প্রশ্নোত্তর – তাফহীমুল কুরআন – সূরা আল হিজর

প্রশ্নোত্তরে তাফহীমুল কুরআন

সুরা আল হিজর

1. সূরা হিজরের নাম করণ কিসের ভিত্তিতে করা হয়েছে?

উত্তরঃ সূরার ৮০নং আয়াতের আল হিজর শব্দ থেকে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-ভূমিকা)

2. وَلَقَدْ كَذَّبَ أَصْحَٰبُ ٱلْحِجْرِ ٱلْمُرْسَلِينَ এই আয়াত থেকে কোন সূরা নামকরণ করা হয়েছে।

উত্তরঃ সূরা আল হিজর। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-ভূমিকা)

3.বিষয়বস্তু ও বর্ণনাভংগী থেকে পরিস্কার বুঝা যায়এ সূরাটি সূরা ইবরাহীমের সমসময়ে নাযিল হয় কোন সূরাটি?

উত্তরঃ সূরা আল হিজর। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-ভূমিকা)

4. সূরা হিজর অন্য একটি সূরার সম সময়ে নাযিল হয়, সূরাটির নাম কি?

উত্তরঃ সূরা ইব্রাহীম। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-ভূমিকা)

5.সূরা হিজরে দুটি প্রধান বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে, তা কি কি?

উত্তরঃ ১. দাওয়াত অস্বীকার কারী ও বিদ্রুপকারীদের সতর্ক করণ। ২. নবী সঃ কে সান্তনা দান ও সাহস যোগানো। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-ভূমিকা)

6. পটভূমিতে দু’টি জিনিস পরিস্কার দেখা যাচ্ছেএকঃ নবী সা. এর দাওয়াতের একটি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়েছেদুইঃ নিজের জাতির কুফরীস্থবিরতা ও বিরোধিতার পাহাড় ভাংতে ভাংতে নবী সা. ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন  এ গুলো কোন সূরার পটভূমির কথা?

উত্তরঃ সূরা আল হিজর। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-ভূমিকা)

7.সূরা হিজরে দুজনকে কেন্দ্র করে একটা কাহিনী বলা হয়েছে। এ দুজন কে কে?

উত্তরঃ আদম ও ইবলিশ। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-ভূমিকা)

8.কুরআনে আল্লাহ শুধুমাত্র সতর্কবাণী উচ্চারণ এবং তিরস্কার ও নিন্দাবাদরে মধ্যেও আল্লাহর রাসূল সা. বুঝাবার ও নসীয়ত করার ক্ষেত্রে কোন কমতি রাখেননি এ জন্যই সূরা আল হিজরে একদিকে তাওহীদের যুক্তি-প্রমাণের প্রতি সংক্ষেপে ইংগিত করা হয়েছে। অন্য দিকে কি করা হয়েছে?

উত্তরঃ আদম ও ইবলীসের কাহিনী শুনিয়ে উপদেশ দানের কার্যও সামাধা করা হয়েছে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-ভূমিকা)

9.  تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ وَقُرْآنٍ مُّبِينٍ (তিলকা আয়াতিল কিতাবি ওয়া কুরআনিল মুবিন) এখানে মুবিন শব্দটির অর্থ সুস্পষ্ট। আরবী ব্যাকরণের দৃষ্টিতে সুস্পষ্ট শব্দটি কুরআনের কি?

উত্তরঃ বিশেষণ। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১)

10.   تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ وَقُرْآنٍ مُّبِينٍ (তিলকা আয়াতিল কিতাবি ওয়া কুরআনিল মুবিন) এর মানে কি?

উত্তরঃ এগুলো এমন এক কুরআনের আয়াত যে নিজের বক্তব্য পরিস্কারভাবে বলে দেয়। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১)

11.এমন এক সময় আসা বিচিত্র নয় যখন আজ যারা (ইসলামের দাওয়াত গ্রহণ করতে) অস্বীকার করছেতারা অনুশোচনা করে কি বলবে?

উত্তরঃ হায়যদি আমরা আনুগত্যের শির নত করে দিতাম! (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ২)

12.“ছেড়ে দাও এদেরকেখানাপিনা করুকআমোদ ফূর্তি করুক এবং মিথ্যা প্রত্যাশা এদেরকে ভুলিয়ে রাখুক শিগ্‌গির এরা জানতে পারবে।” এই আয়াতে যাদেরকে ছেড়ে দেয়ার কথা বলা হচ্ছে, তাদের উল্লেখ করা হয়েছে এর আগের আয়াতে। তারা কারা?

উত্তরঃ যারা (ইসলামের দাওয়াত গ্রহণ করতে) অস্বীকার করছে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ২)

13.               যে জনবসতিই ধ্বংস করা হয়েছিল, সেই  জনবসতির জন্য একটি বিশেষ কি লিখা হয়ে গিয়েছিল?

উত্তরঃ কর্ম-অবকাশ। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৪)

14.অবকাশ দেয়া হয় তিনটি কাজের সুযোগ দেয়ার জন্য। তা কি কি?

উত্তরঃ ১. শুনবার। ২. বুঝবার। ৩. নিজেকে শুধরে নেবার। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ২)

15.               “যিকির” বা বাণী শব্দটি পারিভাষিক অর্থে কুরআন মজীদে কিসের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে?

উত্তরঃ আল্লাহর বাণীর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে  (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৩)

16.যিকিরের আসল মানে কি কি?

উত্তরঃ স্মরণ করিয়ে দেয়া, সতর্ক করা এবং উপদেশে দেয়া। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৩)

17.               এই যে পয়গম্বর সাহেবকে তোমাদের নিকট পাঠানো হয়েছেএর মাথা ঠিক নেই।” এই কথা কে কখন কার উদ্দেশ্যে বলেছিল?

