এমাজ উদ্দিন সাহেবকে একজন জামায়াত কর্মীর নসিহত-০১ – মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম


মুহাম্মদ নজরুল ইসলামঃঃ আমাদের মুহতারাম এমাজ উদ্দিন সাহেব জামায়াতে ইসলামীকে কিছু নসিহত প্রদান করেছেন, যা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এজন চতূর্থ গ্রেডের জামায়াত কর্মী হিসাবে খবরটি আমাকে একটু নাড়া দিয়েছে।
খবরের সার কথাঃ জাতীয় ঐক্যপ্রচেষ্টায় প্রতিবন্ধক জামায়াতে ইসলামীকে মুক্তিযুদ্ধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা বা জাতির বৃহত্তম স্বার্থে পাশে সরে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ড. এমাজউদ্দীন আহমদ।
তাকে খবরে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবি বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে এবং আমার মনে হয় এব্যাপারে জাতীয় ঐক্যমতও রয়েছে। আমার জানামতে পৃথিবীতে একটি লোকও একথার সাথে দ্বিমত পোষন করবেনা যে, তিনি বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবি নন। কিন্তু তার বুদ্ধি ইদানিং হ্রাস পেয়েছে কিনা এ বিতর্কে না গিয়ে শুধু বলবো, লোকে বলে মানুষের বয়স বাড়লে নাকি উল্টাপাল্টা অনেক কিছু বলে। তিনি সে ধরণের কিছু করছেন কি না তা বোধ গম্য নয়। কারণ আমার কাছে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো পরিস্কার নয়। যেমনঃ
১. জামায়াতে ইসলামী কি দরখাস্ত দিয়ে জোটে নাম লিখিয়ে ছিল, না জামায়াতে ইসলামী বিএনপির মতো একটি দল হিসাবে সমান অংশীদারিত্ব নিয়ে জোটের রাজনীতি শুরু করেছিল।
২. জামায়াতে ইসলামী কি কোন ধরণের কোন বৈঠকে কড়জোরে নিবেদন করেছিল যে, তাদেরকে জোটে রাখতেই হবে-নাহলে তাদের অবস্থা সাড়ে ১২টা বেঁজে যাবে।
৩. জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে যে সীমাহীন অত্যাচার চালানো হয়েছিল, তার প্রতিবিধান কল্পে কখনো কি জামায়াতকে সহযোগিতা করার জন্য বিএনপির দারস্ত হয়েছিল।
৪. জামায়াতের নেতাদের ফাঁসি হওয়ার পর বিএনপি যেভাবে মুখে কুলুপ দিয়েছিল, তাতে করে জামায়াত কোন ধরণের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলো।
৫. বিগত কয়েক বছরের আন্দোলনের ইতিহাসে কখনো কি এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, জামায়াত বিএনপির উপর নির্ভরশীল।
৬. বিগত নির্বাচন সমূহের কোন একটিতে বা কোন একটি এলাকায় কি বিএনপি জামায়াতকে নূন্যমত ছাড় দিয়েছে?
৭. এই দীর্ঘ পথপরিক্রমায় কখনো কি জামায়াতে ইসলামী এই সম্মানিত বুদ্ধিজীবির কাছে দারস্ত হয়ে ‍‌‍বাঁচার দরখাস্ত করেছিলো।
যদি এই সব প্রশ্নের জবাব নেগেটিভ হয়, তাহলে বিএনপির সাথে জামায়াতে সম্পর্ক কেমন-তা মহামান্য বুদ্ধিজীবি সাহেব একটু বুদ্ধি খাটিয়ে দেখবেন কি?
উনার ভাষা জাতীয় ঐক্যে যদি জামায়াত প্রতিবন্ধক হয়, তাহলে জামায়াতের সাথে এতো লুটুরফুটুর কেন? জামায়াততো এতো অপরুপা সুন্দরী তরুনী নয়, যে তার প্রেমে অন্ধ প্রেমিক হতে হবে।
তাই,
মুহতারাম এমাজ উদ্দিন সাহেবকে নসিহত করবোঃ জাতীয় ঐক্যের পথে প্রতিবন্ধক যদি জামায়াত হয়ে থাকে, তাহলে জামায়াতকে ত্যাগ করার জন্য আপনি আপনার নেত্রী স্বাধীনতার অতন্দ্র প্রহরী (!), দেশপ্রেমিকা (!) মুহতারামা নেত্রীকে পরামর্শ দিন।
আপনাকে আরো নসিহত করবোঃ জামায়াতের ‘মুরব্বিদের’ ভুল হয়েছে’ এই ধরণের কথা বলা একটি দৃষ্টতা পূর্ণ বক্তব্য। আপনার বয়স যদি কম হতো তাহলে বলতে বাধ্য হতাম যে, এধরণের উক্তিধারীদের জিব টেনে ছিড়ে ফেলার মতো দৃষ্টতা।
মুহতারাম বুদ্ধিজীবি সাহেব! আপনি জানেন কি-এ প্রশ্নে আমরা আমাদের ৪জন মুরব্বীকে হারিয়েছি, এই প্রশ্নে একটি বারের জন্য আমাদের মুরব্বীরা বলেননি যে, তারা ভূল করেছিলেন, এই প্রশ্নে কোন ৫ম শ্রেণীর জামায়াত কর্মীরও কখনো বলেনি যে, আমাদের মুরব্বীরা ভূল করেছেন। জামায়াতের ৭১এর ভূমিকা সম্পর্কে বুঝার ক্ষমতা যেমন নাস্তিক এবং ভারতের দালালদের নেই, তেমনি এতো বড় মাথার বুদ্ধিজীবিদেরও নেই।
তাই আপনাকে নসিহত করবো, আপনার নেত্রীকে নসহিত করুন, জামায়াত নিয়ে চিন্থা অন্তত আপনাকে করতে হবেনা।
সবশেষে বলতে চাই, দীর্ঘ সময়ের নির্যাতন আর ক্রাশ প্রোগ্রাম প্রমান করেছে, জামায়াতকে বাংলাদেশে রাজনীতি করার জন্য কারো দয়া ভিক্ষা বা নসিহত ভিক্ষা করতে হবেনা। কিভাবে নিজেরা বাঁচবেন সেই চিন্তা করেন।
((পুণশ্চঃ যে দলের নেত্রীকে বাসা থেকে জোর করে বের করে দেয়া হয়, আর নেত্রী মিডিয়ার সামনে বাপ মরার কান্নার মতো কান্নাকাটি করে, সেই দলের কেউ যখন জামায়াতকে পরামর্শ দেয়, তখন পাগলেরও হাসি পায়))

এমাজ উদ্দিন সাহেবকে একজন জামায়াত কর্মীর নসিহতঃ ০২ পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

Post a Comment

0 Comments