প্রশ্নোত্তর – তাফহীমুল কুরআন – সূরা আন নাহল


 প্রশ্নোত্তরে তাফহীমুল কুরআন

সুরা আন নাহল

1. সূরা নাহাল এর আয়াত ও রুকু সংখ্যা কত?

উত্তরঃ আয়াত-১২৮ এবং ও রুকু-১৬ (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

2. কত নম্বর আয়াত থেকে সুরা নাহাল এর নামকরণ করা হয়েছে?

উত্তরঃ ৬৮ নম্বর আয়াত। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

3.সূরা নাহাল মক্কী না মাদানী সূরা?

উত্তরঃ ক্কী সূরা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

4. সূরা আন নাহল এর ৪১ আয়াতের وَالَّذِينَ هَاجَرُوا فِي اللَّهِ مِن بَعْدِ مَا ظُلِمُوا বাক্যাংশ থেকে কোন কথা পরিস্কার জানা যায়?

উত্তরঃ এ সময় হাবশায় হিজরত অনুষ্ঠিত হয়েছিল। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

5.সূরা আন নাহল এর ১০৬ আয়াতের مَن كَفَرَ بِاللَّهِ مِن بَعْدِ إِيمَانِهِ   বাক্য থেকে কি জানা যায়?

উত্তরঃ এ সময় জুলুম-নিপীড়নের কঠোরতা অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল এবং এ প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল যে, যদি কোন ব্যক্তি নির্যাতনের আধিক্যে বাধ্য হয়ে কুফরী বাক্য উচ্চারণ করে ফেলে তাহলে তার ব্যাপারে শরীয়াতের বিধান কি হবে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

6. সূরা আন নাহল এর ১১২-১১৪ আয়াত গুলোর وَضَرَبَ اللَّهُ مَثَلًا قَرْيَةً كَانَتْ آمِنَةً مُّطْمَئِنَّةً يَأْتِيهَا رِزْقُهَا رَغَدًا مِّن كُلِّ مَكَانٍ فَكَفَرَتْ بِأَنْعُمِ اللَّهِ فَأَذَاقَهَا اللَّهُ لِبَاسَ الْجُوعِ وَالْخَوْفِ بِمَا كَانُوا يَصْنَعُونَ - وَلَقَدْ جَاءَهُمْ رَسُولٌ مِّنْهُمْ فَكَذَّبُوهُ فَأَخَذَهُمُ الْعَذَابُ وَهُمْ ظَالِمُونَ -فَكُلُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ حَلَالًا طَيِّبًا وَاشْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ বাক্যগুলো পরিস্কার কোন দিকে ইংগিত করছে?

উত্তরঃ নবী সা. এর নবুওয়াত লাভের পর মক্কায় যে বড় আকারের দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল সূরা আন নাহল নাযিলের সময় তা শেষ হয়ে গিয়েছিল। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

7.সূরা আন নাহল এর ১১৫ আয়াতটি এমন একটি আয়াত যার বরাত দেয়া হয়েছে অন্য একটি সূরার একটি আয়াতে? সেটি কোন সূরার কত নম্বর আয়াতে?

উত্তরঃ সূরা আল আনআ’মের ১১৯ আয়াতে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

8.সূরা আল আনআ’মের ১৪৬ আয়াতে সূরা আন নাহল এর কত নম্বর আয়াতের বরাত দেয়া হয়েছে?

উত্তরঃ ১১৮ নম্বর আয়াতের। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

9. সূরা নাহাল কখন নাযিল হয়েছে?

উত্তরঃ ক্কী জীবনের শেষের দিকে নাযিল হয়েছে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

10.   সূরা আন নাহলে তিনটি কাজের অশুভ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করা ও উপদেশ দেয়া হয়েছে। তা কি কি?

উত্তরঃ ১. শিরককে বাতিল করে দেয়া। ২. তাওহীদকে সপ্রমাণ করা। ৩. নবীর আহবানে সাড়া না দেয়া। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

11.   সূরা আন নাহলে দুইটি কাজের বিরুদ্ধে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। তা কি কি?

উত্তরঃ ১. হকের বিরোধিতা।  ২. হকের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

12.   সূরা আন নাহলের মূল বিষয়বস্তু ও কেন্দ্রীয় আলোচ্য বিষয় তিনটি কি কি?

উত্তরঃ ১. সতর্ক করা, ২. উপদেশ দেয়া এবং ৩. ভীতি প্রদর্শন করা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

13.   সূরা আন নাহলের মূল বিষয়বস্তু ও কেন্দ্রীয় আলোচ্য বিষয় সতর্ক করা, উপদেশ দেয়া এবং ভীতি প্রদর্শন করা। এই সম্পর্কে মোট ৫টি বিষয় রয়েছে, তা কি কি?

উত্তরঃ ১. শিরককে বাতিল করে দেয়া। ২. তাওহীদকে সপ্রমাণ করা। ৩. নবীর আহবানে সাড়া না দেয়া। ৪. হকের বিরোধিতা।  ৫. হকের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

14.   মক্কার কাফেররা বারবার বলতো, “আমরা যখন তোমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছি এবং প্রকাশ্যে তোমার বিরোধিতা করছি তখন তুমি আমাদের আল্লাহর যে আযাবের ভয় দেখাচ্ছো তা আসছে না কেন? তাদের এ কথাটি বারবার বলার কারণ কি ছিল?

