মুহাম্মদ নজরুল ইসলামঃঃ ইতিহাসে দিকে চোঁখ রেখে আমাদের মুরব্বীরা
তাদের গৌরব গাঁথা আন্দোলনের কথা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন। সেই গর্বের বর্ণনায় আসে
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন,
৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২ সালের
কুখ্যাত হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ৬৬ সালের
ঐতিহাসিক ৬ দফা ও ১১ দফা,
৬৯ সনের গন-অভ্যত্থান, ৭০ এর নির্বাচন আর ৭১ এর মহান
মুক্তিযোদ্ধ। আর যারা একটু পুরাতন মুরব্বী তারা চলে যান পাকিস্তান আন্দোলনে। শেরে
বাংলা একে ফজলুল হককে স্মরণ করিয়ে দিয়ে, ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চে লাহোর
প্রস্তাবের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আমাদের বলেন, সেই সময়ে বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডটি
পাকিস্তানের সাথে নিয়ে যেতে আমাদের সফল আন্দোলনের কারণেই আজকের বাংলাদেশ সৃষ্টি
হয়েছে। তাদের মতে ভারত বর্ষ বিভক্ত হওয়ার সময় আমরা যদি পাকিস্তানের সাথে না যেতাম
বা ভারতে সাথে থেকে যেতাম,
তাহলে বাংলাদেশ ভারতের অন্তর্ভূক্ত “পূর্ব বাংলা” নামে একটা
রাজ্য হতো। কাশ্মীরের মতো কখনোই স্বাধীনতার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যেতো। বাংলাদেশ নামক
রাষ্ট্রের সৃষ্টি হতো না।
যারা ৫২ থেকে ইতিহাস চর্চা শুরু করি, তাদের
ইতিহাস চর্চাতে ৫২,
৫৪,
৬২,
৬৬,
৬৯,
৭০ এবং ৭১ সাল ঝকঝক করতে থাকে। আর যারা ১৯৪০ সাল বা তার পূর্ববর্তী
সময় অবধি বিচরণ করেন,
তাদেরকে আমরা অনেকেই মৌলবাদী বলে আখ্যায়িত করি। কিন্তু নবাব
সিরাজুদ্দৌলার ইতিহাস আর টিপু সুলতানের ইতিহাস আমরা তো ইচ্ছা করলেই মুছতে পারিনা।
কিন্ত!
আজকের আমার আলোচনার বিষয় ইতিহাস নয়। আমার বক্তব্যের বিষয় হচ্ছে সর্বশেষ ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মা্ধ্যমে আমরা যে বিজয় অর্জন করলাম, তাতে আমরা যারা নিরেট বাংলাদেশী, তাদের তো কোন অবদান নাই। অবদান পাকিস্তানীদের। পাকিস্তানী বলতে আমি তাদের বুঝাচ্ছি, যাদের জন্ম হয়েছে পাকিস্তান আমলে।৫২, ৫৪, ৬২, ৬৬, ৬৯, ৭০ এবং ৭১ সালের সংগ্রাম করেছে পাকিস্তানের নাগরিকেরা। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের আগে বাংলাদেশ নামক কোন রাষ্ট ছিল না। বিধায় তারা পাকিস্তানেরই নাগরিক ছিলেন। ১৬ই ডিসেম্বরের বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টি হলো এবং সেই পাকিস্তানের সংগ্রামী নাগরিকরা বাংলাদেশের নাগরিক হলেন। তারা জন্মসূত্রে পাকিস্তানের নাগরিক ছিলেন আমার মতো। মরহুম শেখ মুজিবুর রাহমান ও ড. কামাল হোসেন পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়েই বাংলাদেশে এসেছিলেন বলে আমি শুনেছি।
আজকের আমার আলোচনার বিষয় ইতিহাস নয়। আমার বক্তব্যের বিষয় হচ্ছে সর্বশেষ ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মা্ধ্যমে আমরা যে বিজয় অর্জন করলাম, তাতে আমরা যারা নিরেট বাংলাদেশী, তাদের তো কোন অবদান নাই। অবদান পাকিস্তানীদের। পাকিস্তানী বলতে আমি তাদের বুঝাচ্ছি, যাদের জন্ম হয়েছে পাকিস্তান আমলে।৫২, ৫৪, ৬২, ৬৬, ৬৯, ৭০ এবং ৭১ সালের সংগ্রাম করেছে পাকিস্তানের নাগরিকেরা। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের আগে বাংলাদেশ নামক কোন রাষ্ট ছিল না। বিধায় তারা পাকিস্তানেরই নাগরিক ছিলেন। ১৬ই ডিসেম্বরের বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টি হলো এবং সেই পাকিস্তানের সংগ্রামী নাগরিকরা বাংলাদেশের নাগরিক হলেন। তারা জন্মসূত্রে পাকিস্তানের নাগরিক ছিলেন আমার মতো। মরহুম শেখ মুজিবুর রাহমান ও ড. কামাল হোসেন পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়েই বাংলাদেশে এসেছিলেন বলে আমি শুনেছি।
কিন্তু!
