মুহাম্মদ নজরুল ইসলামঃঃ সময়ের ব্যবধানে
একদিন আমি ফুলতলী মাসলাক ছেড়ে ১০০ ভাগ শিবির কর্মী হয়ে গেলাম। ১৯৮৪
সাল থেকে এই অবধি। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় একটি প্রশ্ন বারবার চলে আসে। আর তা
হলো এতো ইসলামী সংগঠন, এরপরও আমি কেন ইসলামী ছাত্রশিবির বা জামায়াতে ইসলামীকে
বেঁচে নিলাম। আমি আমার ব্যক্তিগত অবজারভেশন থেকে জামায়াত শিবির ও
অন্যান্য ইসলামী সংগঠন সমূহের মাঝে কিছু মৌলিক পার্থক্য লক্ষ করি। পার্থক্য গুলো
পত্রস্ত করলামঃ
১.
জামায়াতে ইসলামী কোন ব্যক্তির একক নির্দেশে পরিচালিত হয়না। অন্যান্য ইসলামী
দলের প্রায় সবক’টি কোন না কোন ব্যক্তির নেতৃত্বে এবং একেকজন বিশেষ ব্যক্তিকে
কেন্দ্র করে পরিচালিত।
২.
জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দের সন্তানেরা সংগঠনে কোন বিশেষ মর্যাদার অধিকারী
নন। অন্যান্য ইসলামী দলে মূল নেতার সন্তান বা সন্তানেরা বিশেষ মর্যাদার
অধিকারী এবং ঐ নেতার অবর্তমানে তার সন্তানেরাই দলীয় প্রধানের দায়িত্ব
পেয়ে থাকেন।
৩.
জামায়াতে ইসলামীতে নেতার আনুগত্যের একটি ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে,
যার কারণে নেতৃবৃন্দ
স্বভাবতই স্বতঃস্ফূর্ত মর্যাদার অধিকারী। অন্যান্য ইসলামী দলে সে ঐতিহ্য
নেই এবং মূল নেতা ছাড়া প্রায় সবাইই সে মর্যাদা পান না।
৪.
জামায়াতে ইসলামীতে রয়েছে সংস্কার ও সংশোধনের উদ্দেশ্যে একটি সুনির্দিষ্ট
‘মুহাসাবা’
পদ্ধতি।
অন্যান্য ইসলামী দলে মুহাসাবার কোন প্রেকটিস নেই।
৫.
জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত পরিচালিত হয় সর্বস্তরের জনশক্তির
পরামর্শের ভিত্তিতে। অন্যান্য ইসলামী সংগঠন পরিচালিত হয় একক
নেতৃত্বের
নির্দেশে।
৬.জামায়াতে
ইসলামীর দায়িত্বশীলেরা সর্বাবস্তায় কোন না কোন ফোরামের নিকট জবাবদিহি
করতে দায়বদ্ধ। অন্যান্য ইসলামী দলের দায়িত্বশীলদের জবাবদিহিতার কোন
ব্যবস্থা নেই।
৭.
জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্ব নির্বাচিত হয় জনশক্তির প্রত্যক্ষ মতামতের ভিত্তিতে,
যেখানে কেউ
প্রার্থী হন না বা পদের জন্য কেউ প্রত্যাশী হয়না। আর
নেতৃত্ব নির্বাচনে
কোন ধরণের ক্যানভাস চলেনা। অন্যান্য ইসলামী দলে নেতৃত্ব
নির্বাচন হয়না।
যে ব্যক্তি প্রধান দায়িত্বশীল হন, তিনি প্রায়সই স্থায়ী ভাবে
সে পদে আসীন থাকেন। কেবল মাত্র নেতৃত্বের প্রত্যাশার কারণে অন্যান্য ইসলামী
দল ভেঙে বিভিন্ন উপদল সৃষ্টি হয়।
৮.জামায়াতে
ইসলামীর জনশক্তির মানোন্নয়নের রয়েছে একটি স্তর বিন্যাস। যার মাধ্যমে
একজন মুমিনকে প্রকৃত মুমিন হিসাবে গড়ে উঠতে প্রচেষ্টা চালানো হয়। যা
অন্যান্য ইসলামী দলে অনুপস্থিত।
0 Comments