূনা হলেন আমাদের নবী সা. কুরআনে বলা হয়েছেঃ

لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ ٱللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌۭ لِّمَن كَانَ يَرْجُوا۟ ٱللَّهَ وَٱلْيَوْمَ ٱلْـَٔاخِرَ وَذَكَرَ ٱللَّهَ كَثِيرًۭا

আসলে তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে ছিল একটি উত্তম আদর্শ এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে আল্লাহ‌ ও শেষ দিনের আকাঙ্ক্ষী এবং বেশী করে আল্লাহকে স্মরণ করে। (আল আহযাবঃ ২১)

·      নবী মুহাম্মদ সা. সারা জীবন যে কাজ করেছেন, তা করার নাম ইসলামী আন্দোলন।

·      নবী মুহাম্মদ সা. সারা জীবন যে কাজ থেকে বিরত থেকেছেন, তা থেকে বিরত থাকার নাম ইসলামী আন্দোলন।

·      নবী মুহাম্মদ সা. সারা জীবন যা বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করেছেন, সে জিনিস বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করার নাম ইসলামী আন্দোলন।

·      নবী মুহাম্মদ সা. সারা জীবন যা বাস্তবায়িত হতে বাঁধার সৃষ্টি করেছেন, সে সব জিনিস বাস্তবায়নের বাঁধা প্রদানের নাম ইসলামী আন্দোলন।

·      ইতিপূর্বে বলা হয়েছে, আমারা ইসলামী আন্দোলন করলে, আমাদের আন্দোলন হতে হবে রাসূল সা. এর ইসলামী আন্দোলনের মতো। নবী সা. বলেছেনঃ مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ علَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ যে ব্যক্তি এমন কর্ম করল, যার সম্পর্কে আমাদের কোন প্রকার নির্দেশ নেই, তা প্রত্যাখ্যাত। (মুসলিম)

·      অন্য যারা ইসলামী আন্দোলন করেন বা ইসলাম করেন, তাদের ইসলাম আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। সত্যিকার ইসলাম হচ্ছে, মানুষের সামগ্রীক জীবনের আল্লাহর আনুগত্য  ও রাসূল সা.এর অনুসরণ।

ইসলামী আন্দোলনের জাগতিক লক্ষ্য ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠাঃ

·      ইসলামী হুকুমাতকে যদি আমরা একটি সুরম্য প্রাসাদের সাথে তুলনা করি, তাহলেই ইসলামী আন্দোলনের জন্য কতটুকু ত্যাগ দরকার তা আমাদের নিকট পরিষ্কা হয়ে যায়।

·      একটি বিল্ডিং-এ

o  যেখানে আমরা লিফটে আরোহন করলাম, তার নাম গ্রাউন্ট ফ্লোর।

o  কিন্তু আমাদের জেনে রাখা ভাল যে, গ্রাউন্ডের নিচে একটি আন্ডার গ্রাউন্ড ফ্লোর আছে, যা এই পর্যন্ত পানি, বিজলী, টেলিফোন সরবরাহ করছে। কিন্তু আমরা কখনও তার সৌন্দর্য বা শক্তি দেখতেছিনা বা সে দেখাতে পারছেনা।

o  এরও নিচে হাজার হাজার ইট কনক্রিট হয়ে চির জীবনের জন্য দাফন হয়ে পড়ে থেকে এই বিল্ডিং এর নির্মাণ আর স্থীতিশীলতার জন্য কাজ করছে, যারা তাদের কর্ম ও ত্যাগের বর্ণনা করতে পারবেনা। আর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েই তারা ত্যাগ করেছে।

·      ইসলামী আন্দোলনে তাঁর কর্মীদের ত্যাগ হচ্ছে ইসলামী আন্দোলনের চালিকা শক্তি এবং সফলতার চাবিকাঠি।

আল্লাহ কেন পরীক্ষা করেন?