উত্তরঃ ফেরাউন হযরত মুসা আ. এর দাওয়াত শুনার পর তার সভাসদকে উদ্দেশ্য করে বলেছিল। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৪)

18.               إِنَّ رَسُولَكُمُ الَّذِي أُرْسِلَ إِلَيْكُمْ لَمَجْنُونٌ এটি কোন সূরা আয়াত? এর অর্থ কি?

উত্তরঃ সূরা আল শুআরার আয়াত। এর অর্থ হলোঃ এই যে পয়গম্বর সাহেবকে তোমাদের নিকট পাঠানো হয়েছে, এর মাথা ঠিক নেই।” (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৪)

19.﴿مَا نُنَزِّلُ الْمَلَائِكَةَ إِلَّا بِالْحَقِّ﴾ “আমি ফেরেশতাদেরকে এমনিই অবতীর্ণ করি না। তারা যখণ অবতীর্ণ হয় সত্য সহকারে অবতীর্ণ হয়।” এখানে সত্য সহকারে অবতীর্ণ হওয়া মানে কি?

উত্তরঃ সত্য সহকারে অবতীর্ণ হওয়া মনে সত্য নিয়ে অবতীর্ণ হওয়া। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৫)

20.   সত্য সহকারে অবতীর্ণ হওয়ার দুইটি মর্ম। একটি হচ্ছেঃ মিথ্যাকে মিটিয়ে দিয়ে তার জায়গায় সত্যকে কায়েম করা। আরেকটি কি?

উত্তরঃ আল্লাহর ফায়সালা নিয়ে আসা এবং তা প্রতিষ্ঠিত করেই কান্ত হওয়া। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৫)

21.   “আর এ বাণীএকে তো আমিই অবতীর্ণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।” এই কথাগুলো কুরআনের যে আয়াতের, সেই আয়াতটি তেলাওয়াত করুন।

উত্তরঃ ﴿إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ﴾  (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৯)

22.   যার বাহককে তোমরা পাগল বলছোআমিই তা অবতীর্ণ করেছিতিনি নিজে তা তৈরী করেননি তাই এ গালি তাকে দেয়া হয়নি বরং  কাকে দেয়া হয়েছে?

উত্তরঃ আমাকে দেয়া হয়েছে /  আল্লাহকে দেয়া হয়েছে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৬)

23.   شِيَعِ الْأَوَّلِينَ অর্থ কি?

উত্তরঃ অতীতের অনেক সম্প্রদায়। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ১০)

24.   وَمَا يَأْتِيهِم مِّن رَّسُولٍ إِلَّا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ এই আয়াতে يَسْتَهْزِئُونَ শব্দের অনুবাদ তাফহীমুল কুরআন কি করা হয়ছে।

উত্তরঃ বিদ্রুপ করা। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ১১)

25.   আরবী ভাষায় سلك  (সালাকা) শব্দের ৪টি অর্থ রয়েছে। যে কোন একটি বলুন।

উত্তরঃ ১. কোন জিনিসকে অন্য জিনিসের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া। . কোন জিনিসকে অন্য জিনিসের মধ্যে অনুপ্রবেশ করানো . কোন জিনিসকে অন্য জিনিসের মধ্যে চালিয়ে দেয়া।  ৪. কোন জিনিসকে অন্য জিনিসের মধ্যে গলিয়ে দেয়া  (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৭)

26.   আরবী ভাষায় سلك (সালাকা) শব্দের ৪টি অর্থ রয়েছে। একটি হলো, কোন জিনিসকে অন্য জিনিসের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া। দ্বিতীয়টি, কোন জিনিসকে অন্য জিনিসের মধ্যে অনুপ্রবেশ করানো। তৃতীয় ও চতূর্থ অর্থ কি কি?

উত্তরঃ . কোন জিনিসকে অন্য জিনিসের মধ্যে চালিয়ে দেয়া। ৪. কোন জিনিসকে অন্য জিনিসের মধ্যে গলিয়ে দেয়া  (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৭)

27.   যদি আমি তাদের সামনে আকাশের কোনো দরজা খুলে দিতাম এবং তারা দিন দুপুরে তাতে আরোহণও করতে থাকতো তবুও তারা কোন কথাই বলতো?

উত্তরঃ আমাদের দৃষ্টি বিভ্রম হচ্ছে বরং আমাদের ওপর যাদু করা হয়েছে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ১৪ ও ১৫)

28.   আরবী ভাষায় দূর্গপ্রাসাদ ও মজবুত ইমারতকে কি বলা হয়?

উত্তরঃ বুরুজ  (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৮)

29.   প্রাচীন জ্যোতির্বিদ্যায় সূর্যের পরিভ্রমণ পথকে কয়টি স্তরে বা রাশিচক্রে বিভক্ত করা হয়েছিল?  পারিভাষিক অর্থে সেই স্তরগুলোর জন্য কোন শব্দকে ব্যবহার করা হতো?

উত্তরঃ ১৩টি স্তরে। সেই স্তর গুলোর জন্য বুরুজ শব্দ ব্যবহার করা হতো। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৮)

30.  Fortified spheres – মানে কি?

উত্তরঃ সংরক্ষিত অঞ্চল। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৮)

31.   আমি দৃশ্যত কুলকিনারাহীন এ বিশ্ব জগতকে একটি বিশাল পরিত্যক্ত ভূতুড়ে বাড়ি বানিয়ে রেখে দেইনি বরং তাকে এমন একটি সুন্দর সুসজ্জিত জগত বানিয়ে রেখেছি যার মধ্যে সর্বত্র সব দিকে নয়নাভিরাম দীপ্তি ছাড়িয়ে রয়েছে। এই কথাগুলোকে কুরআনের ভাষায় কি বলা হয়েছে?