উত্তরঃ তাদের মতে এটিই মুহাম্মাদ সা. এর নবী না হওয়ার সবচেয়ে বেশী সুস্পষ্ট প্রমাণ। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

15.   মক্কার কাফেররা বারবার বলতো, “আমরা যখন তোমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছি এবং প্রকাশ্যে তোমার বিরোধিতা করছি তখন তুমি আমাদের আল্লাহর যে আযাবের ভয় দেখাচ্ছো তা আসছে না কেন? তাদের এ কথার জবাবে কি বলা হয়েছে?

উত্তরঃ নির্বোধের দল, আল্লাহর আযাব তো তোমাদের মাথার ওপর তৈরী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এখন তা কেন দ্রুত তোমাদের ওপর নেমে পড়ছে না এ জন্য হৈ চৈ করো না বরং তোমরা যে সামান্য অবকাশ পাচ্ছো তার সুযোগ গ্রহণ করে আসল সত্য কথাটি অনুধাবন করার চেষ্টা করো। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

16.   মক্কার কাফেরদের বুঝাাবার জন্য সূরা আন নাহলে ৫টি বিষয়বস্তু একের পর এক একাধিকবার সামনে আসতে শুরু করেছে। যেমনঃ ১. হৃদয়গ্রাহী যুক্তি এবং জগত ও জীবনের নিদর্শনসমূহের সুস্পষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণের সাহায্যে বুঝানো হয়েছে যে, শিরক মিথ্যা এবং তাওহীদই সত্য। বাকী ৪টির যে কোন একটি উল্লেখ করুন।

উত্তরঃ ২. অস্বীকারকারীদের সন্দেহ, সংশয়, আপত্তি, যুক্তি ও টালবাহানার প্রত্যেকটির জবাব দেয়া হয়েছে৩. মিথ্যাকে আঁকড়ে ধরার গোয়ার্তুমি এবং সত্যে মোকাবিলায় অহংকার ও আষ্ফালনের অশুভ পরিণামের ভয় দেখানো হয়েছে ৪. মুহাম্মাদ সা. যে জীবন ব্যবস্থা এনেছেন, মানুষের জীবনে যে সব নৈতিক ও বাস্তব পরিবর্তন সাধন করতে চায় সেগুলো সংক্ষেপে কিন্তু হৃদয়গ্রাহী করে বর্ণনা করা হয়েছে এ প্রসংগে মুশরিকদেরকে বলা হয়েছে, তারা যে আল্লাহকে রব হিসেবে মেনে নেবার দাবী করে থাকে এটা নিছক বাহ্যিক ও অন্তসারশূন্য দাবী নয় বরং এর বেশ কিছু চাহিদাও রয়েছে তাদের আকীদা-বিশ্বাস, নৈতিক-চারিত্রিক ও বাস্তব জীবনে এগুলোর প্রকাশ হওয়া উচিত ৫. নবী সা. ও তাঁর সংগী-সাথীদের মনে সাহস সঞ্চার করা হয়েছে এবং সংগে সংগে কাফেরদের বিরোধিতা, প্রতিরোধ সৃষ্টি ও জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে তাদের মনোভাব, দৃষ্টিভঙ্গী ও কর্মনীতি কি হতে হবে তাও বলে দেয়া হয়েছে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-ভূমিকা)

17.   “এসে গেছে আল্লাহর ফায়সালা।” এই ফায়সালা কিসের ফায়সালা?

উত্তরঃ নবী সা. এর মক্কা থেকে হিজরত। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১)

18.   কোন নবীকে হিজরতের হুকুম দেয়া হয় কখন?

উত্তরঃ যে সমাজে নবীর আগম ঘটে তাদের অস্বীকৃতি ও প্রত্যাখ্যান একেবারে শেষ সীমানায় পৌঁছে গেলে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১)

19.   আল্লাহর কোন হুকুম সমাজের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয় এরপর হয় তাদের ওপর ধবংসাত্মক আযাব এসে যায়?

উত্তরঃ হিজরতের হুকুম। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১)

20.   হিজরত সংঘটিত হবার পর মক্কার কাফেররা মনে করলো ফায়সালা তাদের পক্ষেই হয়েছে কিন্তু আট দশ বছরের মধ্যেই দুনিয়াবাসীরা কি দেখে নিল?

উত্তরঃ শুধুমাত্র মক্কা থেকেই নয়, সমগ্র আরব ভূখণ্ড থেকেই শিরক ও কুফরীকে শিকড় সুদ্ধ উপড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১)

21.   কাফেররা নবী সা.কে বারবার চ্যালেঞ্জ দিয়ে আসছিল যে, তুমি আল্লাহর যে ফায়সালার কথা বলে আমাদের ভয় দেখিয়ে থাকো তা আসছে না কেন? তাদের এ চ্যালেঞ্জের পিছনে আসলে যে চিন্তাটি সক্রিয় ছিল তা কি ছিল?

উত্তরঃ তাদের মুশরিকী ধর্মই সত্য এবং মুহাম্মাদ সা. খামাখা আল্লাহর নামে একটি ভ্রান্ত ধর্ম পেশ করছেন আল্লাহ এ ধর্মকে অনুমোদন দান করেননি। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ২)

22.   আল্লাহ কিসের থেকে অনেক উর্ধ্বে?

