পাওনদারদের সাথে আপনার আচরণ কেমন হওয়া চাই - মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম

পাওনদারদের সাথে আপনার আচরণ কেমন হওয়া চাই

(মাত্র ৫শ রিয়ালের জন্য আপনি এতো নিচে নামতে পারলেন। একজন সম্মানিত লোককে এভাবে জনসমক্ষে লজ্জা দেয়া আপনার ঠিক হয়নি।)

 

পাওনদার-মানে দৈনন্দিন প্রয়োজন পুরণের তাগিদে আমরা যখন প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করতে ব্যর্থ হই, তখন কম থাকা অর্থ অন্য কোন ভাই বা বন্ধুর কাছ থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফিরত দেয়ার উদ্দেশ্যে গ্রহণ করি যার কাছ থেকে আমরা গ্রহণ করি, তিনিই পাওনদার

ঋণ করা আমাদের জীবনের একটি অতীব প্রয়োজনীয় বিষয় জীবনে কখনো ঋণ করেননি-এমন মানুষ খোঁজে পাওয়া ভার আল্লাহর রাসূল সা. স্বয়ং ঋণ করেছেন

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ঋণ প্রদান করার জন্য উৎসাহিত করেছেন আল্লাহ বলেনঃ

مَّن ذَا الَّذِي يُقْرِضُ اللّهَ قَرْضاً حَسَناً فَيُضَاعِفَهُ لَهُ أَضْعَافاً كَثِيرَةً وَاللّهُ يَقْبِضُ وَيَبْسُطُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ

“তোমাদের মধ্যে কে আল্লাহকে করযে হাসানাদিতে প্রস্তুত, যাতে আল্লাহ তা কয়েক গুণ বাড়িয়ে তাকে ফেরত দেবেন? কমাবার ক্ষমতা আল্লাহর আছে, বাড়াবারও এবং তাঁরই দিকে তোমাদের ফিরে যেতে হবে৷” (সূরা আল বাকারাহঃ ২৪৫)

وَلَقَدْ أَخَذَ اللّهُ مِيثَاقَ بَنِي إِسْرَائِيلَ وَبَعَثْنَا مِنهُمُ اثْنَيْ عَشَرَ نَقِيباً وَقَالَ اللّهُ إِنِّي مَعَكُمْ لَئِنْ أَقَمْتُمُ الصَّلاَةَ وَآتَيْتُمُ الزَّكَاةَ وَآمَنتُم بِرُسُلِي وَعَزَّرْتُمُوهُمْ وَأَقْرَضْتُمُ اللّهَ قَرْضاً حَسَناً لَّأُكَفِّرَنَّ عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَلأُدْخِلَنَّكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ فَمَن كَفَرَ بَعْدَ ذَلِكَ مِنكُمْ فَقَدْ ضَلَّ سَوَاء السَّبِيلِ

“আল্লাহ বনী ইসরাঈলদের থেকে পাকাপোক্ত অংগীকার নিয়েছিলেন এবং তাদের মধ্যে বারোজননকীবনিযুক্ত করেছিলেন৷ আর তিনি তাদেরকে বলেছিলেনঃ আমি তোমাদের সাথে আছি৷ যদি তোমরা নামায কায়েম করো, যাকাত দাও, আমার রসূলদেরকে মানো ও তাদেরকে সাহায্য করো  এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দিতে থাকো, তাহলে নিশ্চিত বিশ্বাস করো আমি তোমাদের থেকে তোমাদের পাপগুলো মোচন করে দেবো  এবং তোমাদের এমন সব বাগানের মধ্যে প্রবেশ করাবো যার তলদেশ দিয়ে ঝরণাধারা প্রাবাহিত হবে৷ কিন্তু এরপর তোমাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি কুফরী নীতি অবলম্বন করবে, সে আসলে সাওয়া-উস-সাবীল  তথা সরল সঠিক পথ হারিয়ে ফেলেছে৷” (সূরা আল মায়িদাহঃ ১২)