উত্তরঃ وَزَيَّنَّاهَا لِلنَّاظِرِينَ অথবা দর্শকদের জন্য সেগুলো সুসজ্জিত করেছি। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৯)

32.   الَّذِي أَحْسَنَ كُلَّ شَيْءٍ خَلَقَهُ   এর  মানে কি?

উত্তরঃ আল্লাহযে জিনিসই বানিয়েছেনচমৎকার বানিয়েছেন। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৯)

33.  শয়তান কি বিশ্ব জাহানের সর্বত্র যেতে পারে?

উত্তরঃ না পারে না। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ১৭)

34.   সাধারণ মানুষ এ বিভ্রান্তিতে লিপ্ত ছিল এবং আজো আছে তারা মনে করেশয়তান ও তার সাংগপাংগদের জন্য সারা বিশ্ব জাহানের দরজা খোলা আছেযত দূর ইচ্ছা তারা যেতে পারে কুরআন এর জবাবে কি বলছে?

উত্তরঃ শয়তানরা একটি বিশেষ সীমানা পর্যন্তই যেতে পারেতার ওপরে আর যেতে পারে না তাদেরকে কখনোই সীমাহীন উড্ডয়নের ক্ষমতা দেয়া হয়নি। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১০)

35.  شِهَابٌ مُّبِينٌ  شِهَابٌ ثاقب এর আভিধানিক অর্থ কি?

উত্তরঃ شِهَابٌ مُّبِينٌ  এর আভিধানিক অর্থ উজ্জ্বল আগুনের শিখা আর شِهَابٌ ثاقب  এর অর্থ হচ্ছেঅন্ধকার বিদীর্ণকারী অগ্নি-স্ফুলিংগ। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১২)

36.   আকাশ থেকে নিক্ষিপ্ত জলন্ত নক্ষত্রকে আমাদের ভাষায় কি বলা হয়?

উত্তরঃ উলকা পিন্ড। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১২)

37.  Cosmic Rays এর বাংলা কি?

উত্তরঃ মহাজাগতিক রশ্মি। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১২)

38.  পৃথিবীর দিকে যেসব উলকা ছুটে আসতে দেখা যায় তার সংখ্যা হবে প্রতিদিন কত হবে?

উত্তরঃ এক লক্ষ কোটি  (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১২)

39.   পৃথিবীর দিকে যেসব উলকা ছুটে আসতে দেখা যায় এর মধ্যে থেকে কতটি প্রতিদিন পৃথিবীর মধ্যাকার্ষণ এলাকার মধ্যে প্রবেশ করে পৃথিবীর দিকে ধাবিত হয়

উত্তরঃ প্রায় ২ কোটি। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১২)

40.   পৃথিবীর দিকে যেসব উলকা ছুটে আসতে দেখা যায় মহাশূন্যে এদের গতি কত হয়ে থাকে?

উত্তরঃ কমবেশী প্রতি সেকেণ্ডে ২৬ মাইল এবং কখনো তা প্রতি সেকেণ্ডে ৫০ মাইলেও পৌঁছে যায়। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১২)

41.   ১৮৩৩ খৃষ্টাব্দের ১৩ নভেম্বর মধ্য রাত্র থেকে প্রভাত পর্যন্ত ২ লক্ষ উলকা পিণ্ড নিক্ষিপ্ত হতে দেখা গিয়েছিল। এটা পৃথিবীর কোন স্থানে ঘটেছিল?

উত্তরঃ উত্তর আমেরিকার পূর্ব এলাকায় শুধুমাত্র একটিস্থানে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১২)

42.   পৃথিবীতে উলকা পিণ্ডের যেসব নমুনা দুনিয়ার বিভিন্ন যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড়টির ওজন কত?

উত্তরঃ ৬৪৫ পাউণ্ড। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১২)

43.   পৃথিবীকে আমি বিস্তৃত করেছিতার মধ্যে পাহাড় স্থাপন করেছিসকল প্রজাতির উদ্ভিদ তার মধ্যে সুনির্দিষ্ট পরিমাণে উৎপন্ন করেছি- সূরা আল হিজরে এই কথা গুলো বলে কিসের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে?

উত্তরঃ আল্লাহর কুদরতশক্তিমত্তা ও জ্ঞানের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনের প্রতি (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১৩)

44.   আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়াল বলতেছেনঃ এ সম্পরেদ ভান্ডার তোমাদের হাত নাই। প্রশ্ন হচ্ছে কোন সে সম্পদ?

উত্তরঃ বৃষ্টির পানি বা বৃষ্টিবাহী বায়ু বা আকাশ থেকে পানি বর্ষণ। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ২২)

45.   আল্লাহ বলছেনঃ জীবন ও মৃত্যু আমিই দান করি এবং আমিই হবো সবার উত্তরাধিকারী। প্রশ্ন হচ্ছেঃ আল্লাহ কিভাবে সবার উত্তরাধিকার হবেন?

উত্তরঃ সবকিছু ধ্বংসের পর কেবল আল্লাহই টিকে থাকবেন, মানুষ যা পেয়েছে তা সাময়িক ব্যবহারের জন্য পেয়েছে এবং এক সময় সব কিছু ত্যাগ করে খালি হাতে মানুষকে বিদায় নিতে হবে। ফলে সবকিছু যেমন আগে ছিল তেমনি আল্লাহর ভান্ডারে থেকে যাবে। তাই ফেলে যাওয়া সকল কিছু আল্লাহর উত্তরাধিকারে চলে যাবে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১৫)

46.   الْمُسْتَقْدِمِينَ এবং الْمُسْتَأْخِرِينَ অর্থ কি?