উত্তরঃ শিরক থেকে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ২)

23.   “এ রূহ বা প্রাণসত্তায় উজ্জীবিত হয়েই নবী কাজ করেন ও কথা বলেন।” এটা কোন রূহ?

উত্তরঃ নবুওয়াতের রূহ। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৩)

24.   স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক জীবনে প্রাণের যে মর্যাদা, নৈতিক জীবনে সেই একই মর্যাদার অধিকারী কোন জিনিস?

উত্তরঃ অহী ও নবুওয়াতী প্রাণসত্তা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৩)

25.   স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক জীবনে প্রাণের যে মর্যাদা এ অহী ও নবুওয়াতী প্রাণসত্তা নৈতিক জীবনে সেই একই মর্যাদর অধিকারী তাই কুরআনের বিভিন্ন স্থানে তার জন্য রূহ’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে এ সত্যটি না বুঝার কারণে ঈসায়ীগণ কাকে কি বানিয়ে নিয়েছে?

উত্তরঃ ঈসায়ীগণ রূহুল কুদুস (Holy Ghost)-কে তিন খোদার এক খোদা বানিয়ে নিয়েছে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৩)

26.   আল্লাহর কার মাধ্যমে এবং কার নিকট ওহীকে নাযিল করেন?

উত্তরঃ ফেরেশতাদে মাধ্যমে বান্দার নিকট। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ২)

27.   ফায়সালা কার্যকর করাবার দাবী জানিয়ে কাফেররা যে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছিল তার পেছনে যেহেতু মুহাম্মাদ সা. এর নবুওয়াতের অস্বীকৃতিও কার্যকর ছিল, তাই শিরক খণ্ডনের পরপরই সূরা নাহালে কি ঘোষণা করা হয়েছে?

উত্তরঃ তাঁর নবুওয়াতের সত্যতা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৪)

28.   কাফেররা বলতো, এ ব্যক্তি যা বলছে, এসব মিথ্যা ও বানোয়াট এর জবাবে আল্লাহ কি বলছেন?

উত্তরঃ এ ব্যক্তি হচ্ছে আমার পাঠানো রূহ। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৪)

29.   কাফেররা আপত্তি করে বলতো, আল্লাহর যদি নবী পাঠাবার দরকার হয়ে থাকে তাহলে কেবলমাত্র আবদুল্লাহ পুত্র মুহাম্মাদই সা. কি এ কাজের যোগ্য সাব্যস্ত হয়েছিল? মক্কা ও তায়েফের সমস্ত বড় বড় সরদাররা কি মরে গিয়েছিল? তাদের কারোর ওপর আল্লাহর দৃষ্টি পড়েনি? কুরআনের বিভিন্ন স্থানে এর জবাব দিতে কি বলা হয়েছে?

উত্তরঃ আল্লাহ নিজের কাজ সম্পর্কে নিজেই অবগত আছেন তাঁর কাজের ব্যাপারে তোমাদের কাছ থেকে তাঁর পরামর্শ নেবার প্রয়োজন নেই তিনি নিজের বান্দাদের মধ্যে থেকে যাকেই সংগত মনে করেন নিজের কাজের জন্য নির্বাচিত করে নেন। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৪)

30.  নবুওয়াতের রূহ যেখানেই যে ব্যক্তির ওপর অবতীর্ণ হয়েছে সেখানেই তিনি একটিই দাওয়াত নিয়ে এসেছেন। তা কি?

উত্তরঃ সার্বভৌম কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত এবং একমাত্র তাঁকেই ভয় করতে হবে, তিনি একাই এর হকদার। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৫)

31.   তিনি আকাশ ও পৃথিবীকে সত্য সহকারে সৃষ্টি করেছেন এরা যে শিরক করছে তাঁর অবস্থান তার অনেক ঊর্ধে। অন্য কথায় এর অর্থ কি?

উত্তরঃ আল্লাহর নবী যে শিরক পরিহার করার এবং তাওহীদ বিশ্বাসী হবার দাওয়াত দেন, পৃথিবী ও আকাশের সমগ্র সৃষ্টি কারখানাই তার সাক্ষ্য দিয়ে চলছে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৬)

32.   মানুষকে কি দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে?

উত্তরঃ ছোট্ট এক ফোঁটা বা নুতফা থেকে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৪)

33.  “তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন ছোট্ট একটি ফোঁটা থেকে তারপর দেখতে দেখতে সে এক কলহপ্রিয় ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছে।” এর দুই অর্থ হতে পারে। একটি অর্থ হলোঃ মহান আল্লাহ একটি তুচ্ছ শুক্রবিন্দু থেকে এমন মানুষ তৈরী করেছেন যে বিতর্ক ও যুক্তি প্রদর্শন করার যোগ্যতা রাখে এবং নিজের বক্তব্য ও দাবীর পক্ষে সাক্ষ্য-প্রামাণ পেশ করতে পারে দ্বিতীয় অর্থ কি?

উত্তরঃ যে মানুষকে আল্লাহ শুক্রবিন্দুর মত নগণ্য জিনিস থেকে তৈরী করেছেন তার অহংকারের বাড়াবাড়িটা দেখো, সে আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতার মোকাবিলায় নিজেকে পেশ করার জন্য বিতর্কে নেমে এসেছে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৭)

34.   আল্লাহ পশু সৃষ্টি করেছেন। তাদের মধ্যে কি রয়েছে?

