প্রশ্নোত্তর – তাফহীমুল কুরআন – সূরা আদ দোখান

১. সূরা দোখানের নাম করণ হয়েছে যে আয়াত থেকে তা বলুন। এটি সূরার কত নম্বর আয়াত?

উত্তরঃ فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاء بِدُخَانٍ مُّبِينٍ  এটি ১০ নম্বর আয়াত।

২. সূরার বিষয়বস্তু ও আভ্যন্তরীন সাক্ষ্য বলে সূরাটি সূরা যুখরুফ ও তার পূর্ববর্তী কয়েকটি সূরা যখন নাযিল হয়েছিল তখন সূরাটি নাযিল হয়। কোন সে সূরা?

উত্তরঃ সুরা আদ দোখান।

৩. “হে আল্লাহ! ইউসুফের দূর্ভিক্ষের মত একটি দূর্ভিক্ষ দিয়ে আমাকে সাহায্য করো” এই দোয়া কে করেছিলেন। দোয়াটি কোন সূরার ভূমিকায় আলোচিত হয়েছে?

উত্তরঃ দোয়া করেন-নবী মুহাম্মদ সা. আর সূরার নাম সূরা আদ দোখান।

৪. “হে আল্লাহ! ইউসুফের দূর্ভিক্ষের মত একটি দূর্ভিক্ষ দিয়ে আমাকে সাহায্য করো” নবী মুহাম্মদ সা. এই ধরনের দোয়া কি উদ্দেশ্যে করেছিলেন?

উত্তরঃ একথা মনে করে যে, মক্কার কাফেরদের উপর বিপদ আসলে আল্লাহকে স্মরণ করবে এবং ভাল কথা শোনার জন্য মন নরম হবে।

৫. দূর্ভিক্ষ থেকে বাঁচার জন্য কাফেরদের একজন প্রতিনিধি নবী সা. এর কাছে এসে নিজ কওমের জন্য দোয়া করতে বললো। সেই প্রতিনিধি কে?

উত্তরঃ আবু সুফিয়ান।

৬. সূরা দোখানে দূর্ভিক্ষ সম্পর্কে উদাহরণ দিতে গিয়ে পূর্ববর্তী একজন নবী ও তার বিরোধীর কথা বলা হয়েছে, তারা কারা?

উত্তরঃ হযরত মুসা আ. ও ফিরাউন।

৭. লাইলাতিন মুবারাকাতিন বা বরকত ও কল্যাণময় রাতটাকে সূরা কদরে কি নামে অভিহিত করা হয়েছে?

উত্তরঃ লাইলাতুল কাদর।

৮. আখেরাত বিষয়ে মক্কার কাফেরদের অভিনব দাবীর প্রেক্ষিতে ২টি জবাব প্রদান করা হয়েছিল, তা কি কি?

উত্তরঃ ১. আখেরাত বিশ্বাসের অস্বীকৃতি সব সময় নৈতিক চরিত্রের জন্য ধ্বংসাত্মক হয়েছে। ২. বিশ্বজাহান কোন খেলার জিনিস নয়, বরং এটি একটি জ্ঞানগর্ভ  ব্যবস্থাপনা। আর জ্ঞানীর কোন কাজ অর্থহীন হয়না।

৯. “এই সুস্পষ্ট কিতাবের শপথ, আমি এটি এক বরকত ও কল্যাণময় রাতে নাযিল করেছি।” কিন্তু কি কারণে নাযিল করা হয়েছে? আল্লাহর ভাষায় বলনু অথবা এর অর্থ বলুন।

উত্তরঃ  إِنَّا كُنَّا مُنذِرِينَ কারণ, আমি মানুষকে সতর্ক করতে চেয়েছিলাম।

১০. “এই সুস্পষ্ট কিতাবের শপথ”- সুস্পষ্ঠ কিতাবের শপথের মাধ্যমে কি বুঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ একথা বুঝানো হয়েছে যে, এই কিতাবই প্রমাণ করছে যে, এই কিতাবের রচয়িতা মুহাম্মদ সা. নন।

১১. أمر حكيم (আমরিন হাকীম) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে দুইটি অর্থে। তা কি কি?