উত্তরঃ الْمُسْتَقْدِمِينَ যারা পূর্বে গত হয়েছে আর الْمُسْتَأْخِرِينَ যারা পরবর্তীতে আসবে বা পরবর্তী আগমনকারী। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ২৪)

47.   যে ব্যক্তি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে “মরার পরে যখন আমাদের মৃত্তিকার বিভিন্ন অণু-কণিকা বিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে তখন আমাদের কিভাবে পূর্ণবার জীবিত করা হবে?” সে আসলে কি?

উত্তরঃ সে আসলে আল্লাহর জ্ঞান সম্পর্কে অজ্ঞ। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১৬)

48.   মানুষকে যে মাটি থেকে তৈরী করা হয়েছে সেই মাটির বৈশিষ্ট কি? আরবী বা বাংলাতে বলুন।

উত্তরঃ صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ বা শুকনো ঠনঠনে পচা মাটি। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ২৬)

49.   ডারউইনের ক্রমবিবর্তনবাদে প্রভাবিত আধুনিক যুগের কুরআনের ব্যাখ্যাতাগণ কোন কথাটি প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন?

উত্তরঃ মানুষ বির্বতন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পশুত্বের পর্যায় অতিক্রম করে মানবতার পর্যায়ে অতিক্রম করে মানবতার পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১৭)

50.  حَمَإٍ م  বলতে আরবী ভাষায় কোন ধরনের কালো কাদা মাটিকে বুঝায়?

উত্তরঃ যার মধ্যে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়ে গেছে, যাকে আমরা নিজেদের ভাষায় পংক বা পাঁক বলে থাকি অথবা অন্য কথায় বলা যায়, যা মাটির গোলা বা মণ্ড হয়ে গেছে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১৭)

51.   مَّسْنُونٍ শব্দের দুই অর্থ হয়। একটি হলোঃ পরিবর্তিতঅর্থাৎ এমন পচাযার মধ্যে পচন ধরার ফলে চকচকে ও তেলতেলে ভাব সৃষ্টি হয়ে গেছে দ্বিতীয় অর্থটি কি?

উত্তরঃ দ্বিতীয় অর্থ, চিত্রিত অর্থাৎ যা একটা নির্দিষ্ট আকৃতি ও কাঠামোতে রূপান্তরিত হয়েছে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১৭)

52.   صَلْصَالٍ  বলা হয় কোন ধরণের মাটিকে?

উত্তরঃ এমন পচা কাদাকে যা শুকিয়ে যাওয়ার পর ঠনঠনে করে বাজে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১৭)

53.  কোন জিনিসকেسَمُومِ  বলা হয়?

উত্তরঃ গরম বাতাসকে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১৮)

54.   আগুনের সাথে যখন سَمُومِ  শব্দ  সংযুক্ত করা হয়, তখন এর অর্থ কি হয়?

উত্তরঃ প্রখর উত্তাপ। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১৮)

55.  “তারপর তখনকার কথা স্মরণ করো যখন তোমার রব ফেরেশতাদের বললেন”। প্রশ্ন হলোঃ রব ফেরেশতাদের কি বললেন?

উত্তরঃ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِّن صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ  (আমি শুকনো ঠন্‌ঠনে পচা মাটি থেকে একটি মানুষ সৃষ্টি করছি)। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ২৮)

56.   আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা কখন ফেরেশতাদেরকে মানুষে সামনে সিজদাবনত হওয়া নির্দেশ দিলেন?

উত্তরঃ فَإِذَا سَوَّيْتُهُ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِن رُّوحِي যখন মানুষকে পূর্ণ অবয়ব দান করা হবে এবং তার মধ্যে তার রূহে থেকে কিছু ফুঁক দেয়া হবে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ২৯)

57.  যেগুলোর সমষ্টির নাম প্রাণ, সেই গুণ গুলো কি কি?

উত্তরঃ জীবন, জ্ঞান, শক্তি, সামর্থ সংকল্প এবং অন্যান্য যতগুলো গুণ মানুষের মধ্যে পাওয়া যায়। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১৯)

58.  আল্লাহর গুণাবলীর একটি প্রতিচ্ছায়া কোন কোন গুণাবলী?

উত্তরঃ জীবন, জ্ঞান, শক্তি, সামর্থ সংকল্প এবং অন্যান্য যতগুলো গুণ মানুষের মধ্যে পাওয়া যায়। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১৯)

59.   কোন গুনাবলী কারণে মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে গণ্য হয়েছে?

উত্তরঃ জীবন, জ্ঞান, শক্তি, সামর্থ সংকল্প এবং অন্যান্য যতগুলো গুণ মানুষের মধ্যে পাওয়া যায়। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১৯)

60.   কোন গুনাবলী কারণে ফেরেশতাগনসহ পৃথিবীর যাবতীয় সৃষ্টি মানুষকে সিজদা করেছে?

উত্তরঃ জীবন, জ্ঞান, শক্তি, সামর্থ সংকল্প এবং অন্যান্য যতগুলো গুণ মানুষের মধ্যে পাওয়া যায়। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১৯)

61.   মহান আল্লাহ রহমতকে কত ভাগে বিভক্ত করেছেন তারপর এর মধ্য থেকে কত অংশ নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন এবং কত অংশ পৃথিবীতে অবতীর্ণ করেছেন?