উত্তরঃ পোষাক, খাদ্য, অন্যান্য উপকারিতা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৫)

35.  মানুষের আরোহণ করার এবং জীবনের শোভা-সৌন্দর্য সৃষ্টির জন্য আল্লাহ কি কি সৃষ্টি করেছেন?

উত্তরঃ ঘোড়া, খচ্চর এবং গাধা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৬)

36.   আল্লাহর ব্যাপারে এরচেয়ে বড় আর কোন কুধারণা কি হতেই পারে না?

উত্তরঃ প্রাণী হবার দিক দিয়ে তোমাদের প্রতিপালন ও বিকাশ লাভের এতসব বিস্তারিত ও পূর্ণাংগ ব্যবস্থা তিনি করে রেখেছেন অথচ মানুষ হবার দিক দিয়ে তোমাদের একেবারে অন্ধকারের বুকে পথ হারিয়ে উদভ্রান্তের মতো ছুটে বেড়াবার ও পদে পদে ঠোকর খাবার জন্য ছেড়ে দিয়েছেন। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৯)

37.  আল্লাহ সমস্ত মানুষকে অন্যান্য সকল ক্ষমতাসীন সৃষ্টির মতো জন্মগতভাবে সঠিক পথে পরিচালিত করে নিজের এ দায়িত্বটি পালন করতে পারতেন কিন্তু এটি তিনি চাননি। তাহলে তিনি কি চেয়েছিলেন?

উত্তরঃ তিনি চেয়েছিলেন এমন একটি স্বাধীন ক্ষমতাসম্পন্ন সৃষ্টির উদ্ভব ঘটানো যে নিজের পছন্দ ও বাছ-বিচারের মাধ্যমে সঠিক ও ভ্রান্ত সব রকমের পথে চলার স্বাধীনতা রাখে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১০)

38.  স্বাধীন ক্ষমতা ব্যবহার করার জন্য আল্লাহ মানুষকে কি কি দান করেছেন?

উত্তরঃ জ্ঞানের উপকরণ, বুদ্ধি ও চিন্তার যোগ্যতা এবং ইচ্ছা ও সংকল্পের শক্তি। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১০)

39.   মহান আল্লাহ মানুষকে দেখাবার জন্য জোরপূর্বক সঠিক পথে পরিচালিত করার পদ্ধতি পরিহার করে কোন পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন?

উত্তরঃ রিসালাতের পদ্ধতি। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১০)

40.   রবের অনুগ্রহ সন্ধান করতে পারা মানে কি?

উত্তরঃ হালাল পথে নিজের রিযিক সংগ্রহ করার চেষ্টা করা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১১)

41.   ভূপৃষ্ঠে পর্বত শ্রেণী স্থাপনের উপকারিতা কি?

উত্তরঃ এর ফলে পৃথিবীর আবর্তন ও গতি সুষ্ঠু ও সুশৃংখল হয়। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১২)

42.   মহান করুণাময় রব যখন আমাদের বৈষয়িক জীবনকে সহজ ও সফল করার জন্য পাহাড়ের মধ্যে আমাদের জন্য পথ তৈরী করেন, সমতল ক্ষেত্রে পথের চিহ্ন স্থাপন করেন, মরুভূমি ও সাগরের বুকে আমাদের দিকনির্দেশনার জন্য আকাশে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখেন তখন তাঁর সম্পর্কে আমরা কেমন করে এ কুধারণা পোষণ করতে পারি। কোন ধরণের কুধারণা করতে পারি?

উত্তরঃ তিনি আমাদের নৈতিক সাফল্য ও কল্যাণের জন্য কোন পথই তৈরী করেননি। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১৪)

43.   বাস্তবে মক্কার কাফেররাও এবং দুনিয়ার অন্যান্য মুশরিকরাও মানতো এমন কথা কি?

উত্তরঃ একমাত্র আল্লাহই সব কিছুর স্রষ্টা এবং এ বিশ্বজগতে তোমাদের উপস্থাপিত শরীকদের একজনও কোন কিছুই সৃষ্টি করেনি। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১৬)

44.   আল্লাহর কোন জিনিসগুলো গুণতে চাইলে গুণতে পারা যাবে না?

উত্তরঃ নিয়ামত সমূহ। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ১৮)

45.   কোন নির্বোধ যেন কোন কথা মনে না করে বসে?

উত্তরঃ আল্লাহকে অস্বীকার এবং শিরক ও গোনাহের কাজ করা সত্ত্বেও আল্লাহর অনুগ্রহের সিলসিলা বন্ধ না হওয়ার কারণ আল্লাহ লোকদের কার্যকলাপের কোন খবর রাখেন না। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১৮)

46.   আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য যেসব সত্তাকে লোকেরা ডাকে তারা কোনো একটি জিনিসেরও স্রষ্টা নয় বরং তারা কি?

উত্তরঃ তারা নিজেরাই সৃষ্টি। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ২০)

47.   “তারা মৃত, জীবিত নয় এবং তারা কিছুই জানে না তাদেরকে কবে উঠানো হবে।” এই তারা ফেরেশতা, জিন, শয়তান বা কাঠ-পাথরের মূর্তি নয়। তাহলে তারা কারা?