·      যারা সদস্য হন, তারা মূলত ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার কঠিন বোঝা মাথায় নেন।

·      যাদের উপর খেলাফতের দায়িত্ব বর্তায়, তারা হন সীমাহীন ক্ষমতার অধিকারী।

·      ক্ষমতাসীনদের হাতে থাকে-দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, জনগনের উপর যুলুম, শোষণ ও নির্যাতন চালানোর সুযোগ।

·      তাই ক্ষমতার অধিকারীদের ক্ষমতা প্রদানের আগেই পরীক্ষা করা হয়।

·      নবী সা. এবং তার সাথীদের ক্ষমতা প্রদানের আগেই পরীক্ষা করা হয়েছে।

·      সাহাবায়ে কিরামের সর্বশেষ পরীক্ষা ছিল দুনিয়ার সকল সুযোগ সুবিধা ত্যাগ করে নিঃস্ব হওয়ার পরীক্ষা তথা হিজরত।

·      মানুষ সৃষ্টি করা হয়েছে খলিফার দায়িত্ব পালনের জন্য। তাই সে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজন একদল খাঁটি লোক। যারা দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকল বাঁধা ও প্রতিবন্ধকতায় সর্বোচ্চ ত্যাগ প্রদর্শন করে নীতি ও নৈতিকতার মাধ্যমে ঠিকে থাকবে। অপর দিকে দ্বীন প্রতিষ্ঠার পর সকল লোভ লালসার সামনে নিজেকে সংযত রাখবে। আর এ জন্য প্রয়োজন পরীক্ষা।

·      দেশের একজন সুনাগরিক হিসাবে দায়িত্ব পালন করার জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা নেয়া হয়।

·      ঈমান আনছি বললেই পুরষ্কার দেয়া ঠিক নয়, প্রয়োজন পরীক্ষার। তাই আল্লাহ বলেছেনঃ

أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُواْ الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَأْتِكُم مَّثَلُ الَّذِينَ خَلَوْاْ مِن قَبْلِكُم مَّسَّتْهُمُ الْبَأْسَاء وَالضَّرَّاء وَزُلْزِلُواْ حَتَّى يَقُولَ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ مَعَهُ مَتَى نَصْرُ اللّهِ أَلا إِنَّ نَصْرَ اللّهِ قَرِيبٌ

তোমরা কি মনে করেছ যে, তোমরা (অতি সহজেই) জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ এখনও তোমাদের উপর (সেরূপ বিপদ-আপদ) আসেনি, তোমাদের পূর্বে যারা অতীত হয়ে গেছে, তাদের অনুরূপ। এসেছিল তাদের উপর দারুন অভাব-অনটন ও দুঃখ-ক্লেশ এবং তারা আতংকিত হয়েছিল। এমনকি রাসূল এবং তাঁর সাথীরা (আর্তনাদ করে) বললেনঃ আল্লাহর সাহায্য কখন আসেব? তোমরা শুনে নাও, নিঃসন্দেহে আল্লাহর সাহায্য অতি সন্নিকটে। (আল বাকারাহঃ ২১৪)

أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُواْ الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللّهُ الَّذِينَ جَاهَدُواْ مِنكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّابِرِينَ

তোমরা কি ধারণা করেছো যে, তোমরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি যেম তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্য্যশীল। (আলে ইমরানঃ ১৪২)

أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تُتْرَكُواْ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللّهُ الَّذِينَ جَاهَدُواْ مِنكُمْ وَلَمْ يَتَّخِذُواْ مِن دُونِ اللّهِ وَلاَ رَسُولِهِ وَلاَ الْمُؤْمِنِينَ وَلِيجَةً وَاللّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ

তোমরা কি মনে করো যে, তোমাদের ছেড়ে দেয়া হবে এমনি, যতক্ষণ না আল্লাহ জেনে নেবেন তোমাদের কে যুদ্ধ করেছে এবং  কে আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুসলমানদের ব্যতিত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করা থেকে বিরত রয়েছে। আর তোমরা যা করো, সে বিষয়ে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত(আত তাওবাহঃ ১৬)

الم ، أَحَسِبَ النَّاسُ أَن يُتْرَكُوا أَن يَقُولُوا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ، وَلَقَدْ فَتَنَّا الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَلَيَعْلَمَنَّ اللَّهُ الَّذِينَ صَدَقُوا وَلَيَعْلَمَنَّ الْكَاذِبِينَ،