উত্তরঃ একশো ভাগ বিভক্ত করেছেন  ৯৯টি অংশ নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন এবং মাত্র ১ অংশ পৃথিবীতে অবতীর্ণ করেছেন। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১৯)

62.   অন্যান্য সৃষ্টির ওপর মানুষের এ প্রাধান্য ও শ্রেষ্ঠত্ব কেন?

উত্তরঃ আল্লাহর গুণাবলীর প্রতিচ্ছায়া যে ধরনের পূর্ণতার সাথে মানুষের ওপর ফেলা হয় অন্য কোন প্রাণীর ওপর তেমনভাবে ফেলা হয়নি। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ১৯)

63.   হে ইবলীস! তোমার কি হলোতুমি সিজদাকারীদের অন্তরভুক্ত হলে না?” আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালার এমন প্রশ্নের উত্তরে ইবলীস কি জবাব দিয়েছিল?

উত্তরঃ সে জবাব দিয়েছিল, “এমন একটি মানুষকে সিজদা করা আমার মনোপূত নয় যাকে তুমি শুকনো ঠন্‌ঠনে পচা মাটি থেকে সৃষ্টি করেছো” (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৩৩)

64.   رَجِيمٌ শব্দের অর্থ কি? رَجِيمٌ কার গুণ?

উত্তরঃ রাজিম অর্থঃ ধিকৃত। এটি শয়তানের গুণ। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৩৪)

65.   শয়তান আল্লাহর কাছে আরয করলো, হে আমার রব! যদি তাই হয়, তাহলে সেই দিন পর্যন্ত আমাকে অবকাশ দাও? প্রশ্ন হচ্ছে, কোন দিন পর্যন্ত শয়তান অবকাশ চেয়েছে?

উত্তরঃ যেদিন সকল মানুষকে পূণর্বার উঠানো হবে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৩৬)

66.   তার উদ্দেশ্য ছিলসে পৃথিবীর জীবন এবং তার সুখ-আনন্দ ও ক্ষণস্থায়ী আরাম-আয়েশ ও ভোগ-বিলাসকে মানুষের জন্য এমন চমকপ্রদ ও সুদৃশ্য করে তুলবে যার ফলে সে খিলাফত ও তার দায়িত্বসমূহ এবং পরকালের জবাবদিহির কথা ভুলে যাবেএমনকি আল্লাহকেও ভুলে যাবে অথবা স্মরণ রাখা সত্ত্বেও তাঁর বিধানের বিরুদ্ধাচরণ করবে।– এই উদ্দেশ্য কার ছিল?

উত্তরঃ ইবলিসের। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ২২)

67.   هَٰذَا صِرَاطٌ عَلَيَّ مُسْتَقِيمٌ  বাক্যের দু’টি অর্থ হতে পারে একটি অর্থ এটিই আমার নিকট পৌঁছুবার সোজা পথ দ্বিতীয় অর্থটি কি?

উত্তরঃ একথা ঠিকআমি এটা মেনে চলবো। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ২৩)

68.   إِنَّ عِبَادِي لَيْسَ لَكَ عَلَيْهِمْ سُلْطَانٌ إِلَّا مَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْغَاوِينَ এই আয়াতের দুইটি অর্থ হতে পারে। দ্বিতীয় অর্থটি হলোঃ আমার বান্দাদের (অর্থাৎ সাধারণ মানুষদের) ওপর তোমার কোন কর্তৃত্ব থাকবে না তুমি তাদেরকে জবরদস্তি নাফরমান বানাতে পারবে না তবে তারা নিজেরাই বিভ্রান্ত হবে এবং নিজেরাই তোমার অনুসরণ করতে চাইবে তাদেরকে তোমার পথে চলার জন্য ছেড়ে দেয়া হবে তোমার পথ থেকে তাদেরকে আমি জোর করে বিরত রাখার চেষ্টা করবো না। প্রথম অর্থটি কি?

উত্তরঃ অবশ্যি যারা আমার প্রকৃত বান্দা হবে তাদের ওপর তোমার কোনো জোর খাটবে না তোমার জোর খাটবে শুধুমাত্র এমন বিপথগামীদের ওপর যারা তোমার অনুসরণ করবে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৪২)

69.   আল্লাহর কাছে পৌঁছুবার সোজা পথ কোনটি?

উত্তরঃ বন্দেগীর পথ। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ২৪)

70.  কোন পথ অবলম্বন করলে তাদের ওপর শয়তানের কোন কর্তৃত্ব চলবে না?

উত্তরঃ বন্দেগীর পথ। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ২৪)

71.   কাদেরকে আল্লাহ নিজের জন্য একান্তভাবে গ্রহণ করে নেবেন।

উত্তরঃ যারা বন্দেগীর পথ অবলম্বন করবে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ২৪)

72.   কারা শয়তানের ফাঁদে পা দেবে না

উত্তরঃ যারা বন্দেগীর পথ অবলম্বন করবে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ২৪)

73.  যারা নিজেরাই বন্দেগীর পথ থেকে সরে এসে নিজেদের কল্যাণ ও সৌভাগ্যের পথ হারিয়ে ফেলবে তারা কার শিকারে পরিণত হবে?

উত্তরঃ ইবলীসের। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ২৪)

74.   মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য শয়তান তার যে কর্মপদ্ধতি বর্ণনা করেছে, তা কি?

উত্তরঃ পৃথিবীর জীবনকে মানুষের জন্য সুদৃশ্য ও সুশোভিত করে তাদেরকে আল্লাহর পথ থেকে গাফিল ও বন্দেগীর পথ থেকে বিচ্যুত করে দেবে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ২৪)

75.  তোমরা নিজেদের আদি শত্রু শয়তানের ফাঁদে পড়ে গেছো এবং সে নিজের হিংসা চরিতার্থ করার জন্য তোমাদের যে হীনতার গর্তে নামিয়ে দিতে চায় তোমরা তার মধ্যে তলিয়ে যাচ্ছো পক্ষান্তরে নবী সা. কি করছেন?