উত্তরঃ কবরবাসী। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১৯)

48.   الَّذِينَ يَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ (আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য যেসব সত্তাকে লোকেরা ডাকে) এর মধ্যে নিশ্চিতভাবে কাদের কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ নবী, আউলিয়া, শহীদ, সৎ ব্যক্তিবর্গ ও অন্যান্য অসাধারণ লোকদের কথা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১৯)

49.   হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বর্ণিত হাদীস অনুযায়ী পূর্বকালের চারটি সৎ লোকদের নাম উল্লেখ করুন, পরবর্তীকালের লোকেরা যাদের দেব মূর্তি নির্মাণ করেছিল?

উত্তরঃ ১. ওয়াদ্দা, ২. সুওয়া, ৪. ইয়াগূস ইয়াউক, ৪. নাসর। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১৯)

50.  মুশরিকদের আকীদা অনুযায়ী দুইটি মূর্তি, যা আল্লাহর অত্যন্ত প্রিয় ছিল। তার নাম কি কি?

উত্তরঃ লাত ও উযযা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১৯)

51.   মুশরিকদের আকীদা অনুযায়ী দুইট মূর্তি, যা আল্লাহর অত্যন্ত প্রিয় ছিল বলে আল্লাহ শীতকাল একজনের কাছে এবং গ্রীষ্মকাল অন্যজনের কাছে কাটাতেন। এই দুই মুর্তির নাম কি এবং কার কাছে আল্লাহ কোন কাল কাঠাতেন?

উত্তরঃ ১. লাত-শীতকাল; ২. উযযা-গ্রীষ্মকাল। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ১৯)

52.   মক্কার লোকেরা যেখানেই যেতো সেখানেই তাদেরকে ২টি বিষয় জিজ্ঞেস করা হতো। তা কি কি?

উত্তরঃ ১. তোমাদের ওখানে যে ব্যক্তি নবী হয়ে এসেছেন তিনি কি শিক্ষা দেন? ২. কুরআন কোন ধরনের কিতাব তার মধ্যে কি বিষয়ের আলোচনা করা হয়েছে(তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ২২)

53.  মহান আল্লাহ যখন এ প্রশ্ন করবেন তখন হাশরের ময়দানে চারদিকের অবস্থা কেমন হবে আর কাফের মুশরিকদের অবস্থা কেমন হবে?

উত্তরঃ হাশরের ময়দানে চারদিকে গভীর নীরবতা বিরাজ করবে কাফের ও মুশরিকদে কণ্ঠ স্তব্ধ হয়ে যাবে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ২৩)

54.   আমরা তো কোনো দোষ করছিলাম না” ফেরেশেতাদের হাতে পাকড়াও হবার পর কাফেররা যখন এমন কথা বলবে, জবাবে ফেরেশতারা কি বলবে?

উত্তরঃ কেমন করে দোষ করছিলে না! তোমাদের কার্যকলাপ আল্লাহ খুব ভালো করেই জানেন।” (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ২৮)

55.  হাদীসে “আলমে বরযখ”--এর জন্য কোন শব্দটি রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?

উত্তরঃ কবর। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ২৬)

56.   এমন একটি জগত যেখানে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে মৃত্যু লাভ করার পর থেকে নিয়ে পরবর্তী পুনরুত্থান লাভ করার প্রাক্কালে প্রথম ধাক্কা খাওয়া পর্যন্ত মানবিক রূহগুলো অবস্থান করবে। এই জগতের নাম কি?

উত্তরঃ আলমে বরযখ/কবর। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ২৬)

57.  মুত্তাকীদের মৃত্যুর পর ফেরেশতারা তাদের রূহকে কি করেন?

উত্তরঃ সালাম করেন। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ২৬)

58.  সূরা মুমিনের ৪৫-৪৬ নং আয়াতে ফেরাউনের আযাব সম্পর্কে আল্লাহ কি বলেন?

উত্তরঃ একটি কঠিন আযাব তাদেরকে ঘিরে রেখেছে অর্থাৎ সকাল-সাঁঝে তাদেরকে আগুনের সামনে নিয়ে আসা হয় তারপর যখন কিয়ামতের সময় এসে যাবে তখন হুকুম দেয়া হবেঃ ফেরাউনের পরিবারবর্গকে কঠিনতম আযাবের মধ্যে ঠেলে দাও” (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ২৬)

59.   অকস্মাত নিজেদেরকে দেহ ও রূহ সহকারে হাশরের ময়দানে জীবিত অবস্থায় পেয়ে অপরাধীরা অবাক হয়ে কি বলবে?

উত্তরঃ يَا وَيْلَنَا مَن بَعَثَنَا مِن مَّرْقَدِنَا  (আরে, আমাদের শয়নগৃহ, থেকে আমাদের উঠিয়ে আনলো কে?(তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ২৬)

60.   দেহ ও রূহ সহকারে হাশরের ময়দানে জীবিত অবস্থায় পেয়ে ঈমানদাররা পূর্ণ নিশ্চিন্ততার সাথে কি বলবে?

উত্তরঃ هَٰذَا مَا وَعَدَ الرَّحْمَٰنُ وَصَدَقَ الْمُرْسَلُونَ (করুণাময় আল্লাহ এ জিনিসেরই ওয়াদা করেছিলেন এবং রাসূলদের বর্ণনা সঠিক ছিল(তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ২৬)

61.   যখন মুত্তাকীদেরকে জিজ্ঞেস করা হয়, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে কী নাযিল হয়েছে, তারা কি জবাব দেবে?