مَن ذَا الَّذِي يُقْرِضُ اللَّهَ قَرْضاً حَسَناً فَيُضَاعِفَهُ لَهُ وَلَهُ أَجْرٌ كَرِيمٌ

“এমন কেউ কি আছে যে আল্লাহকে ঋণ দিতে পারে? উত্তম ঋণ যাতে আল্লাহ তা কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে ফেরত দেন৷ আর সেদিন তার জন্য রয়েছে সর্বোত্তম প্রতিদান” (সূরা আল হাদীদঃ ১১)

إِنَّ الْمُصَّدِّقِينَ وَالْمُصَّدِّقَاتِ وَأَقْرَضُوا اللَّهَ قَرْضاً حَسَناً يُضَاعَفُ لَهُمْ وَلَهُمْ أَجْرٌ كَرِيمٌ

“দান সাদকা প্রদানকারী নারী ও পুরুষ এবং যারা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দান করে, নিশ্চয়ই কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে তাদেরকে ফেরত দেয়া হবে৷ তাছাড়াও তাদের জন্য আছে সর্বোত্তম প্রতিদান৷” (সূরা আল হাদীদঃ ১৮)

إِن تُقْرِضُوا اللَّهَ قَرْضاً حَسَناً يُضَاعِفْهُ لَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ وَاللَّهُ شَكُورٌ حَلِيمٌ

“যদি তোমরা আল্লাহকে করযে হাসানা দাও তাহলে তিনি তোমাদেরকে তা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবেন এবং তোমাদের ভূল-ত্রুটি ক্ষমা করবেন৷ আল্লাহ সঠিক মূল্যায়ণকারী ও অতিব সহনশীল৷” (সূরা আত তাগাবুনঃ ১৭)

إِنَّ رَبَّكَ يَعْلَمُ أَنَّكَ تَقُومُ أَدْنَى مِن ثُلُثَيِ اللَّيْلِ وَنِصْفَهُ وَثُلُثَهُ وَطَائِفَةٌ مِّنَ الَّذِينَ مَعَكَ وَاللَّهُ يُقَدِّرُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ عَلِمَ أَن لَّن تُحْصُوهُ فَتَابَ عَلَيْكُمْ فَاقْرَؤُوا مَا تَيَسَّرَ مِنَ الْقُرْآنِ عَلِمَ أَن سَيَكُونُ مِنكُم مَّرْضَى وَآخَرُونَ يَضْرِبُونَ فِي الْأَرْضِ يَبْتَغُونَ مِن فَضْلِ اللَّهِ وَآخَرُونَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَاقْرَؤُوا مَا تَيَسَّرَ مِنْهُ وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَأَقْرِضُوا اللَّهَ قَرْضاً حَسَناً وَمَا تُقَدِّمُوا لِأَنفُسِكُم مِّنْ خَيْرٍ تَجِدُوهُ عِندَ اللَّهِ هُوَ خَيْراً وَأَعْظَمَ أَجْراً وَاسْتَغْفِرُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ

“হে নবী, তোমার রব জানেন যে, তুমি কোন সময় রাতের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ, কোন সময় অর্ধাংশ এবং কোন সময় এক তৃতীয়াংশ সময় ইবাদতে দাঁড়িয়ে কাটিয়ে দাও৷ তোমার সংগী একদল লোকও এ কাজ করে৷ রাত এবং দিনের সময়ের হিসেব আল্লাহই রাখেন৷তিনি জানেন, তোমরা সময়ের সঠিক হিসেব রাখতে পারো না৷ তাই তিনি তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন৷ এখন থেকে কুরআন শরীফের যতটুকু স্বাচ্ছন্দে পড়তে পারবে ততটুকুই পড়বে৷ তিনি জানেন, তোমাদের মধ্যকার কিছু লোক হবে অসুস্থ ,কিছু লোক আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে ভ্রমণরত, এবং কিছু লোক আল্লাহর পথে লড়াই করে৷ তাই কুরআনের যতটা পরিমাণ সহজেই পড়া যায় ততটাই পড়তে থাকো৷ নামায কায়েম করো, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে "করযে হাসানা" দিতে থাকো৷ তোমরা নিজের জন্য যে পরিমাণ কল্যাণ অগ্রিম পাঠিয়ে দেবে তা আল্লাহর কাছে প্রস্তুত পাবে৷সেটিই অধিক উত্তম এবং পুরষ্কার হিসেবে অনেক বড়৷ আর তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও৷নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীলও দয়ালু।” (সূরা আল মুজ্জাম্মিলঃ ২০)