উত্তরঃ ১. সেই নির্দেশটি সরাসরি জ্ঞানভিত্তিক হয়ে থাকে। তাতে কোন ত্রুটি বা অপূর্ণতার সম্ভাবনা নেই। ২. সেটি অত্যন্ত দৃঢ় ও পাকাপোক্ত সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে। তা পরিবর্তনের সাধ্য কারো নেই।

১২. আল্লাহকে গোটা বিশ্ব জাহান ও তার প্রতিটি জিনিসের রব স্বীকার করলে দুইটি জিনিস মেনে নিতে হয়। তা কি কি?

উত্তরঃ মানুষের পথ প্রদর্শনের জন্য কিতাব ও রাসূল প্রেরণ তাঁর রহমত ও প্রতিপালন গুণের অবিকল দাবী। ২. মালিক হওয়ার কারণে এটাও দাবী যে এবং তার মালিকানাধিন হওয়ার কারণে তোমাদের কর্তব্য হলো, তাঁর পক্ষ থেকে যে হেদায়াত আসে তা মেনে চলা ও যে নির্দেশ আসে তার আনুগত্য করা।

১৩. মুরসাল হাদীস কোনটি?

উত্তরঃ যে হাদীসে মুল রাবী সাহাবীর নাম উল্লেখ থাকেনা বরং তাবেই রাসূল থেকে হাদীস বর্ণনা করেন।

১৪. আখবারে আহাদ বলতে কোন ধরনের হাদীসকে বুঝানো হয়?

উত্তরঃ যে হাদীসের বর্ণনা সুত্রের কোন এক স্থরে বর্ণনাকারী মাত্র একজন থাকে।

১৫. رسول مبين (রাসূলুন মুবিন) এর দুইটি অর্থ কি কি?

উত্তরঃ ১. তাঁর জীবন, তার নৈতিক চরিত্র এবং তাঁর কাজকর্ম থেকে তাঁর রাসূল হওয়া পুরোপুরি সুস্পষ্ট। ২. তিনি প্রকৃত সত্যকে সুস্পষ্ট করে তুলে ধরতে কোন ত্রুটি করেননি।

১৬. كريم (কারিম) শব্দটি যখন মানুষের গুণ হিসাবে ব্যবহার করা হয়, তখন তার দ্বারা কি বুঝানো হয়?

উত্তরঃ এমন ব্যক্তি, যে অত্যন্ত ভদ্র ও শিষ্ট আচার-আচরণ এবং অতীব প্রশংসনীয় গুনাবলীর অধিকারী।

১৭. “তুব্বা” কার উপাধি ছিল?

উত্তরঃ হিময়ার গোত্রের বাদশাহদের উপাধি।

১৮. এমন ব্যক্তি, যে কোন সম্পর্কের কারণে অন্য কোন ব্যক্তিকে সহযোগিতা করে। তা আত্মীয়তার হোক কিংবা বন্ধুত্বের বা অন্য কোন প্রকারের। আরবীতে ঐ ব্যক্তিকে কি বলা হয়?

উত্তরঃ  مولى (মাওলা)

১৯. যাক্কুম এক ধরণে গাছ। ইহা কাদের খাদ্য হবে?

উত্তরঃ গোনাহগারদের।

২০. المهل শব্দটির কয়েকটি অর্থ রয়েছে। যে কোন ২টি বলুন।

উত্তরঃ ১. গলানো ধাতু।  ২. পুঁজ।  ৩. গলানো আলকাতরা।  ৪. লাভা।  ৫. তেলের তলানী।

২১. المهل নামক জিনিসটাকে আমাদের দেশে কি নামে বলা হয়?

উত্তরঃ “ফনীমনসা”

২২. আরবী ভাষায় সুক্ষ্ম রেশমী কাপড়কে কি বলা হয়।

উত্তরঃ সুনদুছ।

২৩. আরবী ভাষায় মোটা রেশমী কাপড় বুঝাতে কি শব্দ ব্যবহার করা হয়?