উত্তরঃ সর্বোত্তম জিনিস নাযিল হয়েছে।“ (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৩০)

62.   জান্নাতের পাদদেশে কি প্রবাহিত হতে থাকবে?

উত্তরঃ নদী। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৩১)

63.   চিরন্তন অবস্থানের জান্নাত, যার মধ্যে তারা প্রবেশ করবে, পাদদেশে প্রবাহিত হতে থাকবে নদী এবং সবকিছুই সেখানে তাদের কামনা অনুযায়ী থাকবে। এই পুরস্কার কে কাকে দেন?

উত্তরঃ আল্লাহ দেন মুত্তাকীদেরকে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৩১)

64.   মুত্তাকীদেরকে পবিত্র থাকা অবস্থায় যখন মৃত্যু ঘটানো হয়, তখন ফেরেশেতারা কি বলে?

উত্তরঃ سَلَامٌ عَلَيْكُمُ ادْخُلُوا الْجَنَّةَ بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَতোমাদের প্রতি শান্তি, যাও নিজেদের কর্মকাণ্ডের বদৌলতে জান্নাতে প্রবেশ করো” (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৩২)

65.   আল্লাহ চাইলে তাঁর ছাড়া আর কারো ইবাদাত আমরাও করতাম না, আমাদের বাপ-দাদারাও করতো না এবং তাঁর হুকুম ছাড়া কোনো জিনিসকে হারামও গণ্য করতো না” এমন কথা কারা বলে?

উত্তরঃ মুশরিকরা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৩৫)

66.   “এদের আগের লোকেরাও এমনি ধরনের বাহানাবাজীই চালিয়ে গেছে।” কোন ধরণের কথা বলে বাহানাবাজী চালিয়েছে?

উত্তরঃ আল্লাহ চাইলে তাঁর ছাড়া আর কারো ইবাদাত আমরাও করতাম না, আমাদের বাপ-দাদারাও করতো না এবং তাঁর হুকুম ছাড়া কোনো জিনিসকে হারামও গণ্য করতো না” এই ধরণের কথা বলে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৩৫)

67.   প্রত্যেক জাতির মধ্যে একজন রাসূল পাঠানো হয়েছে  এবং তার মাধ্যমে সবাইকে কি জানিয়ে দেয়া হয়েছে?

উত্তরঃ আল্লাহর বন্দেগী করো এবং তাগূতের বন্দেগী পরিহার করো” (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৩৬)

68.   প্রত্যেক নবী আগমনের পর তার জাতি কয় ভাগে বিভক্ত হয়েছে? তা কি কি?

উত্তরঃ ২ভাগে। ১। যারা নবীর কথা মেনে নিয়েছে। ২। যারা গোমরাহীতে রয়ে গেছে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৩৩)

69.   নিশ্চয়তা লাভ করার জন্য বড় নির্ভরযোগ্য মানদণ্ড কি?

উত্তরঃ অভিজ্ঞতা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৩৪)

70.  আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তাকে কি করেন না?

উত্তরঃ সঠিক পথে পরিচালিত। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৩৭)

71.   কাফেররা আল্লাহর নামে শক্ত কসম খেয়ে কি বলে?

উত্তরঃ আল্লাহ কোনো মৃতকে পুনর্বার জীবিত করে উঠাবেন না” (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৩৮)

72.   বংশ গোত্র, জাতি ও পরিবারের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে কিসের ভিত্তিতে?

উত্তরঃ মতবিরোধের ভিত্তিতে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৩৫)

73.  গুরুত্বপূর্ণ ও গভীর মননশীল মতবিরোধের ক্ষেত্রে বিবেকের দাবী কি?

উত্তরঃ এক সময় না এক সময় সঠিক ও নিশ্চিতভাবে প্রতিভাত হোক যথার্থই তাদের মধ্যে হক কি ছিল এবং বাতিল কি ছিল, সে সত্যপন্থী ছিল এবং সে মিথ্যাপন্থী। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৩৫)

74.   এ দুনিয়ার ব্যবস্থা যদি সঠিক ও পূর্ণাংগ নৈতিক ফলাফলের প্রকাশকে ধারণ করতে অপারগ হয় তাহলে কি হওয়া উচিত?

উত্তরঃ অন্য একটি দুনিয়া সৃষ্টি হওয়া উচিত যেখানে এ ফলাফলের প্রকাশ সম্ভব হতে পারে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৩৫)

75.  কোনো জিনিসকে অস্তিত্বশীল করার জন্য আল্লাহকে কোন কথার চেয়ে বেশী কিছু করতে হয় না?

উত্তরঃ كُن  বা “হয়ে যাও”। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৩৬)

76.   যারা জুলুম সহ্য করার পর আল্লাহর খাতিরে হিজরত করে গেছে তাদেরকে কি পুরস্কার প্রদানের ওয়াদা করা হয়েছে?

উত্তরঃ দুনিয়াতেই ভালো আবাস এবং আখেরাতের বড় পুরস্কার। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৪১)

77.  “যারা জুলুম সহ্য করার পর আল্লাহর খাতিরে হিজরত করে গেছে তাদেরকে আমি দুনিয়াতেই ভালো আবাস দেবো এবং আখেরাতের পুরস্কার তো অনেক বড়।” এখানে কোন মুহাজিরদের প্রতি ইংগিত করা হয়েছে?