উত্তরঃ নবী সা. তোমাদের এ ফাঁদ থেকে উদ্ধার করে উন্নতির সেই উচ্চ শিখরের দিকে নিয়ে যেতে চান যা আসলে মানুষে হিসেবে তোমাদের স্বাভাবিক অবস্থান স্থল। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ২৫)

76.   তোমাদের জন্য একটি মাত্র মুক্তির পথ রয়েছে,সেটি কি?

উত্তরঃ আল্লাহর বন্দেগী করা  (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ২৫)

77.  আল্লাহর বন্দেগীর পথ পরিহার করে তোমরা যে পথেই চলবে তা হবে কিসের পথ এবং এই পথ কোন দিকে চলে গেছে।

উত্তরঃ শয়তানের পথ এবং সে পথটি চলে গেছে সোজা জাহান্নামের দিকে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ২৫)

78.  শয়তানের ভূমিকা হলোসে দুনিয়ার বাহ্যিক জীবনোপকরণের সাহায্যে ধোঁকা দিয়ে তোমাদের আল্লাহর বন্দেগীর পথ থেকে বিচ্যুত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তার ধোঁকায় পড়ে যাওয়া এটা কার ত্রুটি?

উত্তরঃ নিজেদের ত্রুটি। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ২৫)

79.   জাহান্নামকে কাদের জন্য শাস্তির অংগীকার করা হয়েছে?

উত্তরঃ ইবলিসের অনুসারীদের জন্য। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৪৪)

80.  জাহান্নাম কয়টি দরজা বিশিষ্ট?

উত্তরঃ সাতটি। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৪৪)

81.   যারা শয়তানের পদানুসরণ থেকে দূরে থেকেছে এবং আল্লাহর ভয়ে ভীত হয়ে তাঁর বন্দেগী ও দাসত্বের জীবন যাপন করেছে-সূরা আল হিজর-এ তাদেরকে কি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে?

উত্তরঃ মুত্তাকী। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৪৫, টীকাঃ ২৭)

82.   ادْخُلُوهَا بِسَلَامٍ آمِنِينَ (এবং তাদেরকে বলা হবেতোমরা এগুলোতে প্রবেশ করো শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে।) – এরা কারা?

উত্তরঃ মুত্তাকীরা। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৪৬)

83.  সৎ লোকদের মধ্যে পারস্পরিক ভুল বুঝাবুঝির কারণে দনিয়ার জীবনে যদি কিছু মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়ে থাকে তাহলে আল্লাহ কি করবেন?

উত্তরঃ জান্নাতে প্রবেশ করার সময় তা দূর হয়ে যাবে এবং পরস্পরের পক্ষ থেকে তাদের মন একেবারে পরিস্কার করে দেয়া হবে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ২৮)

84. “এখন তোমরা সবসময় সুস্থ থাকবেকখনো রোগাক্রান্ত হবে না এখন তোমরা চিরকাল জীবিত থাকবেকখনো মরবে না এখন তোমরা চির যুবক থাকবেকখনো বৃদ্ধ হবে না এখন তোমরা হবে চির অবস্থানকারীকখনো স্থান ত্যাগ করতে হবে না।” এই কথা গুলো কাদেরকে বলা হবে?

উত্তরঃ জান্নাতবাসীদেরকে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ২৯)

85.  সূরা আল হিজর-এর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা নবী সা. উদ্দেশ্য করে তার বান্দাদের ২টি বিষয় জানিয়ে দিতে বলছেন। এর একটি হলোঃ আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়। আরেকটি কি?

উত্তরঃ আল্লাহর আযাব ভয়ংকর যন্ত্রণাদায়ক। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৪৯-৫০)

86.   একটি ‘সত্য’ নিয়ে ফেরেশতারা ইবরাহীমের কাছে এসেছিল। আবার অন্য একটি সত্য নিয়ে তারা এসেছিল কার কাছে?

উত্তরঃ লূতের সম্প্রদায়ের কাছে (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৩০)

87.  আল্লাহ ফেরেশতাদের এমনি এমনি পাঠান না, বরং তাদের পাঠান সত্য সহকারে। যেমন দুজন নবীর কাছে ফেরেশতারা সত্য সহকারে এসেছিল, নবী দু’জনের নাম কি কি?

উত্তরঃ ইব্রাহীম আঃ ও লুত আঃ । (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৩০)

88. “তারা জবাব দিলভয় পেয়ো নাআমরা তোমাকে এক পরিণত জ্ঞান সম্পন্ন পুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি।” এই পুত্র বরতে কার জন্মের সুসংবাদ দেয়া হচ্ছে?

উত্তরঃ হযরত ইসহাকের আ. জন্মের সুসংবাদ। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৩২)

89.   “পথভ্রষ্ট লোকেরাই তো তাদের রবের রহমত থেকে নিরাশ হয়।” এটি কার উক্তি?

উত্তরঃ হযরত ইব্রাহীম আ. এর উক্তি। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৫৬)

90.   ফেরেশতারা সবসময় অস্বাভাবিক অবস্থায়ই মানুষের আকৃতি ধরে আসেন এবং বড় বড় ও গুরুতর ধরনের অভিযানেই তাদেরকে পাঠানো হয়–এই কথাটি কার প্রশ্ন থেকে পরিস্কার প্রমাণ হয়?