আলিম-লাম-মীম  লোকেরা কি মনে করে রেখেছে, “আমরা ঈমান এনেছি” কেবলমাত্র একথাটুকু বললেই তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে, আর পরীক্ষা করা হবে না? অথচ আমি তাদের পূর্ববর্তীদের সবাইকে পরীক্ষা করে নিয়েছি আল্লাহ অবশ্যই দেখবেন কে সত্যবাদী এবং কে মিথ্যুক (আল আনকাবুতঃ ১-৩)

পরীক্ষার পদ্ধতি হবেঃ

১. বাতিলের পক্ষ থেকে ভয় দেখানো হবে।

২. হালাল পথে চলার ফলে দারিদ্র আসবে।

৩. জান মালের ক্ষতির কারণ ঘটবে। আল্লাহ বলছেনঃ

وَلَنَبْلُوَنَّكُم بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ ۗ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ

আর আমরা অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করবো, কিছু ভয় দ্বারা, ক্ষুধা দ্বারা, আর মাল সম্পত্তি, প্রাণ ও ফসলের ক্ষতি সাধন দ্বারা। আর হে নবী, সবরকারীদের সু-সংবাদ দিন।” (আল বাকারাহঃ ১৫৫))

·      রুগে মৃত্যুর চেয়ে লড়াকুর মৃত্যু ভাল। টিপু সুলতাল বলেছেনঃ “শিয়ালের মত হাজার বছর বেঁচে থাকার চেয়ে সিংহের মত ১মিনিট বেঁচে থাকাই অনেক শ্রেয়।”

ইসলামী আন্দোলন দেশে

মিশরঃ

·      জামাল আবু নাসের ও সাইয়েদ (কুতুব-কুত্তার সাথে কুত্তা কি ব্যবহার করছে)

·      ইখওয়ান নেতৃবৃন্দ-কারাগারে ফাঁসি এবং তাদের বক্তব্য।

·      মিশরের বর্তমান অবস্থা।

·      একজন মা, যার সন্তান শহীদ হয়েছে। সে তার অপর সন্তানদের নিয়ে এসে নেতৃবৃন্দের কাছে সপে দিয়েছে।

·      রাবিয়া স্কয়ারে মারা তাদের পুরো পরিবার নিয়ে এসেছে।

ইরানঃ

·      অবরোধ-ইমাম খোমেনী।

·      সাগরের ঢেউয়ের মতো মিছিল।

·      ১ম, ২য় ও তৃতীয় সারির নেতাদের শহীদ করা হয়েছে।

·      ৪র্থ সারির নেতারা এখন সফল বিপ্লবে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

তুরস্কঃ

·      ১৮৭৭ সালে জন্ম বাদিউজ্জামান নুরসী।

·      ১৯২২ সালে কামাল আতাতূর্ক ক্ষমতা গ্রহণ করেন। ১৯২৪ সালে উসমানী খেলাফত বিলুপ্ত করে ধর্মনিপপেক্ষতাবাদের ছদ্মাবরণে নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠা করেন।

·      কামাল পাশা পর্দা বিলুপ্ত করেন, সহ শিক্ষা চালু করেন, ইসলামী শিক্ষা বন্ধ করেন, আযান নিষিদ্ধ করেন, আরবী বর্ণমালা বাদ দিয়ে ল্যাটিন বর্ণমালা চালু করেন, পাগড়ি টুপি নিষিদ্ধ করে হ্যাট পরিধান চালু করেন, সালাম নিষিদ্ধ করে গুড মর্নি এ চলে যান। রাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে রাজনীতি ঢুকিয়ে পুরো সেনা বাহিনী অফিসারদের মস্তিস্ককে নাস্তিক বানিয়ে দেন।

·      এই সব কর্মকান্ডের তীব্র বিরুধীতা করে আন্দোলন গড়ে তুলেন বদিউজ্জামান নুরসী।

·      তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৬০ সালে কারাগারেই তার মৃত্যু হয়।

·      সরকার তার লাশ কবর থেকে তুলে গিয়ে গায়েব করে।

·      শেখ নুরসীর আন্দোলন বসে থাকেনি।

·      তুরস্কের বর্তমান অবস্থা।

·      বারবার দেশের মানুষ ইসলামের পক্ষে মতামত দিয়েছে, আর সেনা বাহিনী তাদের বরখাস্ত করেছে।