উত্তরঃ যারা মক্কা থেকে হাবশায় (ইথিয়োপিয়া) হিজরত করেছিলেন। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৩৭)

78.  মক্কার মুশরিকদের একটি আপত্তি যে আপত্তিটি ইতিপূর্বে সকল নবীর বিরুদ্ধে উত্থাপন করা হয়েছিল। এ আপত্তিটি কি ছিল?

উত্তরঃ আপনি আমাদের মতই একজন মানুষ, তাহলে আল্লাহ আপনাকে নবী করে পাঠিয়েছেন আমরা একথা কেমন করে মেনে নেবো(তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৩৮)

79.   বাণী ওয়ালা বলতে কাদেরকে বুঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ আহলি কিতাবদের আলেম সমাজ এবং আরো এমন সব লোক যারা নাম করা আলেম না হলেও মোটামুটি আসমানী কিতাবসমূহের শিক্ষা এবং পূর্ববর্তী নবীগণের জীবন বৃত্তান্ত জানেন। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৩৯)

80.  যিকিরবা আল্লাহর বাণী ফেরেশতাদের মাধ্যমেও পাঠানো যেতো সরাসারি ছাপিয়ে প্রত্যেকটি মানুষের হাতেও পৌঁছানো যেতে পারতো কিন্তু কি কারণে সেভাবে পাঠানো হয়নি?

উত্তরঃ আল্লাহ যিকির বা ওহী অবতারণের মাধ্যমে যে উদ্দেশ্য সাধন করতে চেয়েছিলেন সে উদ্দেশ্য পূর্ণ হতে পারতো না। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৪০)

81.   হাদীস অস্বীকারকারীদের চারটি বক্তব্য বা দাবী রয়েছে। যে কোন দুইটি বলূন।

উত্তরঃ

. নবী কোন ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেননি, শুধুমাত্র যিকির পেশ করেছিলেন

২. নবীর ব্যাখ্যা নয় শুধুমাত্র যিকিরই গ্রহণ যোগ্য

৩. এখন আমাদের জন্য শুধুমাত্র যিকির যথেষ্ট, নবীর ব্যাখ্যার কোন প্রয়োজন নেই

৪. এখন একমাত্র যিকিরই নির্ভরযোগ্য অবস্থায় টিকে রয়েছে, নবীর ব্যাখ্যা টিকে নেই আর টিকে থাকলেও তা মোটেই নির্ভরযোগ্য নয়। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৪০)

82.   “এখন একমাত্র যিকিরই নির্ভরযোগ্য অবস্থায় টিকে রয়েছে, নবীর ব্যাখ্যা টিকে নেই আর টিকে থাকলেও তা মোটেই নির্ভরযোগ্য নয়।” কেউ যদি এই কথাটির প্রবক্তা হয়, তাহলে তার এই ঘোষণাটি কোন ধরণের ঘোষণা?

উত্তরঃ কুরআন ও মুহাম্মাদ সা. এর নবুওয়াত উভয়টিকেই নাকচ করে দেবার ঘোষণা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৪০)

83.  যদি হাদীস অস্বীকারকারীরা একথা বলে যে, নবীর ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ দুনিয়ার বুকে বিদ্যমান নেই তাহলে স্পষ্টতই এ বক্তব্য থেকে দু’টো সিদ্ধান্ত উপনীত হওয়া যায় প্রথম সিদ্ধান্তটি হচ্ছে, অনুসরণীয় আদর্শ হিসেবে মুহাম্মাদ সা. এর সাথে শুধুমাত্র তেমন পর্যায়ের রয়ে গেছে যেমন আছে হূদ আ., সালেহ আ. ও শোআইব আ. এর সাথে এর দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত বা ফলটি কি?

উত্তরঃ যেহেতু নবীর ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ ছাড়া কুরআন একা তার প্রেরণকারীর বক্তব্য অনুযায়ী পথপ্রদর্শনের জন্য যথেষ্ট নয়, তাই করআনের ভক্তরা যতই জোরেশোরে চিৎকার করে শুধুমাত্র একাকী কুরআনকে যথেষ্ট বলুক না কেন, মূল দাবীদাররের দাবী যখন দুর্বল, তখন সাক্ষীদের সাক্ষ্য যত সবলই হোক না কেন, তা কোন কাজেই লাগতে পারে না। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৪০)

84.   দেহ বিশিষ্ট সমস্ত জিনিসের ছায়া থেকে কি আলামতই জাহির হচ্ছে?

উত্তরঃ পাহাড়-পর্বত, গাছ-পালা, জন্তু-জানোয়ার বা মানুষ সবাই একটি বিশ্বজনীন আইনের শৃংখলে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৪১)

85.  জড় বস্তু হওয়ার অর্থ কি?

উত্তরঃ সেটি একটি সৃষ্টি এবং সৃষ্টিকর্তার অনুগত গোলাম। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৪১)

86.   দুই ইলাহ বা খোদা নাকচ করে দেবার মধ্য দিয়ে কি জিনিস আপনা আপনিই নাকচ করা হয়ে যায়?