উত্তরঃ হযরত ইব্রাহীম আ. এর প্রশ্ন থেকে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৩৩)

91.   “তারা বললোআমাদের একটি অপরাধী সম্প্রদায়ের দিকে পাঠানো হয়েছে।” এই অপরাধী সম্প্রদায় কারা?

উত্তরঃ লুতের সম্প্রদায়। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৩৪)

92.   মাত্র একজন ছাড়া লুৎ আ. এর পরিবারবর্গ অপরাধী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না। তাই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা তাদেরকে বাঁচিয়ে নেবার কথা বলেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, এই একজন সদস্য কে?

উত্তরঃ লুৎ আ. এর স্ত্রী। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৬০)

93.   “কাজেই এখন তুমি কিছু রাত থাকতে নিজের পরিবারবর্গকে নিয়ে বের হয়ে যাও এবং তুমি তাদের পেছনে পেছনে চলো।” লুত আ.কে পিছনে পিছনে চলতে কেন বলা হয়েছে?

উত্তরঃ যেন তাদের কেউ থেকে যেতে না পারে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৩৭)

94.   একবার এক গরীব লোক কোথাও থেকে তাদের শহরে এলো কেউ তাকে খাবার দাবারের জন্য কিছু দিল না সে ক্ষুধায় অবসন্ন হয়ে এক জায়গায় মাটিতে পড়েছিল এ অবস্থায় একটি মেয়ে তাকে দেখতে পেলেন তিনি তার কাছে খাবার পৌঁছে দিলেন এ জন্য বাবা ও তাঁর মেয়েকে কঠোরভাবে নিন্দা করা হলো। প্রশ্ন হলোঃ মেয়েটি কার মেয়ে?

উত্তরঃ হযরত লুত আ. এর মেয়ে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৩৯)

95.   সীমালংঘনকারী লুত আ. এর কাওমের কাহিনীকে সংক্ষেপ করে কুরআন মজীদে শুধু মাত্র দু’টি বাক্য প্রকাশ করা হয়েছে। এর একটি হলোঃ أَئِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ ٱلرِّجَالَ وَتَقْطَعُونَ ٱلسَّبِيلَ وَتَأْتُونَ فِى نَادِيكُمُ ٱلْمُنكَرَতোমরা পুরুষদের দ্বারা যৌন কামনা পূর্ণ করোমুসাফিরদের মালপত্র লুটপাট করো এবং নিজেদের মজলিসমূহের প্রকাশ্যে দুষ্কর্ম করো।” অপর বাক্যটি কি?

উত্তরঃ وَمِن قَبْلُ كَانُوا يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ তারা আগে থেকেই অনেক খারাপ কাজ করে আসছিল” (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৩৯)

96.   ভাইয়েরা আমার, এরা হচ্ছে আমার মেহমান, আমাকে বেইজ্জত করোনা। আল্লাহকে ভয় করো, আমাকে লাজ্ঞিত করো না” একথাটি কে কখন কাদের বলেছিলেন?

উত্তরঃ একথাটি বলেছিলেন লুত আঃ, যখন নগরবাসী তার বাড়ীতে চড়াও হলো,তখন নগরবাসীর উদ্দেশ্যে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৬৮-৬৯)

97.   “হায়যদি আমার তোমাদের মোকবিলা করার শক্তি থাকতো অথবা আমার সাহায্য-সহযোগিতা গ্রহণ করার মতো কোন সহায় থাকতো!” এই কথাগুলো কে কখন বলেছিলেন?

উত্তরঃ লুত আ. বলেছিলেন, যখন বদমায়েশদের দল মেহমানদের অবস্থান স্থলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৪০)

98.   “আর তাদের ওপর পোড়া মাটির পাথর বর্ষণ করলাম” এ পোড়া মাটির পাথর বৃষ্টি হতে পারে উলকাপাত ধরনের কিছু আবার আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ফলে তা মৃত্তিকা গর্ভ থেকে বের হয়ে তাদের ওপর চতুরদিক থেকে বৃষ্টির মত বর্ষিত হয়ে থাকতে পারে। আর কি হতে পারে?

উত্তরঃ একটি মারাত্মক ধরনের ঘূর্ণি ঝড়ও তাদের ওপর এ পাথর বৃষ্টি করতে পারে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৪১)

99.   লুত আ. এর কাওমকে যে স্থানে আযাব প্রদান করা হয়েছে, তার ভৌগলিক অবস্থান কোথায়?

উত্তরঃ হেজায থেকে সিরিয়া এবং ইরাক থেকে মিসর যাবার পথে। অথবা লূত সাগরের (Dead sea) পূর্বে ও দক্ষিণে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৪২)

100.  أَصْحَابُ الْأَيْكَةِ বা আইকাবাসীরা  কোন সম্প্রদায়ের লোক ছিল? এই সম্প্রদায়ের নাম কি ছিল?

উত্তরঃ হযরত শোআ’য়েব আ. এর সম্প্রদায়ের লোক। সম্প্রদায়টির নাম ছিল বনী মাদইয়ান। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৪৩)

101.  তাবুকের প্রাচীন নাম কি ছিল?

উত্তরঃ আইকা। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৪৩)

102.  الْأَيْكَةِ (আইকা) শব্দটির শাব্দিক অর্থ কি? বর্তমানে এই নামে কি আছে।

উত্তরঃ ঘন জংগল। বর্তমানে একটি পাহাড়ী ঝরণা এই নামে আছে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৪৩)

103.  আইকা নামক ঝরণার উৎপত্তি স্থল কোথায় এবং ঝরণাটি কোথায় শেষ হয়েছে?