যিনি আপনাকে ঋণ দিয়েছেন, তিনি আপনাকে কেন ঋণ দিয়েছেন?

. আপনি সমস্যায়, তিনি আপনার প্রতি আন্তরিক তাই ভালবাসা থেকে আপনার বিপদে সহযোগিতা করেছেন

. তার সামাজিক অবস্থান আপনার চেয়ে উঁচু হওয়ার কারণে আপনি মনে করেন তিনি অনেক অনেক টাকা ইনকাম করেন কিন্তু প্রকৃত অবস্থা এমন নয় তিনি তার সামাজিক অবস্থানের কারণে ইজ্জত রক্ষার্থে নিজের প্রয়োজন হজম করে আপনাকে সহযোগিতা করেছেন

. তিনি আপনার প্রতি আন্তরিক নন কিন্তু আপনি সমস্যাটা এমন ভাবে উপস্থাপন করেছেন যে, তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে গেছেন এবং সেই আবেগের প্রসবন হিসাবে আপনাকে হেল্প করেছেন

. তিনি আপনার প্রতি সাংঘাতিক ধরণের আস্তা রাখেন কারণ ব্যক্তিগত জীবনে আপনি সুন্দর সুন্দর কথা বলেন আপনার বক্তব্যের মাধ্যমে আপনি ভাল মানুষ হিসাবে প্রতিষ্ঠিততিনি মনে করেন যে, আপনি যে প্রয়োজনের কথা বলছেন, তা সত্য এবং আপনি গ্রহণযোগ্য সময়ের মধ্যেই টাকাটা রিটার্ণ করবেন কিন্তু তিনি জানেন না যে, আপনি লেন-দেনে এতো ভাল মানুষ নন

সম্পর্ক যখন গভীর হয়, তখন বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে ঋণ দাতা কোন এগ্রিমেন্ট করেন না যে, আপনি ঋণটা কখন ফেরত দেবেন। এর মানে এটা নয় যে, আপনার যখন খুশী তখন দেবেন। স্বাভাবিক ভাবে এই ঋণটার পরিমাণ ১ সপ্তাহ হতে পারে, কিংবা ১ মাস। তার চেয়ে কোন অবস্থায়ই বেশী নয়। এখন যদি আপনার এর চেয়ে বেশী সময়ের জন্য ঋণ নেয়ার দরকার হয়, তাহলে প্রথমেই সময় উল্লেখ করে ঋণ চাইতে হবে। এতে করে আপনি স্বচ্ছ থাকবেন।

ঋণ কেন দেবেন?

. ঋণ দেয়া আল্লাহর নির্দেশ তাই আপনি ঋণ দেবেন

. রাসূল সা. ঋণ করেছেন তিনি ঋণ প্রদানে উৎসাহিত করেছেন

. আপনার প্রয়োজনীয় অর্থের অতিরিক্ত অর্থে অন্য মানুষের হক রয়েছে

. আপনি সামাজিক জীব তাই সমাজের একজন সদস্যের সমস্যার আপনি এগিয়ে আসা আপনার দায়িত্ব