উত্তরঃ দুয়ের অধিক ইলাহকে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৪৩)

87.  তোমাদের একটি দল নিজেদের রবের সাথে অন্যকে (এ অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উদ্দেশ্যে) শরীক করতে থাকে। এর মানে কি?

উত্তরঃ আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতার সাথে সাথে কোন বুযর্গ বা দেব-দেবীর প্রতি কৃতজ্ঞতারও নাযরানা পেশ করতে থাকে (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৪৭)

88.  “আমার দেয়া রিযিক থেকে তাদের অংশ নির্ধারণ করে।” এর মানে কি?

উত্তরঃ তাদের জন্য নযরানা, ভেঁট ও অর্ঘ পেশ করার উদ্দেশ্য নিজেদের উপার্জন ও কৃষি উৎপাদনের একটি নির্দিষ্ট অংশ আলাদা করে রাখে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৪৮)

89.   মুশরিকদের মাবুদদের মধ্যে দেবীদের সম্পর্কে তাদের আকীদা কি ছিল?

উত্তরঃ দেবীরা আল্লাহর মেয়ে। এভাবে ফেরেশতাদেরকেও তারা আল্লাহর মেয়ে গণ্য করতো। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৫০)

90.   وَلَهُم مَّا يَشْتَهُونَ “এবং নিজেদের জন্য নির্ধারণ করে তাদের কাছে যা কাংখিত”- তাদের কাংখিত কি?

উত্তরঃ পুত্র। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৫১)

91.   যখন এদের কাউকে কন্যা সন্তান জন্মের সুখবর দেয়া হয় তখন তাদের অবস্থা কেমন হয়?

উত্তরঃ চেহারা কালো হয়ে যায় এবং সে ভিতরে ভিতরে গুমরে মরতে থাকে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৫৮)

92.   “দেখো, কেমন খারাপ কথা যা এরা আল্লাহর ওপর আরোপ করে।” খারাপ কথাটা কিভাবে?

উত্তরঃ যে কন্যা সন্তানকে তারা নিজেদের জন্য এত বেশী লজ্জাজনক মনে করে থাকে, সেই কন্যা সন্তানকে আল্লাহর জন্য মনোনীত করতে তাদের কোনই দ্বিধা হয় না। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৫২)

93.   খারাপ গুণের অধিকারী হবার যোগ্য কারা?

উত্তরঃ যারা আখেরাত বিশ্বাস করে না। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৬০)

94.   তোমাদের জন্য গবাদি পশুর মধ্যেও একটি শিক্ষা রয়েছে তাদের পেট থেকে গোবর ও রক্তের মাঝখানে বিদ্যমান একটি জিনিস আমি তোমাদের পান করাই, যা পানকারীদের জন্য বড়ই সুস্বাদু ও তৃপ্তিকর। তা কি?

উত্তরঃ নির্ভেজাল দুধ। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৬৬)

95.   “তোমরা পাহাড়-পর্বত, গাছপালা ও মাচার ওপর ছড়ানো লতাগুল্মে নিজেদের চাক নির্মাণ করো।” কে কাদেরকে কোন মাধ্যমে এই কথাগুলো বলেছেন?

উত্তরঃ (আমাদের রব) আল্লাহ মৌমাছিদেরকে ওহীর মাধ্যমে। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-আয়াতঃ ৬৮)

96.   অহীর আভিধানিক অর্থ কি?

উত্তরঃ এমন সূক্ষ্ম ও গোপন ইশারা, যা ইশারাকারী ও ইশারা গ্রহণকারী ছাড়া তৃতীয় কেউ টের পায় না। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৫৬)

97.   ইলকা’ ও ‘ইলহাম’ অর্থ কি?

উত্তরঃ ইলকা’ অর্থঃ মনের মধ্যে কোন কথা নিক্ষেপ করা ও ‘ইলহাম’ অর্থঃ গোপন শিক্ষা ও উপদেশ দান করা। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৫৬)

98.   ইলকা শব্দটি অপেক্ষাকৃত ব্যাপক অর্থবোধক এবং সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হলেও অহী ও ইলহাম শব্দ দুটি কার কার জন্য নির্দিষ্ট?

উত্তরঃ অহী নবীদের জন্য এবং ইলহামকে আউলিয়া ও বিশেষ বান্দাদের জন্য নির্দিষ্ট। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৫৬)

99.   তার মধ্যে রয়েছে ফুল ও ফলের রস এবং তাদের উন্নত পর্যায়ের গ্লুকোজতা নিজে কখনো পচে না এবং অন্য জিনিসকেও দীর্ঘদিন পর্যন্ত নিজের মধ্যে পচন থেকে সংরক্ষিত রাখে। জিনিসটা কি?

উত্তরঃ মধু। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৫৮)

100.  দু’টি কারণেই কাফের ও মুশরিকরা নবী সা. এর বিরোধিতা করতো। একটি হলোঃ তিনি কেবল মাত্র এক আল্লাহকেই মাবুদ, আনুগত্য করার যোগ্য, সংকট থেকে উদ্ধারকারী ও ফরিয়াদ শ্রবণকারী গণ্য করেন। অপরটি কি?

উত্তরঃ তিনি পরকালীন জীবনের ধারণা পেশ করেন। (তাফহীমঃ সূরা আন নাহল-টীকাঃ ৫৯)


Post a Comment

0 Comments