·      হিকমাতের সাথে এগিয়ে চলেছে এবং আধুনিক তুরস্ক উপহার দিয়েছে।

ফিলিস্তিনঃ

·      সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে বাহির থেকে এসে ইহুদীরা ফিলিস্তিন দখল করে।

·      পবিত্র মসজিদ মসজিদুল আকসার দেশ দখন করে নেয়।

·      প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস এগিয়ে চলছে। বিশে^র উদিয়মান পরাশক্তিকে বার বার শিক্ষা দিয়েছে।

·      ফিলিস্তিনীরা ১০০ শিক্ষিত।

·      হামলার পর মাত্র ৫ মিনিটে এম্বুলেন্স পৌছে।

·      শেখ ইয়াসিনের শাহাদাতের রক্ত একদিন কথা বলবে।

·      শেখ মিশআলের নেতৃত্ব রক্তাক্ত জনপদ ফিলিস্তিনের হামাদ একদিন তেলাবিবে কালেমার পতাকা উড়াবে ইনশা আল্লাহ।

বাংলাদেশঃ

শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা

মৃত্যুদন্ড র্কাযকর : ১২ ডিসেম্বর ২০১৩ রাত ১০টা ১ মিনিট

আব্দুল কাদের মোল্লা তার ফাঁসির রায় শুনে বলেছিলেনঃ

আমি আজীবন শহীদি মৃত্যু কামনা করেছি। অনেক আগে ছাত্রজীবনে শহীদ সাইয়েদ কুতুবের শাহাদাতের ইতিহাস বলতে গিয়ে অধ্যাপক গোলাম আযম আমার গলায় হাত রেখে স্নেহের সাথে বলেছিলেন, একদিন এই ফাঁসির দড়ি তোমার গলায়ও পড়তে পারে।

আইনজীবি তাজুল ইসলামঃ

আমার শাহাদাতের পর যেন ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা চরম ধৈর্যের ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে আমার রক্তকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজে লাগায়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

·      ১১ ই মার্চ ১৯৮১: রাজশাহীতে শাব্বির হামীদ আইয়ুব জব্বার, ইটের উপর মাথা রেখে আরেক ইট দিয়ে মাথা চূর্ণ বিচূর্ণ করা হয়।

কুরআন দিবস

·      ১১ ই মে ১৯৮৫: চাপাই নবাবগঞ্জেঃ গুলিতে আহতদের উপর গাড়ী থামিয়ে আবার হামলা ও নির্যাতন করা হয়। শহিদ হনঃ আব্দুল মতিন, রশিদুল হক, শীষ মুহাম্মদ, মুহাম্মদ সেলিম।

-          শহীদ আব্দুল মতিনঃ ”ঈমান নিয়ে যেন দুনিয়ায় বেচে থাকতে পারি।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

·      ১৫ জানুয়ারী ১৯৮৮, আইনুল হক। পত্রিকার খবর দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে গমন, ২১দিন আটকিয়ে রেখে অর্ধাহারে অনাহারে নির্যাতন। অতঃপর নিখুজ।

চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

·      শাহাদাতঃ ১৪ই ফেব্রুয়ারী ১৯৮৬

-          শহীদ জাফর জাহাঙীরঃ “ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষে জালিম স্বৈরাচার সরকারের একটি বুলেট আমার প্রাণের চেয়েও প্রিয়”।

-          শহীদ বাকী উল্লাহঃ “মা আমার জন্য চিন্তা করবেন না, আমি যদি শহীদ হই তাহলে হাজার হাজার ইসলামী আন্দোলনের মুজাহিদ আমার লাশ নিয়ে আপনার কাছে আসবে।”

চট্টগ্রাম

·      ১৪ই ফেব্রুয়ারী ১৯৮৭, শাহাদাত আমীর হোসাঈন ও আব্দুর রহীম।

-          মায়ের উদ্দেশে আমীর হোসাঈন লিখেনঃ “আমার সাথে আর যদি দেখা না হয় এবং যদি আমি শহীদ হই, তাহলে কেঁদোনা মা, এবং আল হামদুলিল্লাহ বলো। কিয়ামতের দিন তোমার সাথে আমার দেখা হবে।”