উত্তরঃ জাবালে নূরে উৎপন্ন হয়ে আফাল উপত্যকায় এসে পড়ছে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৪৩)

104.  মাদইয়ান ও আইকা বাসীদের এলাকার ভৌগলিক অবস্থান কোথায়?

উত্তরঃ হেজায থেকে ফিলিস্তিন ও সিরিয়া যাবার পথে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৪৪)

105.  সামুদ জাতির কেন্দ্রীয় শহরের নাম কি?

উত্তরঃ হিজর। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৪৫)

106.  মদীনার উত্তর পশ্চিমে বর্তমান আলউ’লা শহরের কয়েক মাইল দূরে কোন শহরের ধবংসাবশেষ পাওয়া যায়

উত্তরঃ হিজর। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৪৫)

107. “এখানে লাল রংয়ের পাহাড়গুলোতে সামুদ জাতির ইরামতগুলো রয়েছে এগুলো তারা পাহাড় কেটে কেটে তার মধ্যে নির্মাণ করেছিল এ গৃহগুলোর কারুকাজ এখনো এমন উজ্জ্বল ও তরতাজা আছে যেন মনে হয় আজই এগুলো খোদাই করা হয়েছে পচাগলা মানুষের হাড় এখনো এখানকার ঘরগুলো মধ্যে পাওয়া যায়।” এই কথাগুলো কে লিখেছেন?

উত্তরঃ ইবনে বতুতা। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৪৫)

108.  “আমি তোমাকে এমন সাতটি আয়াত দিয়ে রেখেছিযা বারবার আবৃত্তি করার মতো” এই সাতটি আয়াত গুলো কুরআনে কোথায় রয়েছে?

উত্তরঃ সূরা আল ফাতিহার সাতটি আয়াত (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৪৯)

109.  কাফেররা নিজেদের কল্যাণকামীকে নিজেদের শত্রু মনে করছেনিজেদের ভ্রষ্টতা ও নৈতিক ত্রুটিগুলোকে নিজেদের গুণাবলী মনে করছেনিজেরা এমন পথে এগিয়ে চলছে এবং নিজেদের সমগ্র জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে যার নিশ্চিত পরিণাম ধবংস এবং যে ব্যক্তি তাদেরকে শান্তি ও নিরাপত্তার পথ দেখাচ্ছে তার সংস্কার প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করার জন্য সর্বাত্মক সংগ্রাম চালাচ্ছেতাদের এ অবস্থা দেখে নবীকে কি না হওয়ার জন্য বলা হয়েছে?

উত্তরঃ মনঃক্ষুন্ন না হতে বলা হয়েছে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৫১)

110.  আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা নবী সা.কে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, অমান্যকারীদেরকে বলে দাও। কি কথা বলতে নির্দেশ দিচ্ছেন?

উত্তরঃ আমিতো প্রকাশ্য সতর্ককারী। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৮৯)

111.   বিভক্তকারী দল বলতে কাদেরকে বুঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ ইহুদীদেরকে বুঝানো হয়েছে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৫২)

112.   বিভক্তকারী দল বলতে কাদেরকে বুঝানো হয়েছে এবং কোন অর্থে বিভক্তকারী বলা হয়েছে?

উত্তরঃ ইহুদীদেরকে বুঝানো হয়েছে। এই অর্থে যে, তারা আল্লাহর দীনকে বিভক্তকরে ফেলেছে (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৫২)

113.  الَّذِينَ جَعَلُوا الْقُرْآنَ عِضِينَ “যারা নিজেদের কুরআনকে খণ্ডবিখণ্ড করে ফেলে।” এই আয়াতে কুরআন বলতে কোন কিতাবকে বুঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ তাওরাতকে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৫২)

114.   ইহুদীদের দ্বারা কুরআনকে খণ্ড বিখণ্ড করে ফেলার কথা বলে ঠিক এমন ধরনের একটি কর্মের প্রতি ইংগিত করা হয়েছে যেমন সূরা আল বাকারাহতে বর্ণনা করা হয়েছে। সূরা বাকারার কত নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে এবং কি বর্ণনা করা হয়েছে?

উত্তরঃ সূরা বাকারাহ এর ৮৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছেঃ أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍতোমরা কি আল্লাহর কিতাবের কিছু কথা মেনে নেবে এবং কিছু কথা অস্বীকার করবে?” (তাফহীমঃ সূরা হিজর-টীকাঃ ৫২)

115.  তোমাকে যে বিষয়ের হুকুম দেয়া হচ্ছে তা সরবে প্রকাশ্যে ঘোষণা করো এবং শিরককারীদের মোটেই পরোয়া করো না এই নির্দেশ কাকে প্রদান করা হয়েছে?

উত্তরঃ নবী সা.কে। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৯৪)

116. “আল্লাহ বলছেনঃ আমি জানিএরা তোমার সম্বন্ধে যেসব কথা বানিয়ে বলে তাতে তুমি মনে ভীষণ ব্যথা পাও।” এরপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা এর প্রতিকার সম্পর্কে বলছেন। প্রতিকার কি?

উত্তরঃ তুমি নিজের রবের প্রশংসা সহকারে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করতে থাকোতাঁর সকাশে সিজ্‌দাবনত হওএবং যে চূড়ান্ত সময়টি আসা অবধারিত সেই সময় পর্যন্ত নিজের রবের বন্দেগী করে যেতে থাকো। (তাফহীমঃ সূরা হিজর-আয়াতঃ ৯৮-৯৯)

প্রশ্ন গুলোর উত্তর জানতে যুক্ত থাকুন আমাদের হোয়াইটসআপ গ্রুপে। গ্রুপে যুক্ত হওয়ার জন্য ক্লিক করুন এখানে।


Post a Comment

0 Comments