যারা নিরেট বাংলাদেশের নাগরিক-নিরেট বাংলাদেশের নাগরিক বলতে আমি তাদের বুঝাচ্ছি, যাদের জন্ম হয়েছে ৭১ এর পর-মুক্তিযোদ্ধের পর-তাদের ৫২, ৫৪, ৬২, ৬৬, ৬৯, ৭০ এবং ৭১ সালের সংগ্রামে কি অবদান আছে। আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধ আর মুক্তিযোদ্ধের চেতনা বলে মঞ্চ গরম করি, তাদের তো মুক্তিযোদ্ধে কোন অবদান নাই। অবদান যা আছে, তা কেবল সেই সময়ের পাকিস্তানী নাগরিক আমাদের বাবা, চাচা এবং ভাই-বোনদের।তাদের জীবনে ৪০ বা ৫২ থেকে ৭১ এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় রয়েছে আন্দোলন সংগ্রামের গর্ব করার মতো কাহিনী বা ইতিহাস।
যারা নিরেট বাংলাদেশের নাগরিক-নিরেট বাংলাদেশের নাগরিক বলতে আমি তাদের বুঝাচ্ছি, যাদের জন্ম হয়েছে ৭১ এর পর-মুক্তিযোদ্ধের পর-তাদের ৫২, ৫৪, ৬২, ৬৬, ৬৯, ৭০ এবং ৭১ সালের সংগ্রামে কি অবদান আছে। আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধ আর মুক্তিযোদ্ধের চেতনা বলে মঞ্চ গরম করি, তাদের তো মুক্তিযোদ্ধে কোন অবদান নাই। অবদান যা আছে, তা কেবল সেই সময়ের পাকিস্তানী নাগরিক আমাদের বাবা, চাচা এবং ভাই-বোনদের।তাদের জীবনে ৪০ বা ৫২ থেকে ৭১ এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় রয়েছে আন্দোলন সংগ্রামের গর্ব করার মতো কাহিনী বা ইতিহাস।
তাহলে,
তাহলে যারা নিরেট বাংলাদেশী তথা বাংলাদেশে জন্ম, তারা কি বাপ-দাদাদের সেই ইতিহাস শুনিয়ে শুনিয়ে খাবো। আমাদের কি কোন ইতিহাস গড়ার দরকার নেই? ১৯৭১ সালের পর অনেক কাহিনী আছে, ৭৩ এর নির্বাচন আছে, ৭৫ এর নির্মম হত্যাকান্ড আছে, মুশতাক, তাহের, খালেদ মুশাররাফ, জিয়া, এরশাদের কাহিনী আছে, সামরিক শাসন আছে, ৯০ এর আন্দোলন আছে, ওয়ান ইলেভেন আছে, ২১শে আগষ্টের বোমা হামলা আছে, জুডিশিয়াল কিলিং মিশন আছে, ৫ জানুয়ারী আর ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন আছে। ইস্যু বলতে গেলে বলার মতো অনেক কিছু আছে। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের কাছে গর্ব করার মতো কিছু আছে বলে আমি খোঁজে পাইনা।
তাই একজন কমজানা নাগরিক হিসাবে প্রশ্ন জাগেঃ আমরা কি বাপ-দার ৭১ বিক্রি করেই খাবো? না আমাদেরকেও ইতিহাস তৈরী করতে হবে। আমার তো মনে হয়, একমাত্র ৯০ এর গন আন্দোলন ছাড়া নিরেট বাংলাদেশীদের গর্ব করার কিছু নাই।
তাহলে যারা নিরেট বাংলাদেশী তথা বাংলাদেশে জন্ম, তারা কি বাপ-দাদাদের সেই ইতিহাস শুনিয়ে শুনিয়ে খাবো। আমাদের কি কোন ইতিহাস গড়ার দরকার নেই? ১৯৭১ সালের পর অনেক কাহিনী আছে, ৭৩ এর নির্বাচন আছে, ৭৫ এর নির্মম হত্যাকান্ড আছে, মুশতাক, তাহের, খালেদ মুশাররাফ, জিয়া, এরশাদের কাহিনী আছে, সামরিক শাসন আছে, ৯০ এর আন্দোলন আছে, ওয়ান ইলেভেন আছে, ২১শে আগষ্টের বোমা হামলা আছে, জুডিশিয়াল কিলিং মিশন আছে, ৫ জানুয়ারী আর ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন আছে। ইস্যু বলতে গেলে বলার মতো অনেক কিছু আছে। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের কাছে গর্ব করার মতো কিছু আছে বলে আমি খোঁজে পাইনা।
তাই একজন কমজানা নাগরিক হিসাবে প্রশ্ন জাগেঃ আমরা কি বাপ-দার ৭১ বিক্রি করেই খাবো? না আমাদেরকেও ইতিহাস তৈরী করতে হবে। আমার তো মনে হয়, একমাত্র ৯০ এর গন আন্দোলন ছাড়া নিরেট বাংলাদেশীদের গর্ব করার কিছু নাই।
ফ্রেব্রুয়ারী ২৫, ২০১৯
0 Comments