“কোরআন সুন্নাহ্ পরিষদ কাতার” সম্পর্কে সাবধান


মুহাম্মদ নজরুল ইসলামঃঃ ফুলতলী সাহেব একবার বলেছিলেনঃ তুশা শিরনী (হালুয়া) মনে করে সাবানের গোল্লা (গোলাকার সাবান) মুখে দিয়ে দিয়ে ছিলাম, যখন বুঝলাম, তখন সাথে সাথে ফেলে দিয়েছি।

হালুয়া বা তুশা শিরনী আর সাবানের পার্থক্য সহজে বুঝা গেলেও তথ্য প্রযু্ক্তির এই যামানায় আসল নকল চিনা বড় মুশকিল। কখন আপনি আমি ধোঁকা খেয়ে যেতে পারি, তার কোন গ্যারান্টি নেই।

পাঠকের মনে থাকার কথা যে, হলি আর্টিজেনে হামলায় যাদের আটক করা হয়, তাদের একজন জাকির নায়েকের ফলোয়ার ছিলেন। কেবল মাত্র এই কারণে জাকির নায়েককে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।

একই ভাবে কোরআন সুন্নাহ্ পরিষদ কাতার নাম ব্যবহার করে আপনাকে সহসাই ধোঁকা দেয়া হতে পারে! যে কোন সময় আপনি কোরআন সুন্নাহ্ পরিষদ কাতার কর্তৃক ধোঁকার শিকার হতে পারেন!! আপনি যাকে বাংলাদেশ কুরআন সুন্নাহ পরিষদ কাতারভাবছেন এটা সেইটা নয়। বরং এটা একটি ফেইক কোরআন সুন্নাহ পরিষদ কাতার

হ্যাঁ! আমি কোরআন সুন্নাহ্ পরিষদ কাতারনামক একটি ফেইসবুক পেইজের ব্যাপারে বলছি। পেইজটির তৈরী করা হয়েছে ২০১৬ সালের ২১শে আগষ্ট। আজ অবধি এই পেইজে লাইক পড়েছে ২২ হাজার। জন্মলগ্ন থেকে আজ অবধি এই পেইজে বাংলাদেশ কুরআন সুন্নাহ পরিষদ কাতার এর কোন অনুষ্ঠান বা তথ্য শেয়ার করা হয়নি। জন্মলগ্নে জামায়াতে ইসলামীর বেশ কিছু পোষ্ট শেয়ার করা হলেও পরবর্তীতে অধিকাংশ পোষ্ট শেয়ার করা হয়েছে হেফাজতে ইসলাম এর।

যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশের একটি মোবাইল দেয়া রয়েছে, যার নম্বর +8801989308697 এই বছরের ১৭ জানুয়ারী ড. রেজওয়ান সিদ্দিকীর মৃত্যু সংবাদ পরিবেশন ছিল এই পেইজের সর্বশেষ একটিভিটি।

পাঠক আপনি যদি এই পেইজটির বিরুদ্ধে রিপোর্ট করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে এখানে ক্লিক করুন। শুনলে অবাক হবার বিষয় হচ্ছে, ফেইক এই পেইজের লাইক সংখ্যা ২২ হাজার হলেও বাংলাদেশ কুরআন সুন্নাহ পরিষদ কাতার এর অফিসিয়েলফেইসবুক পেইজের লাইক সংখ্যা অদ্যাবধিঃ মাত্র সাড়ে ৪ হাজার।

আমি ২০১০ সাল থেকে ফেইসবুক ব্যবহার করি। কুরআন সুন্নাহপরিষদ কাতারের নিজস্ব ফেইসবুক পেইজ রয়েছে, যাতে আমিও যুক্ত আছি। কিন্তু আজ হঠাৎ করে আমার ফেইসবুক ফিডে একটি কোরআন সুন্নাহ পরিষদ কাতারএর পোস্ট ভেসে উঠলো। মাত্র কয়েকদিন আগে কুরআন সুন্নাহ পরিষদের একটি প্রোগ্রামের ব্যানারে কুরআন সুন্নাহ পরিষদের নামটি ভূল বানানে ছাপা হয়। হঠাৎ করে ফেইসবুকে কোরআন সুন্নাহ পরিষদকাতারপেইজটি চলে আসার ভাবলাম, তাহলে কি কুরআন সুন্নাহ পরিষদ তাদের নামটির বানান চেঞ্জ করে ফেললো? কৌতুহল থেকে পেইজটি ভিতরে গিয়ে দেখলাম, না! কুরআন সুন্নাহ পরিষদ কাতার তাদের ফেইসবুক পেইজের নামের বানান পরিবর্তন করেনি। বরং কোরআনসুন্নাহ পরিষদ কাতারপেইজটি একটি ফেইক পেইজ। যার কোন কিছুই কুরআন সুন্নাহ পরিষদের নয়।