ফটিকছড়ি ডিগ্রি কলেজ

·      ছাত্র ছিলেন শহীদ কুতুব উদ্দিন। তিনি বারবার বলতেনঃ “আমি শহীদ হলে আমার লাশ খোঁজে পাওয়া যাবেনা”, ১০/০১/১৯৯৩ সালে মুজিববাদী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। আর তাকে পাওয়া যায়নি।

শহীদ রবিউল ইসলাম

·       রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। শাহাদাতের ২ দিন পূর্বে তার মাকে লিখেছিলেন “আমি শহীদ হলে তুমি কেঁদো না মা, তোমার সাথে আমার দেখা হবে জান্নাতের সিঁড়িতে”। শাহাদাতের সেই আকাংখা আল্লাহ কুবুল করে নিলেন, ৬ফেব্র“য়ারী ১৯৯৩ সালে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের আঘাতে শাহাদাত বরণ করলেন।

শহীদ মুস্তাফিজুর রাহমান

·      যার তামান্না ছিল শাহাদাতের, বললেনঃ “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি কেউ শহীদ হয়, তাহলে আমি মুস্তাফিজই আগে শহীদ হবো।” তার এ তামান্না কবুল হয়ে গেল-শাহাদাত বরণ করলেন -১২/০২/১৯৯৫, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।

শহীদ আব্দুল করীম

·      ৮ ডিসেম্বর ১৯৯৫ এর গভীর রাতে শ্বাসরুদ্ধ করে সন্ত্রাসীরা তাকে শহীদ করে। শাহাদাত বরণ করেন শাহজালালের পূণ্যভূমি সিলেটে। তিনি ছিলেন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সদস্য। শাহাদাতের আগে লিখেছিলেন “স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, শাহাদাতই আমার কাম্য। মা, আমি যদি শহীদ হয়ে যাই, তুমি কেঁদো না, তুমি হবে শহীদের গর্বিত মা”।

শহীদ আলমাছ মিয়া

·      ০৯/১২/২০০৩, মৌলভী বাজার সরকারী কলেজে।

শহীদ মাহফুজুল হক

·      ৬ মাসের শিশু সন্তান “জুলফিকার"কে রেখে শাহাদাত শহীদ মাহফুজুল হকের ১৯৮৬ সালের ২৮শে জানুয়ারী। কিরিছ রামদা হকিষ্টিক দিয়ে হামলা হয় থানার মাত্র ২০০ গজের মধ্যে রাঙ্গুনিয়ায়। আজ তার এতিম শিশুর বয়স ২১ বছর।

(উপরের বিবরণ গুলো কোন এক সময়ে আলোচনার নোটে সংযুক্ত করা হয়েছে। সময় ও পরিস্থিতির পরিবর্তনে আলোচনার অডিয়েন্স-এর ধরণে অনুযায়ী ঘটনা গুলো নিজের মতো করে উপস্থাপন করতে হবে)

পরীক্ষার ব্যাপারে সদস্য ভাইদের দৃষ্টি আকর্ষণীঃ

১.   যখন পরীক্ষা আসে তখন সচেতন সদস্যরা টের পান এবং সাবধান হয়ে বিপদ মুসিবত ও কঠিন বাধা ও সমস্যাকে পরীক্ষা মনে করেই সবরের সাথে সদস্যের মান রক্ষার চেষ্টা করে। আল্লাহর নিকট তাওফিক কামনা করে।

২.  যারা সচেতন না, তারা বিপদ মুসিবতকে দ্বীনের কাজ না করার অজুহাত  বা বাহানা মনে করে। তাদের মান কমতে থাকে/ পরীক্ষায় ফেল করে।

৩.  আল্লাহ যখন কাউকে দ্বীনের পথে চলতে সকল বাঁধা দুর করে সামনে আগাবার তাওফীক দেন, তখন বুঝতে হবে যে, তাকে আল্লাহ দ্বীনের কাজের জন্য বাছাই করেছেন।

৪.  আল্লাহর দেয়া পরীক্ষায় যখন কেউ ফেল করে, ধৈর্য  ও সাহসের অভাবে কঠিন পথে চলতে হিম্মত হারা হয়ে যায়, তখন বুঝতে হবে সে ছাটাইয়ের মাঝে পড়ে গেছে।


অন্যান্য বিষয়ে আমার আলোচনার নোট গুলো পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

Post a Comment

0 Comments