উত্তরঃ ইসতাবরাক্ব।

২৪. আরবী ভাষায় সুন্দর নারীকে কি বলা হয়?

উত্তরঃ হাওরা।

২৫. অস্বীকারকারীরা নিজেরাও আল্লাহ্‌কে যমিন, আসমান এবং বিশ্বাজাহানের প্রতিটি জিনিসের মালিক ও পালনকর্তা মানে এবং একথাও মানে যে, জীবন ও মৃত্যু আল্লাহ্‌র এখতিয়ারে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা অন্যদেরকে উপাস্য হিসাবে গ্রহণ করার জন্য গোঁ ধরে আছে-এর সপক্ষে তাদের একমাত্র যুক্তি কি?

উত্তরঃ তাদের বাপ-দাদার সময় থেকেই একাজ চলে আসছে।

২৬. সেই রাতে ফেরেশতারা ও জিবারঈল তাদের রবের আদেশে সব রকম নির্দেশ নিয়ে অবর্তীর্ণ হয়। কোন রাতে?

উত্তরঃ “লাইলাতুল কদর”

২৭. কোন কোন ইমাম “মুরসাল হাদীসকে নিঃসংকোচে গ্রহণ করেছেন?

উত্তরঃ ইমাম মালেক ও ইমাম আবু হানিফা।

২৮. রাসুল(সাঃ) বলেছেন, যতদিন একের পর এক ১০টি আলামত প্রকাশ না পাবে ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত হবে না। ৫টি আলামত বলুন।

উত্তরঃ (১) পশ্চিম দিক তেথকে সূর্য উদিত হওয়া।  (২) ধোঁয়া। (৩) দাংবা বা জন্তু। (৪) ইয়াজুজ ও মাজুজের আবির্ভাব।  (৫) ঈসা ইবনে মারয়ামের অবর্তীণ হওয়া। (৬) ভূমি ধ্বস। (৭) পূর্ব থেকে আগুনের উৎপত্তি। (৮) পশ্চিম থেকে আগুনের উৎপত্তি।  (৯) আরব উপদ্বীপ থেকে আগুনের উৎপত্তি। (১০) আদন থেকে আগুনের উৎপত্তি- এই আগুন মানুষকে তাড়া করে নিয়ে যাবে।

২৯. জান্নাত বাসীদের বলে দেয়া হবে, তোমরা এখানে চিরদিন সুস্থ থাকবে, কখনো রোগাক্রান্ত হবে না, চিরদিন জীবিত থাকবে, কখনো মরবে না, চিরদিন সুখী থাকবে, কখনো দূর্দশাগ্রস্থ হবে না এবং চিরদিন যুবক থাকবো, কখনো বৃদ্ধ হবে না। এই হাদীসটি ২জন সাহাবী বর্ণনা করেছে।  ঐ সাহাবী ২জনের নাম কি?

উত্তরঃ  হযরত আবু হুরাইরা(রা), হযরত আবু সাইদ খুদরী(রা)

৩০. “আমল করো এবং নিজের সাধ্যমত সর্বাধিক সঠিক কাজ করার চেষ্ঠা করো।  জেনে রাখো কোন ব্যক্তিকে শুধু তার আমল জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারবে না” ইহা কার উক্তি?

উত্তরঃ রাসুল(সাঃ) এর।

৩১. সুরা আদ্ দুখানে ইসলামের প্রাথমিক যুগে ইসলাম গ্রহণ কারী ৪জন সার্বক্ষনিক সাথী রাসুল(সাঃ) এর সাথে ছিলেনঐ ৪জন সাথীর নাম কি?

উত্তরঃ খাদিজা (রাঃ), আবু বকর (রাঃ), আলী (রাঃ), যায়েদ ইবনে হারেসা (রাঃ)

৩২. “সে দিন আমি বড় আঘাত করবো, যেদিন আমি তোমাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করবো।” উক্ত আয়াতে কোন দিনের আঘাতের কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ বদর যুদ্ধের দিন



Post a Comment

0 Comments