সকলের সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে,

. কুরআন সুন্নাহ পরিষদের অফিসিয়েল ফেইসবুক পেইজের নামঃ বাংলাদেশ কুরআন সুন্নাহ পরিষদ কাতার, যার নামের শুরুতে বাংলাদেশশব্দটি রয়েছে এবং কুরআন বানানটির ক-তে  ো ব্যবহার করা হয়না।

. কুরআন সুন্নাহ পরিষদের ফেইসবুক আইডি থেকে আলতু ফালতু কোন কিছু শেয়ার করা হয়না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিজস্ব কন্টেন্ট প্রচার করা হয়।

২২ হাজার লাইক যে সব আইডি থেকে পাওয়া গেছে, তাদের আলোচনা যদি করি তাহলে বলতে হবে যে, জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ কুরআন সুন্নাহ পরিষদের উল্লেখ যোগ্য নেতৃবৃন্দের অনেকেই এই পেইজে লাইক দিয়েছেন।

যারা সত্য ও সুন্দরের পথে বাঁধা দিতে চায়, তারা তাদের অস্র গ্রুলো রেডি করে অনেক আগে থেকে। ২২ হাজার লাইকের পেইজ-ছোট কথা নয়। কিন্তু কেন এই নামে পেইজ খুলতে হবে? যদি শুভাকাংখ্যা হয়ে কেউ ফ্যান পেইজ খুলে থাকেন, তাহলে তো সেখানে কুরআন সুন্নাহ পরিষদের জয়গান করার কথা। কিন্তু একটিও কথা নেই কুরআন সুন্নাহ পরিষদ সম্পর্কে। বিষয়টা রহস্যময় মনে হয় না?

২২ হাজার লাইকের এই পেইজ থেকে আজ কাল বা পরশু অথবা অন্য কোন সময়ে এমন আবেদন আসতে পারে, যাতে করে আপনি থমকে যাবেন, আপনি ধোঁকার শিকার হয়ে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। তুশা শিরনী (হালুয়া) মনে করে আপনি সাবানের গোল্লা মুখে দিয়ে দিতে পারেন। ২২ হাজার লাইকের এই পেইজ থেকে কোন এক সময়ে হতে পারে কুরআন সুন্নাহ পরিষদের নাম কুরআন সুন্নাহ পরিষদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হতে পারে। সহীহ কুরআন সুন্নাহ পরিষদের আহবান আসতে পারে।

অতএব, এই কোরআন সুন্নাহ্ পরিষদ কাতারসম্পর্কে সাবধান হওয়া দরকার। এজন্য আমার বিবেচনায় যা করা দরকারঃ

প্রথমতঃ নিজে বাংলাদেশ কুরআন সুন্নাহ পরিষদ কাতার এর অফিসিয়েলফেইসবুক পেইজে লাইক দিয়ে রাখা উচিত, অন্যদেরকে লাইক দেয়ার আহবানের জন্য পেইজটির লিংক ফেইসবুকে এবং অন্যান্য মাধ্যমে শেয়ার করা উচিত।

দ্বিতীয়তঃ কোরআন সুন্নাহ্ পরিষদ কাতার” নামক যে পেইজটি রয়েছে, তা বের করে এর বিরুদ্ধে রিপোর্ট করা উচিত।

তৃতীয়তঃ বাংলাদেশ কুরআন সুন্নাহ পরিষদ কাতার কি চায়, কেন চায়, কিভাবে চায় ইত্যাদি জানা দরকার।

 

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা আমাদের সকল কাজকে ইবাদত হিসাবে কবুল করুন। আমীন।

Post a Comment

0 Comments