. মানুষ যেখানে আছে সেখানে সমস্যা আছে আর সে সব সমস্যার সমাধানও করতে হয় মানুষকে

ঋণ সম্পর্কে কিছু কথাঃ

. আপনি কি এমন ব্যক্তি, যার রোজগার প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগন্য তাই আকস্মিক সমস্যা আসলে তা সমাধানের জন্য আপনার কাছে তা সমাধানের জন্য টাকা থাকেনা যদি আপনি এমন অবস্থায় হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি ঋণ করতে পারেন আপনাকে ঋণ প্রদান করা আপনার আমার সকলের দায়িত্ব

. আপনি কি উপরোক্ত সেই ব্যক্তি, যিনি আকস্মিক সমস্যার কারণে ঋণ করেছিলেন যিনি আপনাকে ঋণ দিয়ে ছিলেন, তার ঋণ এখনো পরিশোধ করেননি আপনার কাছে জিজ্ঞাসাঃ কেন করেননি? আপনার অনেক অনেক সমস্যা, তাইনা? মনে রাখবেনঃ সন্তুষ জনক সময়ের মাঝে আপনি যদি পরিশোধ না করেন, তাহলে আপনি এর চেয়ে আরো বড় সমস্যায় পড়েও আপনি ঋণ পাবেন না

৩. আপনি কি প্রবাসী। আপনি একামা লাগানো, এখনই টিকেট করতে হবে-কিন্তু বেতন পাননি। অথচ বেতন পাওয়ার পর টিকেটের দাম বেড়ে যাবে। তাই ঋণ করে টিকেট করে নেয়ার চিন্তা করছেন। এরপর বেতন পেয়ে আপনি দেশে চলে গেলেন। কিন্তু যার কাছে থেকে ঋণ করে টিকেট ক্রয় করেছিলেন, তার ঋণ পরিশোধ করলেন না। উপনি ভবিষ্যতে কখনো ঋণ পাবেন না।

৪. আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। মাসে আপনার ৪০/৫০ রিয়াল ইন্টারনেট বাবত খরচ হয়। অথচ আপনার পাওনাদার ৩০০ রিয়াল পাবেন। তা ৩ বছর থেকে পরিশোধ করতে পারতেছেন না। আসলেই আপনার দেনদেন ভাল নয়। আপনাকে কেউ ঋণ দেবে না।

৫. আপনি সমস্যায় আছেন। আপনি ঋণ প্রদান করার জন্য যাকে ফোন করেছেন, তার কাছে আপনাকে যেতে ১০ রিয়াল টেক্সী ভাড়া দিতে হবে। আপনি ঋণ চাইতেছেন ৫শ রিয়াল। এর অর্থ হলো, আপনার আশে পাশের লোকের সাথে আপনার লেনদেন সংক্রান্ত যোগাযোগ ভাল নয়। আপনি সকল দোকানেই বাকী খেয়ে আপনি এখন আশেপাশে কারো থেকে ঋণ পাননা। আপনার লেনদেনের ফাইলকে ব্লাক লিস্টেড করে রেখেছেন।

ঋণ প্রদানকারীর আর্তনাদঃ

আপনি কোন একজনের কাছে থেকে ঋণ নিয়েছেন ঋণের পরিমাণ মাত্র ৫শ রিয়াল ২০১৬ সালের ঋণটা আজ অবধি আপনি পরিশোধ করেননি যে ব্যক্তিটা আপনাকে ২০১৬ সালে ঋণ দিয়েছিলেন, সেই ব্যক্তিটা এখন কেমন আছেন? আপনি ভাবছেন, তিনি সেই আগের মতোই আছেন কিন্তু বাস্তবে তা নয় এক সময় ৫শ রিয়াল উনার কাছে হাতের ময়লা হলেও এখন সেই ৫শ রিয়াল এখন উনার কাছে ৫হাজার রিয়ালের সমান কিন্তু আপনার কাছে তার কোন খবর নাই

ঋণ দানকারী করোনা সহ নানাবিধ পরিস্থিতিতে ভেঙে চুরমার হয়ে গেলেও আপনি তার খবর জানেন না। যার হাজার হাজার টাকা ছিল, সেই ঋণ প্রদানকারী ব্যক্তির এখন নুন আনতে পানতা ফুরায়। কিন্তু আপনি কেমন আছেন?

আপনি ঋণ নেয়ার পর আজ অবধি তার সাথে একটি বারের জন্য কথা বলেননি। এরই মধ্যে আপনি বিয়ে করেছেন। বিয়ে করতে প্রবাস থেকে দেশে গিয়েছেন। ইতিমধ্যে আপনি বারবার দেশে প্রবাস থেকে দেশে গিয়ে নানাবিধ স্থানে বিলাশী ভ্রমনে গিয়ে তার ছবি ফেইসবুকে আপলোড দিয়েছেন। কিছু দিন আগে আপনার ছোট্ট মেয়েটাকে স্কুলে ভর্তি দিয়েছেন। তার ছবিও ফেইসবুকে আপলোড করছেন। ঋণ প্রদানকারী ব্যক্তিটি আপনার সেই পোষ্টে লাইকও দিয়েছেন। কিন্তু আপনার একটি বারের জন্য মনে হচ্ছে না, এই ব্যক্তিটি আপনাকে ৫শ রিয়াল ঋণ দিয়েছিল।

আপনি বিয়ে করে বারবার দেশে গেলেও সেই ঋণ দানকারী ব্যক্তিটা দেশে যেতে পারতেছে না। আপনি আপনার ছেলে মেয়েকে ভাল স্কুলে ভর্তি দিলেও ঋণ দানকারী সেই ব্যক্তিটা তার ছেলে মেয়েকে বেশী খরচের স্কুল থেকে ট্রান্সফার করে সরকারী স্কুলে ভর্তি দিয়েছে। আপনি কি তার খবর রাখেন। আপনি যখন অভিজাত রেস্টুরেন্টে বিশাল প্লেইটের বাহারী খাবার খেয়ে তার ছবি ফেইসবুকে শেয়ার করেন, তখন ওপাশে এই লোকটা ভাবে, এই ব্যক্তিটার কাছে আমার ৫শ রিয়াল পাওনা আছে।

ঐ লোকটা তখন আর্তনাদ করে। ঐ লোকটা আর্তনাদে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়। কিন্তু আপনার অন্তরে একটুও দাগ কাটেনা।

দীর্ঘ যাতনার পর একদিন আপনার বাসার পাশে বড় মসজিদের সামনে নামায পড়ে বের হওয়ার সময় ঐ ঋণদাতা ব্যক্তিটির সাথে আপনার দেখা হয়ে যায়। আপনি তখন বন্ধ বান্ধব নিয়ে খোশ গল্পে মত্ত। সেই লোকটা আপনাকে সালাম দেয়। আপনি ভাল রেসপন্স না করলেও সে বাধ্য হয় একাকী আপনার সাথে কথা বলতে। আপনি একা হচ্ছেনা, কারণ আপনি জানেন-লোকটা টাকার কথা বলবে। লোকটা বাধ্য হয়ে সকলে সামনে তার পাওনা ৫শ টাকার জন্য আপনাকে বলে এবং কোন দিন দিবেন, তা বলতে বাধ্য করে। এরই মধ্যে পরিবেশ একটু হলেও খারাপ হয়ে যায়।

ঐ দিনের রাতের বেলা। লোকটা তার অতি শ্রদ্ধাভাজন একজনের কাছ থেকে টেলিফোন রিসিভ করে। শ্রদ্ধাভাজন টেলিফোন শুরু করেই বললেনঃ মাত্র ৫শ রিয়ালের জন্য আপনি এতো নিচে নামতে পারলেন। একজন সম্মানিত লোককে এভাবে জনসমক্ষে লজ্জা দেয়া আপনার ঠিক হয়নি।

Post a Comment

0 Comments